হেসিয়ড একজন প্রাচীন গ্রিক কবি। ধারণা করা হয় তিনি হোমারের সমকালীন কবি এবং খ্রিষ্টপূর্ব ৭৫০ থেকে ৬৫০ অব্দের মধ্যে সক্রিয় ছিলেন।[][] প্রাচীন সাহিত্যিকগণ হেসিয়ড ও হোমারকে গ্রিক ধর্মীয় রীতিনীতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারকারী বলে গণ্য করেন।[] আধুনিক পণ্ডিতবৃন্দ তাকে গ্রিক পুরাণ, কৃষিকাজের কৌশল, আদি অর্থনৈতিক ভাবধারা,[] প্রাচীন গ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ও প্রাচীন সময়রক্ষণের প্রধান উৎস হিসেবে উল্লেখ করেন। তার উল্লেখযোগ্য বইগুলো হল থিওগোনি, ওয়ার্কস অ্যান্ড ডেজ এবং শিল্ড অব হেরাক্লিস

হেসিয়ড
"সুডো-সেনেকা," রোমান দার্শনিক সেনেকার ব্রোঞ্জ পোট্রেট হিসেবে দীর্ঘকাল ধারণা করে আসা মূর্তিটিকে এখন অনেকেই হেসিয়ডের কাল্পনিক উপস্থাপন বলে মনে করছেন
"সুডো-সেনেকা," রোমান দার্শনিক সেনেকার ব্রোঞ্জ পোট্রেট হিসেবে দীর্ঘকাল ধারণা করে আসা মূর্তিটিকে এখন অনেকেই হেসিয়ডের কাল্পনিক উপস্থাপন বলে মনে করছেন
স্থানীয় নাম
Ἡσίοδος
জন্মআনু. খ্রিষ্টপূর্ব ৭৫০ অব্দ
সাইম, এওলিস
পেশাকবিদার্শনিক

হেসিয়ডের জীবনের সময়কাল নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। হেসিয়ড তার সৃষ্টিকর্মে তার পাঠকদের জন্য তার জীবনের অল্প বর্ণনা দিয়েছেন। ওয়ার্ক অ্যান্ড ডেজ-এ এবং থিওগোনির কয়েকটি পাতায় তিনটি সুনির্দিষ্ট তথ্যসূত্র রয়েছে যা পণ্ডিতদের অনুমানকে সমর্থন করে। প্রথম কবিতায় বলা হয় তার পিতা এওলিসের সাইম (এশিয়া মাইনরের উপকূলে, লেজবোস দ্বীপের কিছুটা দক্ষিণে) থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে বোওটিয়ার থেসপিয়ের এসক্রা নামে একটি ছোট গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। ওয়ার্ক অ্যান্ড ডেজ-এ বর্ণিত রয়েছে এটি "একটি অভিশপ্ত স্থান, শীতকালে নিষ্ঠুর, গ্রীষ্মকালে কষ্টদায়ক, এবং কখনোই আনন্দদায়ক নয়।"[]

সাহিত্যকর্ম

সম্পাদনা

প্রাচীন ভাষ্যকাররা থিওগোনি, ওয়ার্কস অ্যান্ড ডেজ এবং শিল্ড অব হেরাক্লিস নামে তিনটি সাহিত্যকর্মকে হেসিয়ডের রচনা বলে উল্লেখ করেছেন। হেসিয়ডের অন্যান্য সাহিত্যকর্মের কেবল খণ্ডাংশ পাওয়া গেছে। যে রচনা ও খণ্ডাংশগুলো এখনো পাওয়া যায় সেগুলো রীতিসম্মত মাত্রা ও মহাকাব্যের ভাষায় রচিত।

থিওগোনি

সম্পাদনা

থিওগোনি-কে হেসিয়ডের প্রথম সৃষ্টিকর্ম বলে গণ্য করা হয়। এই কবিতা ও ওয়ার্কস অ্যান্ড ডেজ কবিতার বিষয়বস্তুর পার্থক্য সত্ত্বেও কয়েকজন ব্যতিক্রম ব্যতীত অনেক পণ্ডিত মনে করে এই দুটি একই ব্যক্তির কাজ।

ওয়ার্কস অ্যান্ড ডেজ

সম্পাদনা

ওয়ার্কস অ্যান্ড ডেজ আট শতাধিক ছত্রবিশিষ্ট কবিতা। এটি দুটি সাধারণ সত্য নিয়ে আবর্তিত। প্রথমটি হল কর্মই হল মানুষের সার্বজনীন ভাগ্য, যে কাজ করবে সেই ভাগ্য অর্জন করবে।

এটি সুমেরীয়, হিব্রু, ব্যাবিলিনীয়, ও মিশরীয় সাহিত্যের প্রতিষ্ঠিত নীতিমূলক কবিতার রীতি দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. ওয়েস্ট, এম. এল., Hesiod: Theogony, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস (১৯৬৬), পৃষ্ঠা ৪০।
  2. গ্রিফিন, জ্যাসপার, "Greek Myth and Hesiod", J. Boardman, J. Griffin and O. Murray (eds), The Oxford History of the Classical World, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস (১৯৮৬), পৃষ্ঠা ৮৮।
  3. অ্যান্ড্রুজ, অ্যান্থনি, Greek Society, পেলিকান বুকস (১৯৭১), পৃষ্ঠা ২৫৪ f.
  4. রথবার্ড, মারি এন., Economic Thought Before Adam Smith: Austrian Perspective on the History of Economic Thought, vol. 1, শেল্টেনহাম, যুক্তরাজ্য: এডগার এলগার পাবলিশিং (১৯৯৫), পৃষ্ঠা ৮; গর্ডন, ব্যারি জে., Economic analysis before Adam Smith: Hesiod to Lessius (১৯৭৫), পৃষ্ঠা ৩; ব্রকওয়ে, জর্জ পি., The End of Economic Man: An Introduction to Humanistic Economics, ৪র্থ সংস্করণ (২০০১), পৃষ্ঠা ১২৮।
  5. ওয়ার্কস অ্যান্ড ডেজ, পৃষ্ঠা ৬৪০।