অমৃতলাল বসু
অমৃতলাল বসু (১৭ই এপ্রিল, ১৮৫৩- ২রা জুলাই, ১৯২৯) ব্রিটিশ আমলের বাঙালি নাট্যকার ও নাট্য অভিনেতা।[১][২] তার জন্ম হয়েছিল কলকাতায়। নাটক রচনা এবং নাট্যাভিনয়ে সাফল্যের জন্য জনসাধারণের কাছে রসরাজ নামে খ্যাত ছিলেন। গিরিশচন্দ্র ঘোষ ও অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফীর উৎসাহে তিনি ন্যাশনাল, গ্রেট ন্যাশনাল, গ্রেট ন্যাশনাল অপেরা কোম্পানি, বেঙ্গল, স্টার, মিনার্ভা ইত্যাদি রঙ্গমঞ্চে সুনামের সাথে অভিনয় করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক জগত্তারিণী পদক লাভ করেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রথম বাঙালি মহিলা এম.এ চন্দ্রমুখী বসু তার সম্পর্কিত বোন।
শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাতিনি কলকাতার কম্বুলিয়াটোলা বঙ্গ বিদ্যালয়ে বাল্যশিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর কিছু সময়ের জন্য হিন্দু স্কুলে পড়াশোনা করার পর তিনি ১৮৬৯ সালে জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন। এরপর দুই বছর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করেন। তিনি কাশীতে হোমিওপ্যাথি নিয়ে পড়াশোনা করেন।[৩]
কর্মজীবন
সম্পাদনাকিছু সময়ের জন্য হোমিওপ্যাথি চর্চার পর তিনি সরকারী চিকিৎসক হিসাবে ফোর্টব্লেয়ার যান। স্বল্প সময়ের জন্য পুলিশ বিভাগেও কাজ করেছেন। তিনি ১৮৭২ সালের ৭ই ডিসেম্বর জোড়াসাঁকোতে মধুসূদন সান্যালের বাড়িতে "নীলদর্পণ নাটকে অভিনয় করেন। পরে ন্যাশনাল, গ্রেট ন্যাশনাল, গ্রেট ন্যাশনাল অপেরা কোম্পানি, মিনার্ভা, স্টার, বেঙ্গল প্রভৃতি রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করেন। তিনি মোট চল্লিশটি গ্রন্থ রচনা করেছেন, যাদের মধ্যে চৌত্রিশটি হলো নাটক। তার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে তরুলতা (১৮৯১), বিমাতা বা বিজয় বসন্ত (১৮৯৩), হরিশচন্দ্র (১৮৯৯), এবং আদর্শ বন্ধু (১৯০০)। প্রহসন রচনায় সিদ্ধহস্ত হলেও তিনি এতে রক্ষণশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। নারী শিক্ষা ও নারী স্বাধীনতাকে ব্যঙ্গ করে তিনি তাজ্জব ব্যাপার প্রহসন রচনা করেন। একাকার প্রহসনে নিচু জাতির ইংরেজি শিক্ষার বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্রুপ করেন। এছাড়া কালাপানি প্রহসনে হিন্দুদের সমুদ্রযাত্রা এবং বাবু প্রহসনে দেশের প্রগতিশীল সামাজিক আন্দোলনের পথিকৃৎ ব্রহ্মসমাজকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেন।[৩]
রসরাজ উপাধি
সম্পাদনাহাস্যরসাত্মক নাট্যরচনার জন্য তিনি স্বদেশবাসীর কাছে "রসরাজ" উপাধি পেয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের যুবরাজের আগমন উপলক্ষে উকিল জগদানন্দের বাড়িতে অনুষ্ঠিত ঘটনাকে ব্যঙ্গ করে রচিত নাটিকা পরিচালনার জন্য আদালতে দণ্ডিত হন। এই ব্যাপারে সরকার মঞ্চাভিনয়ের জন্য ১৮৭৬ সনে আইন রচনা করে।[৪]
উল্লেখযোগ্য নাটক
সম্পাদনাতার রচিত গ্রন্থের সংখ্যা চল্লিশ এবং তার মধ্যে নাটক চৌত্রিশ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ
- তিলতর্পণ,
- বিবাহবিভ্রাট,
- তরুলতা (১৮৯১)
- খাসদখল
- ব্যাপিকা বিদায়
- বিমাতা বা বিজয়বসন্ত (১৮৯৩)
- হরিশচন্দ্র (১৮৯৯)
- আদর্শ বন্ধু (১৯০০) প্রভৃতি।[৪]
প্রহসন রচনায় অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। তার কয়েকটি প্রহসনের নাম:
|
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Prof. Sirajul Islam। "অমৃতলাল বসু"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৪-২৭।
- ↑ Encyclopaedia of Indian Literature: A-Devo - Google Books। Books.google.co.in। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৪-২৭।
- ↑ ক খ শামসুজ্জামান খান; সেলিনা হোসেন, সম্পাদকগণ (জুন ২০১১)। বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ১৪-১৫। আইএসবিএন 984-07-5138-7।
- ↑ ক খ সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৪২-৪৩, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
জীবনী বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |