মালপোয়া

একধরণের ভারতীয় উপমহাদেশীয় মিষ্টি পিঠা

মালপোয়া একধরনের ভারতীয় উপমহাদেশীয় মিষ্টি পিঠা জাতীয় খাবার যা ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা,[১] বিহার ও মহারাষ্ট্রে জনপ্রিয়। মাল্পোয়া সাধারণতঃ ভাজা মিষ্টি, কিন্তু শুকনো বা রসালো হতে পারে। ওড়িশার ও আহমেদাবাদের জগন্নাথ মন্দিরে জগন্নাথদেবকে সকালের পূজার জলখাবার বা "সংকল্প ধুপ" ভোগ এবং সন্ধ্যা-আরতির ভোগ বা "সাঁঝধুপ" হিসাবে নানা রকম মালপোয়া (যেমন বড়া আমালু, সানা আমালু) উৎসর্গ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ায় অবস্থিত রাজাপুরের জগন্নাথ মন্দিরেও মালপোয়া ভোগ দেয়ার রীতি আছে।

মালপোয়া
বাঙালি শৈলীতে তৈরি মালপোয়া
অন্যান্য নামপানপিঠে, তেলের পিঠা
প্রকারজলখাবার
উৎপত্তিস্থলভারতীয় উপমহাদেশ
অঞ্চল বা রাজ্যনেপাল, বঙ্গ, ওড়িশা, বিহার,মহারাষ্ট্র
প্রধান উপকরণআটা, চাল গুঁড়ো, চিনি, নারকেল কুঁড়া

[২] বাংলায় পৌষ সংক্রান্তিকে পিঠা পার্বন বলা হয় এবং এই দিন অন্যান্য পিঠার সংগে মালপোয়াও তৈরি করা ও খাওয়া হয়। বিহারের মিথিলাতে হোলির সময় মাটন কারির সংগে মালপোয়া খাওয়া হয়। [৩]

ইতিহাস সম্পাদনা

বৈদিক যুগে আর্যদের দ্বারা ব্যবহৃত সবচেয়ে ঊর্বর ফসল ছিলো বার্লি। সে সময় আপুপা নামের একধরনের মিষ্টান্ন প্রস্তুত হতো, যেক্ষেত্রে বার্লির ময়দা হয় ঘি ভাজা হত কিংবা জলে সিদ্ধ করা হত, এবং পরে তা মধুতে চোবানো হত। বর্তমানে মালপোয়া তৈরিতেও অনুরূপ উপকরণ ও পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

মালপোয়া বনাম মিষ্টান্ন সম্পাদনা

নানা জায়গার নানা রকম মালপোয়া আছে। পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার মালপোয়া সাধারণত কম মিষ্টি [৪]

রকমারি মালপোয়া প্রস্তুত প্রণালি সম্পাদনা

পাকা কলা বা নারকেলের মধ্যে চালগুঁড়া বা আটা ও চিনি দুধ বা ক্ষীর ও জল মিশিয়ে মালপোয়ার প্রাথমিক মিশ্রণ প্রস্তুত হয়। তারপর তার উপরে নানা রকমের মাল মশলা যেমন লবঙ্গ এলাচ ইত্যাদি যোগ করা হয়। তারপর ভাজা হয়। বিহারের মালপোয়ায় ভাজার আগেই অনেক চিনি দিয়ে শুকনো মিষ্টি হসাবে তৈরি হয়। বাংলা ও ওড়িশাতে ভাজার পরে মিষ্টি রসে সিক্ত করে রসের মিষ্টি হিসাবে পরিবেশন করা হয়। অনেক সময় কলার বদলে আনারস বা আমের মালপোয়া বানানো হয়।

উত্তর ভারত বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশরাজস্থানের মালপোয়াতে কোন ফল থাকে না। উপর্যুক্ত মাল মশলা (ময়দা, চালের গুঁড়ো, দুধ, চিনি) ছাড়াও অনেক সময় দই যোগ করে খানিকক্ষণ গেঁজিয়ে নেওয়া হয় তারপর ফেনাওয়ালা প্যানকেকের মত ভাজা হয় যার কিনারা থাকে মুচমুচে আর মাঝখানটা নরম। তারপর মিষ্টি রসে ডুবিয়ে রাখা হয়। ওড়িশি মালপোয়া(আমালু)র প্রস্তুতিতেও দই ব্যবহার হয়ে থাকে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Ray, Dipti (01.1.2007)। Pratapararudradeva: The Great Suryavamsi King Of Orissa 1497 To 1540। Lecture notes in mathematics 1358। Northern Book Centre। আইএসবিএন 978-8172111953  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  2. "CHHAPAN BHOG, 56 sacred items of Jagannath Temple, Puri"। ৯ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০১২ 
  3. http://www.ifood.tv/network/Malapua[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "Malpua Recipe"। vegrecipesofindia.com। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৬