আনাতোলিয়া

পশ্চিম এশিয়ার একটি উপদ্বীপ
(এশিয়া মাইনর থেকে পুনর্নির্দেশিত)

আনাতোলিয়া পশ্চিম এশিয়ার একটি উপদ্বীপ । আনাতোলিয়া শব্দটি বাংলাভাষাও ব্যবহৃত হয়। তবে তুর্কিরা একে আনাদোল বা আনাদোলো ( তুর্কি : Anadolu ) বলে। [৫] তুরস্কের বেশিরভাগ অংশ এই উপদ্বীপেই গঠিত। আনাতোলিয়াকে ইংরেজিতে এশিয়া মাইনর (Asia minor) নামেও ডাকা হয়।

আনাতোলিয়া
স্থানীয় নাম:
আনাতোলিয়ান
আধুনিক তুরষ্কে আনাতোলিয়ার অবস্থান[১][২]
ভূগোল
অবস্থান
স্থানাঙ্ক৩৯° উত্তর ৩৫° পূর্ব / ৩৯° উত্তর ৩৫° পূর্ব / 39; 35
আয়তন৭,৫৬,০০০ বর্গকিলোমিটার (২,৯২,০০০ বর্গমাইল)[৩]
প্রশাসন
তুরষ্ক
বৃহত্তর সিটিইস্তাম্বুল (জনসংখ্যা 15,067,724[৪])
জনপরিসংখ্যান
বিশেষণআনাতুলিয়ান
ভাষাতুর্কি ভাষা، কুর্দি ভাষা، আর্মেনিয় ভাষা ، গ্রীক ভাষা، আরবী ভাষা، কাবার্ডিয়ান ভাষা، অন্যান্য ভাষা
জাতিগত গোষ্ঠীসমূহতুর্কি، কুর্দি، আর্মেনিয়ান، গ্রীক، আরব، লাযি، অন্যান্য উপজাতি
উপদ্বীপে আনাতোলিয়ার চিত্র

আনাতোলিয়া শব্দটি গ্রীক শব্দ Aνατολή বা Ανατολία (আনাতোলিয়া) থেকে এসেছে। যার অর্থ - সূর্যোদয় বা পূর্ব।

ভূগোল সম্পাদনা

 
ইউরোপের সঙ্গে তুরস্কের অবস্থান (আয়তক্ষেত্রের মধ্যে)। তুরষ্কের আনাতোলিয়ায় ইউরোপ ও এশিয়া অংশের মিলনস্থল।
 
১৯০৭ সালে এশিয়া মাইনরের মানচিত্র। যার দ্বারা প্রাচীন রাজ্য বোঝা যায় । মানচিত্রে এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এবং সাইপ্রাস দ্বীপসহ আনাতোলিয়ার মহাদেশীয় অবস্থান রয়েছে।

সাধারণত আনাতোলিয়ার অঞ্চলটি আলেকজান্দ্রিয়া উপসাগর থেকে আটলান্টিক পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়। [৬] আনাতোলিয়ার এই সংজ্ঞাটি আধুনিক মেরিয়াম ওয়েবস্টার অভিধানে এভাবেই রচিত। তদনুসারে, আনাতোলিয়া পূর্বে ফোরাত নদী এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিক আর্মেনিয়ান মালভূমি থেকে ঘুরে সিরিয়ার অর্ণেট উপত্যকা পর্যন্ত প্রসারিত। আর্মেনিয়ান গণহত্যার পর, আর্মেনিয়া নামটি আধুনিক তুর্কি সরকার পূর্ব আনাতোলিয়া নামে পরিবর্তন করা হয়েছে। [৭][৮] পূর্ব আনাতোলিয়ার সর্বোচ্চ পর্বতগুলো হলো সুফান (৪০৫৮ মিটার) এবং আরারাত (৫১২৩ মিটার)। [৯] ফুরাতনদী, আরাস নদী। কারাসাও এবং মুুরাত নদী, আর্মেনিয়াকে ককেশাস অঞ্চলের সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে। [১০]

ইতিহাস সম্পাদনা

পূর্ব ইতিহাস সম্পাদনা

আনাতোলিয়ায় মানব জীবন শুরু হয়েছিল প্রাচীন প্রস্থর যুগে[১১] আধুনিক যুগের আনাতোলিয়া ইউরোপীয় ভাষাগুলোর আদিবাস ছিল। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, আদিবাসী ইওরোপীয় ভাষাগুলি তৈরি হয় প্রশান্ত মহাসাগরের অঞ্চল থেকে। যাইহোক, এটা নিশ্চিত যে ইন্দো-ইউরোপীয় প্রথম ভাষা হলো আনাতোলিয়ান ভাষা। আনাতোলিয়ায় খ্রীষ্টের পূর্ব থেকে এই ভাষা ব্যবহৃত হচ্ছে এবং উভয় ভাষার মধ্যে কিছু সম্পর্ক হয়েছে। ইতিহাসের পাতায় সর্বত্র এই অঞ্চলটি বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। গ্রীক, রোমান, কুর্দি, বাইজান্টাইন, সেলজুক এবং তুর্কীদের আবাসস্থল ছিল । বর্তমানে আনাতোলিয়ায় বৃহত্তম নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী হল তুর্কিরা। যদিও এটি তুর্কিদের প্রকৃত স্বদেশ নয়। তবে এটি সেলজুকঅটোমান আমলে তুর্কিদের অঞ্চল হয়ে উঠেছে।

এশিয়া মহাদেশের পশ্চিম অঞ্চলটির নাম আনাতোলিয়া। একে এশিয়ান টার্কিও বলা হয়। আনাতোলিয়া অঞ্চলটি এশিয়া মাইনারের সর্বাধিক মালভূমি। উত্তর এবং দক্ষিণে রয়েছে ইয়োনটিক এবং তারসার কূপ। যা পূর্বে আর্মেনিয়ার পাহাড়ের সাথে মিলিত হয়। উত্তরে কৃষ্ণ সাগরের শক্ত পাথুরে তীর। দক্ষিণ উপকূলে রয়েছে বিশাল উপসাগর। তবে পশ্চিম উপকূলটি বেশ ছিন্নভিন্ন এবং এখানে বেশ কয়েকটি ছোট দ্বীপ রয়েছে। আনাতোলিয়ার অঞ্চলটি শুকনো। যেখানে নোনতা পানির হ্রদ রয়েছে। প্রায়শই ভূমিকম্প হয়। উপকূলীয় অঞ্চলগুলি এই অঞ্চলের জলবায়ুর কারণে হিমশীতল।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Hopkins, Daniel J.; Staff, Merriam-Webster; 편집부 (2001)। Merriam-Webster's Geographical Dictionary। পৃষ্ঠা 46। আইএসবিএন 0 87779 546 0। সংগ্রহের তারিখ 18 مئی 2001  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. Stephen Mitchell, Anatolia: Land, Men, and Gods in Asia Minor. The Celts in Anatolia and the impact of Roman rule۔ Clarendon Press, Aug 24, 1995 – 266 pages. আইএসবিএন ৯৭৮-০১৯৮১৫০২৯৯ [১]
  3. Sansal, Burak। "History of Anatolia" 
  4. (TÜİK), Türkiye İstatistik Kurumu। "Türkiye İstatistik Kurumu, Adrese Dayalı Nüfus Kayıt Sistemi Sonuçları، 2018"। ৭ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২০ 
  5. ترکی میں احیائے اسلام کی موجودہ حالت، دورۂ ترکی کے مشاہدات، از خلیل احمد حامدی، ماہنامہ ترجمان القرآن، فروری 1969ء، صفحہ 352
  6. Philipp Niewohner (17 مارچ 2017)। The Archaeology of Byzantine Anatolia: From the End of Late Antiquity until the Coming of the Turks। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 18–। আইএসবিএন 978-0-19-061047-0  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. Sahakyan, Lusine (২০১০)। Turkification of the Toponyms in the Ottoman Empire and the Republic of Turkey (ইংরেজি ভাষায়)। Arod Booksআইএসবিএন 978-0-9699879-7-0 
  8. Hovannisian, রিচার্ড (২০০৭)। The Armenian genocide cultural and ethical legacies (ইংরেজি ভাষায়)। ট্রান্সেকশন পাব্লিশার্শ। পৃষ্ঠা 3। আইএসবিএন 978-1-4128-3592-3 
  9. Kit Tan (২০০৫)। "A new subspecies of Silene acaulis (Caryophyllaceae) from East Anatolia, Turkey" (ইংরেজি ভাষায়): 143–149। জেস্টোর 23726860  Authors list-এ |শেষাংশ1= অনুপস্থিত (সাহায্য)
  10. Palumbi, Giulio (২০১১-০৯-০৫)। "The Chalcolithic of Eastern Anatolia"ডিওআই:10.1093/oxfordhb/9780195376142.013.0009। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-০৬ 
  11. স্টেইনার, ম্যারী সি. (২০১৩)। "Early Upper Paleolithic shell beads at Üçağızlı Cave I (Turkey): Technology and the socioeconomic context of ornament life-histories" (ইংরেজি ভাষায়): ৩৮০–৩৯৮। আইএসএসএন 0047-2484ডিওআই:10.1016/j.jhevol.2013.01.008পিএমআইডি 23481346