এলজিবিটিকিউ

"লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডার" এর জন্য প্রারম্ভিকতা
(LGBTQ থেকে পুনর্নির্দেশিত)

এলজিবিটিকিউ (LGBTQ) হচ্ছে একটি শব্দ যা বিভিন্ন যৌনতা এবং লিঙ্গ পরিচয়কে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। [] এর মধ্যে থাকে লেসবিয়ান (মেয়েরা যারা মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট), [] গে (পুরুষরা যারা পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট), [] বাইসেক্সুয়াল (যারা পুরুষ এবং মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে), [] ট্রান্সজেন্ডার (যারা জন্মগত লিঙ্গ পরিচয়ের বাইরে নিজেদের অনুভব করে), [] এবং কিউইয়ার (যারা ঐতিহ্যগত লিঙ্গ বা যৌন পরিচয়ের বাইরের পরিচয় পছন্দ করে)। []

এলজিবিটি প্রকাশনা, গৌরব পদযাত্রা ও সম্পর্কিত অনুষ্ঠানগুলিতে (এমন ইতালির বোলোনা প্রাইড ২০০৮-এর এই মঞ্চে) এলজিবিটি আদ্যক্ষরটিকে বর্জন করে নতুন নতুন শব্দ নিয়মিতভাবে যোগ করা হচ্ছে।

এলজিবিটিকিউ আন্দোলন মূলত এই সমস্ত মানুষদের সমান অধিকার এবং সমাজে গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করছে। [] বিশ্বজুড়ে এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের নিজস্ব পরিচয় নিয়ে বাঁচার স্বাধীনতা চাইছেন। [] বিভিন্ন দেশে এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন, কিছু দেশে এলজিবিটিকিউ+ মানুষদের অধিকার সুরক্ষিত, আবার কিছু দেশে এখনো এটি বৈধতা পায়নি। [] তবে, সম্প্রতি বিভিন্ন দেশ এবং সমাজে এই আন্দোলন বেশি দৃশ্যমান হয়েছে, এবং পরিবর্তন আসছে। [১০]

রংধনু পতাকা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্য ও গর্বের প্রতীক।

শব্দটির ইতিহাস

সম্পাদনা

LGBT শব্দটি ১৯৮০-এর দশকে ব্যবহার শুরু হয়। [১১] আগে গে শব্দটি সাধারণভাবে ব্যবহার হলেও, পরে মানুষ বুঝতে পারে যে সবাইকে ওই একটি শব্দে বোঝানো ঠিক না। তাই লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল আর ট্রান্সজেন্ডার — এই চারটি পরিচয়ের জন্য মিলিয়ে LGBT শব্দটি তৈরি হয়। [১২]

শব্দের ভিন্ন রূপ

সম্পাদনা

"LGBT" শব্দের অনেক রকম রূপ আছে:

  • **LGBTQ** – যেখানে "Q" মানে কুইয়ার বা প্রশ্নকারী (যারা এখনও তাদের পরিচয় নিয়ে ভাবছে)।
  • **LGBTQ+** – এখানে "+" চিহ্ন দিয়ে আরও পরিচয় যেমন ইন্টারসেক্স, অ্যাসেক্সুয়াল, নন-বাইনারি ইত্যাদি বোঝানো হয়।
  • **LGBTQIA** – এখানে "I" মানে ইন্টারসেক্স আর "A" মানে অ্যাসেক্সুয়াল বা মিত্র (যারা এই সম্প্রদায়কে সমর্থন করে)।
  • **2SLGBTQIA+** – এই রূপে "2S" মানে টু-স্পিরিট, যা কিছু আদিবাসী সংস্কৃতিতে ব্যবহৃত হয়। [১৩]

সমালোচনা

সম্পাদনা

অনেকে বলেন এই শব্দগুলো অনেক লম্বা আর জটিল হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ সহজে বুঝতে পারে না। [১৪] কেউ কেউ মনে করেন কিছু পরিচয় বেশি গুরুত্ব পায়, আর কিছু পরিচয় থেকে যায় পিছনে। আবার, "কুইয়ার" শব্দটি কিছু দেশে বা সমাজে এখনো খারাপ শব্দ হিসেবে দেখা হয়।

বিকল্প শব্দ

সম্পাদনা

এই সমস্যাগুলোর জন্য কিছু মানুষ অন্য শব্দ ব্যবহার করেন, যেমন:

  • **কুইয়ার সম্প্রদায়** – যেটা সব ধরনের পরিচয় একসাথে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
  • **রংধনু সম্প্রদায়** – রংধনুর মতো অনেক পরিচয়কে বোঝাতে ব্যবহৃত শব্দ।
  • **লিঙ্গ ও যৌন সংখ্যালঘু** – আরও একাডেমিক বা সরকারি কাজে ব্যবহৃত শব্দ।

তবে "LGBTQ" বা "LGBTQ+" এখনো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত শব্দ, বিশেষ করে আন্তর্জাতিকভাবে।

  1. United Nations LGBTQ Rights, https://www.un.org/en/our-work/lgbti
  2. Human Rights Campaign: LGBTQ Equality, https://www.hrc.org
  3. GLAAD: LGBTQ Advocacy, https://www.glaad.org
  4. Human Rights Campaign: LGBTQ Equality, https://www.hrc.org
  5. United Nations LGBTQ Rights, https://www.un.org/en/our-work/lgbti
  6. GLAAD: LGBTQ Advocacy, https://www.glaad.org
  7. United Nations LGBTQ Rights, https://www.un.org/en/our-work/lgbti
  8. Human Rights Campaign: LGBTQ Equality, https://www.hrc.org
  9. GLAAD: LGBTQ Advocacy, https://www.glaad.org
  10. Human Rights Campaign: LGBTQ Equality, https://www.hrc.org
  11. https://www.britannica.com/topic/LGBT
  12. https://www.theatlantic.com/sexes/archive/2013/01/the-incredible-expanding-acronym/267094/
  13. https://www.healthline.com/health/2slgbtqia
  14. https://www.vox.com/identities/2018/6/21/17488050/lgbtq-meaning-queer-gay-lesbian-transgender-bisexual

ভারত ও বাংলাদেশে

সম্পাদনা

ভারতে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা ও আন্দোলন চলে আসছে। [] ২০১৮ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ৩৭৭ ধারার একটি অংশ বাতিল করে সমকামিতা অপরাধ নয় বলে ঘোষণা করে, যা ছিল এলজিবিটিকিউ অধিকারের জন্য একটি বড় বিজয়। [] এরপর থেকে ভারতজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা, মিডিয়া এবং কর্মীরা এই সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছে। []

বাংলাদেশে এলজিবিটিকিউ বিষয়টি এখনো বেশ সংবেদনশীল ও সীমিত পরিসরে আলোচনা হয়। [] দেশটির আইনে এখনো সমকামিতা অবৈধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। [] ২০১৬ সালে দুজন এলজিবিটিকিউ অধিকারকর্মীকে হত্যার পর পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে ওঠে এবং অনেক এলজিবিটিকিউ ব্যক্তি নিরাপত্তার কারণে আত্মগোপন করে। [] তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং কিছু স্বাধীন সংগঠন এই সম্প্রদায়ের জন্য সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। [][]

 
এলজিবিটিকিউর বিভিন্ন ভাগ

পাদটীকা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা