অনুগীতা

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কৃষ্ণ কর্তৃক অর্জুনকে উপদেশ

অনুগীতা হলো কৃষ্ণ প্রদত্ত অর্জুনকে দেওয়া উপদেশ। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পরে এই উপদেশ কৃষ্ণ অর্জুনকে শুনিয়েছিলেন।

অর্জুন সকাশে কৃষ্ণোক্ত অনুগীতা

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পরে রাজা যুধিষ্ঠির সিংহাসন লাভ করবার পর আত্মীয়পরিজন-বিরহী কৃষ্ণ দ্বারকায় ফিরে যাবেন ঠিক করেছেন। সেই সময় একদিন অর্জুন ও কৃষ্ণ হস্তিনাপুরের সভাগৃহে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। কথায় কথায় অর্জুন কৃষ্ণকে বললেন, ''কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে আপনার মাহাত্ম্য আমি জেনেছি। আপনার রূপ ঈশ্বরের রূপ। যুদ্ধের প্রাক্কালে আপনি আমায় উদ্বুদ্ধ করতে সৌহার্দ্যবশত যে সকল উপদেশ দিয়েছিলেন, যুদ্ধে আসক্তচিত্তে আমি সেসব ভূলে গেছি। মাধব! এখন সেসব শোনবার জন্য আমার ইচ্ছা হচ্ছে। কারণ আপনি কয়েকদিনের মধ্যেই দ্বারকা গমন করবেন।''[]

অর্জুনের কথায় কৃষ্ণ ক্ষুব্ধ হলেন। তাঁর যেনো একটু রাগ হলো। তিলি বললেন, ''আমি তোমাকে গুহ্য বিষয় জানিয়েছি, শাশ্বত সমস্ত লোকের বিষয়ে জানিয়েছি। তুমি যে বিমনা হয়ে সেসকল কথা মনে রাখতে পারনি, তা আমার ভীষণ অপ্রিয় হয়েছে। তুমি নিশ্চয় আমার সেসকল কথা বিশ্বাস করনি কিংবা তুমি দুর্মেধা। পার্থ! আমি যোগযুক্ত হয়ে পরমব্রহ্মের কথা বলেছিলাম, কিন্তু এখন আমার পক্ষে সেইভাবে বলা সম্ভব নয়।''[]

এরপরে অবশ্য কৃষ্ণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বীয় কথা অর্জুনকে শোনান। আশ্বমেধিক পর্বের ১৭ থেকে ৬৬ অধ্যায়ে  অর্জুন কৃষ্ণের নিকট হতে  ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেন। এই পঞ্চাশটি অধ্যায়ের উপদেশবাণী-ই মহাভারতে অনুগীতা নামে পরিচিত।[]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ ভট্টাচার্য অনুদিত, মহাভারতম্। জনমেজয় বলিলেন- 'ব্রাহ্মণ ! মহাত্মা কৃষ্ণ ও অর্জুন শত্রুগণকে সংহার করিয়া হস্তিনায় সভাভবনে অবস্থান করিবার সময়...।আশ্বমেধিক পর্ব, অধ্যায়_১৭, শ্লোক_১-৭ 
  2. হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ ভট্টাচার্য অনুদিত, মহাভারতম্। বৈশম্পায়ণ বলিলেন, - অর্জুন এইরূপ বলিলে মহাতেজা ও বাগ্মীশ্রেষ্ঠ কৃষ্ণ অর্জুনকে...।আশ্বমেধিক পর্ব, অধ্যায়_১৭, শ্লোক_৮-১২ 
  3. হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ ভট্টাচার্য অনুদিত, মহাভারতম্। সেই কালে আমি যোগযুক্ত হইয়া পরমব্রহ্মের বিষয় বলিয়াছিলাম। এখন সেই বিষয়ে প্রাচীন বৃত্তান্ত বলিতেছি।...আশ্বমেধিক পর্ব, ১৭ অধ্যায় থেকে ৬৬ অধ্যায় পর্যন্ত সম্পূর্ণ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা