৬০২-৬২৮ সালের বাইজেন্টাইন-সাসানিয়ান যুদ্ধ

৬০২-৬২৮ সালের বাইজেন্টাইন-সাসানিয়ান যুদ্ধ ছিল বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য এবং পারস্য সাসানিয়ান সাম্রাজ্যের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের সিরিজের চূড়ান্ত এবং সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক। সম্রাট মরিস সাসানিয়ান রাজা দ্বিতীয় খসরোকে তার সিংহাসন পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার মাধ্যমে ৫৯১ সালে দুটি শক্তির মধ্যে পূর্ববর্তী যুদ্ধ শেষ হয়েছিল।[১] ৬০২ সালে মরিস তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ফোকাসের হাতে খুন হন। দৃশ্যত ক্ষমতাচ্যুত সম্রাট মরিসের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে খসরো যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। এটি একটি বহু দশক দীর্ঘ সংঘাতে পরিণত হয়েছিল এবং এটি মিশর, লেভান্ট, মেসোপটেমিয়া, ককেশাস, আনাতোলিয়া, আর্মেনিয়া, এজিয়ান সাগর এবং কনস্টান্টিনোপল ইত্যাদি অঞ্চলসহ সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে সংঘটিত হয়েছিল।

যদিও পার্সিয়ানরা ৬০২ থেকে ৬২২ সালের যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সফল প্রমাণিত হয়েছিল এবং লেভান্ট, মিশর, এজিয়ান সাগরের বেশ কয়েকটি দ্বীপ এবং আনাতোলিয়ার কিছু অংশ জয় করেছিলন। তবে প্রাথমিক বিপর্যয় সত্ত্বেও ৬১০ সালে সম্রাট হেরাক্লিয়াস নেতৃত্ব দেন। ৬২২ থেকে ৬২৬ সাল পর্যন্ত ইরানি ভূমিতে হেরাক্লিয়াসের অভিযান পারসীয়দেরকে রক্ষণাত্মক দিকে যেতে বাধ্য করেছিল। ফলে তার বাহিনী আবার গতি লাভ করতে পারে। আভার এবং স্লাভদের সাথে মিত্রতা করে পারসিয়ানরা ৬২৬ সালে কনস্টান্টিনোপল দখলের চূড়ান্ত প্রচেষ্টা করেছিল, কিন্তু সেখানে পরাজিত হয়েছিল। ৬২৭ সালে তুর্কিদের সাথে মিত্র হয়ে হেরাক্লিয়াস পারস্যের কেন্দ্রস্থল আক্রমণ করেন। পারস্যে একটি গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় পারস্যরা তাদের রাজাকে হত্যা করে এবং শান্তির জন্য মামলা করে।

৬০২-৬২৮ সাল জুড়ে চলা বাইজেন্টাইন-সাসানিয়ান সংঘর্ষের শেষের দিকে উভয় পক্ষই তাদের মানব ও বস্তুগত সম্পদ নিঃশেষ করে ফেলেছিল এবং খুব সামান্যই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। ফলস্বরূপ তারা ইসলামিক রাশিদুন খিলাফতের আকস্মিক উত্থানের সময় দুর্বল ছিল। রাশিদুন খিলাফতের বাহিনী যুদ্ধের মাত্র কয়েক বছর পরে উভয় সাম্রাজ্য আক্রমণ করেছিল। মুসলিম বাহিনী দ্রুতগতিতে সমগ্র সাসানিয়ান সাম্রাজ্যের পাশাপাশি লেভান্ট, ককেশাস, মিশর এবং উত্তর আফ্রিকার বাইজেন্টাইন অঞ্চলগুলিকে জয় করে নেয় । পরবর্তী শতাব্দীতে বাইজেন্টাইন এবং আরব বাহিনী নিকট প্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণের জন্য একের পর এক যুদ্ধে লিপ্ত হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Norwich 1997, পৃ. 87