এর্নো রুবিক
এর্নো রুবিক (Ernő Rubik) (হাঙ্গেরীয় ভাষায়: (rubik ˈɛrnøː) একজন হাঙ্গেরীয় বংশোদ্ভূত ভাস্কর ও স্থাপত্য বিদ্যার অধ্যাপক যিনি ১৯৭৪ সালে রুবিক্স কিউব উদ্ভাবন করেন। উনি রুবিক্স কিউব ছাড়াও বিভিন্ন যান্ত্রিক পাজল যেমন, রুবিক্স ম্যাজিক, রুবিক্স ম্যাজিকঃ মাস্টার এডিশন, রুবিক্স স্ন্যাক এবং রুবিক্স ৩৬০ আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত।
এর্নো রুবিক | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | হাঙ্গেরীয় |
শিক্ষা | টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি হাঙ্গেরি |
পেশা | শিক্ষকতা[১] |
নিয়োগকারী | একাডেমি অব অ্যাপ্লায়েড আর্ট এন্ড ক্রাফট। |
পরিচিতির কারণ | পাজল ডিজাইনার , রুবিক্স কিউব |
ছেলেবেলা
সম্পাদনাএর্নো রুবিক হাঙ্গেরির, বুদাপেস্টে ১৯৪৪ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর বাবা এর্নো রুবিক ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার এবং Esztergom এয়ারক্রাফট ফ্যাক্টরির এয়ারক্রাফট ডিজাইনার। তাঁর মা ম্যাগদলনা জ্যনতো ছিলেন একজন কবি।[২] এর্নো রুবিকের ছেলেবেলা কাটে বুদাপেস্টে। ছোটবেলায় ছবি আকার শখ ছিল এবং প্রচুর ছবি আঁকতেন।
কর্ম জীবন ও রুবিক্স কিউব
সম্পাদনাএর্নো রুবিক ১৯৬৭ সনে টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি হাঙ্গেরি থেকে স্থাপত্যে ডিপ্লোমা করেন। পরবর্তিতে পোস্টগ্রাজুয়েশন করেন। তিনি একাডেমি অব অ্যাপ্লায়েড আর্ট এন্ড ক্রাফটে একজন ইন্সট্রাক্টর হিসাবে যোগদান করেন। তাঁর কাজের অবসর সময়গুলোতে তিনি ত্রিমাত্রিক ডিজাইন নিয়ে কাজ করতেন। এর্নো তাঁর কাজকে ভালোবাসতেন। তিনি স্থাপত্য বিদ্যায় যথেষ্ট আগ্রহী ছিলেন, কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এটি বিজ্ঞান,প্রযুক্তি এবং কলার সংমিশ্রণ। পেশায় একজন শিক্ষক হিসাবে তিনি বিশ্বাস করতেন, শিক্ষা হল সর্বোত্তম পান্থা কোন কিছু জানার এবং আবিষ্কারের। ১৯৭৪ সনের শেষ দিকে তিনি চলনক্ষম খন্ড দ্বারা গঠিত একটা কিউব (ঘনক) বানানোর চিন্তা করেন এবং একটা আইডিয়াও দাঁড় করিয়ে ফেলেন। তিনি প্রথম দিকে 2x2x2 কিউব বানানোর কথা চিন্তা করলেও পরবর্তিতে তিনি 3x3x3 কিউব বানানোর দিকে ঝুঁকেন। কারণ এই ধরনের কিউবে সেন্টার পিসটা সবসময় মাঝে থাকে।[৩] তারপর তিনি অনেক ধরনের ডিজাইন নিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা করলেন। এরমধ্যে ইলাস্টিক ব্যান্ড দিয়ে কিউবের টুকরা গুলো বেঁধে রাখার মত ডিজাইনও ছিল। শেষ পর্যন্ত তিনি সফলকাম হলেন। কিউবটি ছিল অনেকগুলো টুকরো দ্বারা গঠিত যা ভেতর থেকে আবদ্ধ। এর টুকরোগুলো ডান,বাম,উপর,নিচে,পেছনের দিক দিয়ে ঘড়ির কাঁটার দিকে ও বিপরীত দিকে ঘুরানো যেত। কিউবের ছয় দিকে ছয় রঙ যথা ক্রমে সবুজ, নীল, সাদা, হলুদ, লাল কমলা। রুবিক্স কিউবটির বৈশিষ্ট হলো এটিকে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে প্রায় ৪৩২৫২০০৩২৭৪৪৮৯৮৫৬০০০টি ভিন্ন আকার দেয়া যায়। যার মধ্যে কেবল একটি শুদ্ধ। তিনি তখন কল্পনা করেননি পরবর্তিতে তাঁর কিউবটির এই ডিজাইন করা এই কিউবটি বিশ্বব্যাপী এত জনপ্রিয়তা পাবে। ১৯৭৫ সালে রুবিক তাঁর কিউবের জন্য হাঙ্গেরীয় প্যাটেন্ট লাভ করেন। এবং ১৯৮৭ সালে আন্তর্জাতিক প্যাটেন্ট লাভ করেন।
পরবর্তিতে ১৯৮০ সনে এর্নো রুবিক গেইম এন্ড পাজেল জার্নাল És játék এর সম্পাদক হন। ১৯৮৩ সালে তিনি রুবিক স্টুডিও খুলেন যেখানে তিনি বিভিন্ন খেলনা এবং আসবাবপত্র ডিজাইন করতেন। ১৯৮৭ সনে তিনি পূর্ণ মর্যাদার অধ্যাপক হন এবং ১৯৯০ সালে হাঙ্গেরিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং একাডেমির প্রেসিডেন্ট হন। একাডেমিতে তরুণ ও মেধাবী ইঞ্জিনিয়ারদের কল্যাণ এর লক্ষে তিনি ইন্টারন্যাশনাল রুবিক্স ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।
বর্তমান জীবন
সম্পাদনাবর্তমান সময়ে এর্নো রুবিক ভিডিও গেম ডেভেলপমেন্ট এবং স্থাপত্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করছেন। এর্নো রুবিককে খুব কমই জনমানুষের সামনে আসতে দেখা যায়। তাঁর সাথে যোগাযোগ করা খুব কষ্টসাধ্য। তিনি স্পিডকিউবিং ইভেন্ট গুলোতে সচারচর যান না। তারপরও ২০০৭ সালের বুদাপেস্টে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে গিয়েছিলেন। তাছাড়া ২০০৭ সালের জুলাইয়ে তিনি ব্রিজেস বিটওইন ম্যাথমেটিক্স এন্ড আর্টস কনফারেন্সে একটি লেকচার দেন, ভক্তদের অটোগ্রাফও দেন। এর্নো রুবিক ইউ এস এ সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ফেস্টিভালের একজন উপদেষ্টা। এর্নো রুবিক কিউব গড়ে প্রায় এক মিনিটে সমাধান করতে পারেন যেখানে ওয়ার্ল্ড রেকর্ড প্রায় ৫.৫৫ সেকেন্ড।[৪]
পুরস্কার
সম্পাদনা- ১৯৭৮ – BNV-díj পুরস্কার
- ১৯৮৩ – Magyar Népköztársaság Állami Díja, হাঙ্গেরিয়ান পুরস্কার যা ত্রিমাত্রিক কাঠামোর ছবির মাধ্যমে শিক্ষাদান ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান এর জন্যে প্রদান করা হয়।
- ১৯৯৫ – Dennis Gabor পুরস্কার
- ১৯৯৬ – Jedlik পুরস্কার
- ২০০৭ – Kossuth পুরস্কার
- ২০১০ – হাঙ্গেরিয়ান অর্ডার অব মেরিট ক্রস অব দ্যা স্টার।
- ২০১০ – Prima Primissima পুরস্কার
- ২০১২ – My Country পুরস্কার
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ http://www.infoplease.com/biography/var/ernorubik.html
- ↑ International Who's Who 2000 । Europa। ১৯৯৯। পৃষ্ঠা 1342। আইএসবিএন 1-85743-050-6।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।
- ↑ http://www.youtube.com/watch?v=0poQ8q8RzSg