হেমা মালিনী
হেমা মালিনী[৫] (হিন্দি: हेमा मालिनी; তামিল: ஹேமா மாலினி) (জন্ম: ১৬ অক্টোবর ১৯৪৮) ভারতের বিখ্যাত অভিনেত্রী, পরিচালক ও প্রযোজক। ১৯৬৮ সালে স্বপ্ন কা সওদাগর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রূপালি পর্দায় অভিষিক্ত হন। তিনি নায়ক ধর্মেন্দ্র ও রাজেশ খান্নার সাথে জুটি হয়ে অনেক হিট চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। সর্বমোট ১১ বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে মনোনয়ন পান। ২০০০ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মাননা লাভ করেন।
হেমা মালিনী | |
---|---|
জন্ম | হেমা মালিনী আর চক্রবর্ত্তী ১৬ অক্টোবর ১৯৪৮[১] আম্মানকুড়ি, তামিলনাড়ু, ভারত |
পেশা | অভিনেত্রী, প্রযোজক ও রাজনীতিবিদ |
কর্মজীবন | ষাটের দশক - বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | ধর্মেন্দ্র (১৯৮০–বর্তমান) |
সন্তান | এশা দেওল অহনা দেওল |
প্রাথমিক জীবন ও পরিবার
সম্পাদনাহেমা মালিনী জাতিগতভাবে একজন তামিল,[৬] তার মায়ের নাম ছিলো জয়ালক্ষ্মী চক্রবর্তী এবং পিতার নাম ছিলো ভিএসআর চক্রবর্তী।[৭][৮] হেমা'র ইতিহাস নিয়ে পড়ার আগ্রহ ছিলো, তিনি চেন্নাই (তৎকালীন মাদ্রাজ) শহরের মহিলা সভায় যোগ দিয়েছিলেন কারণ তিনি নারীবাদও পছন্দ করতেন।[৯] একাদশ শ্রেণিতে পড়াকালীন হেমা অভিনয় জগতে প্রবেশের চিন্তা করেছিলেন।[১০]
তিনি অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে ১৯৮০ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন,[১১][১২] এবং তার সঙ্গে হেমা প্রথম তুম হাসিন ম্যাঁ জাওয়ান (১৯৭০) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।[১৩] ধর্মেন্দ্র আগে থেকেই বিবাহিত ছিলেন এবং তার দুই ছেলে সানি দেওল এবং ববি দেওল পরে সফল হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন; অপরদিকে হেমার গর্ভেও ধর্মেন্দ্রর এশা দেওল এবং অহনা দেওল নামের দুটি মেয়ে হয়েছিলো, এশাও পরে অভিনেত্রী হন।
হেমার ভাতিজি মধু তামিল চলচ্চিত্র জগতে রোজা (১৯৯২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পান।[১৪]
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৬০-১৯৭০ (প্রাথমিক)
সম্পাদনাহেমা তার কর্মজীবন তামিল ভাষার চলচ্চিত্র দ্বারা শুরু করেছিলেন, তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ছিলো ইদু সাথিয়া যেটি ১৯৬২ সালে মুক্তি পেয়েছিলো, যদিও তার অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ১৯৬১ সালে মুক্তি পায় এবং ওটির নাম ছিলো পাণ্ডব বনবাস। ১৯৬৮ সালে হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্পের মহানায়ক রাজ কাপুর এর সঙ্গে হেমা অভিনীত চলচ্চিত্র স্বপ্ন কা সৌদাগর মুক্তি পায়।[১৫] হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্পে তিনি 'ড্রিম গার্ল' বা 'স্বপ্নের তরুণী' নামে পরিচিতি এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে পেয়েছিলেন।[১৫]
১৯৭০-১৯৭৮ (সফল অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা)
সম্পাদনাখ্যাতিমান অভিনেতা দেব আনন্দ এর সঙ্গে হেমা জনী মেরা নাম এ মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করে মোটামুটি পরিচিতি পেয়ে যান হিন্দি চলচ্চিত্র জগতে, চলচ্চিত্রটি ১৯৭০ সালে মুক্তি পেয়েছিলো। ১৯৭১ সালে শাম্মী কাপুর এবং রাজেশ খান্না অভিনীত চলচ্চিত্র আন্দাজ এ হেমা একজন অল্পবয়স্ক বিধবার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, একই বছরে মুক্তি পাওয়া লাল পাত্থার ছিলো তাকে দিয়ে ঋণাত্মক চরিত্রে অভিনয় করানো একটি চলচ্চিত্র।[১৫] পরের বছর ১৯৭২ সালে মুক্তি পায় হেমা অভিনীত চলচ্চিত্র সীতা অর গীতা যেটাতে তিনি ধর্মেন্দ্র এবং সঞ্জীব কুমার এর সঙ্গে অভিনয় করেন।[১৬] চলচ্চিত্রটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান।[১৭]
১৯৮০ - ১৯৯৭ বাণিজ্যিক সাফল্য
সম্পাদনা৮০ এর দশকে মলিনী ক্রান্তি, নাসিব, সত্তে পে সত্তা ও রাজপুতের মতো বড় বাজেটের ছবিতে অভিনয় করতে থাকেন, যার বেশিরভাগই বক্স-অফিসে সফল প্রমাণিত হয়েছিল। তিনি মা হওয়ার পর নায়িকা কেন্দ্রিক ভূমিকায় কাজ করে চলেছেন, অন্ধি তুফান, দুর্গা, রামকলি, সীতাপুর কি গীতা, এক ছাদার মাইলি সি, রিহাই এবং জামাই রাজার মতো ছবিতে।
এই সময়কালে, স্বামী ধর্মেন্দ্রর সাথে তার চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে আলিবাবা অর 40 চোর, বাঘাওয়াত, সম্রাট, রাজিয়া সুলতান, বাঘাওয়াত এবং রাজ তিলক অন্তর্ভুক্ত ছিল। তিনি দার্শ, বন্দিশ, কুদরত, হুম ডোনো, রাজপুত, বাবু, দুর্গা, সীতাপুর কি গীতা এবং পাপ কা পিঁপড়ার মতো সিনেমায় রাজেশ খান্নার সাথে জুটি বেঁধে চললেন, এর মধ্যে কিছুটা মাঝারি সাফল্য ছিল।
১৯৯০-এর দশকে, তিনি ১৯৯২ সালে ‘দিল আশনা হ্যায়’ ছবিটি প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছিলেন, প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিব্যা ভারতী ও শাহরুখ খান। তিনি তার দ্বিতীয় ভাগ্য চলচ্চিত্র মোহিনী (১৯৯৫) প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছিলেন, তার ভাতিজি মধু এবং অভিনেতা সুদেশ বেরি অভিনীত প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তারপরে তিনি নাচ এবং টেলিভিশনের কাজগুলিতে মনোনিবেশ করেছিলেন, কেবল মাঝে মাঝে ছবিতে উপস্থিত হন। ১৯৯৭ সালে, তিনি বিনোদ খান্নার প্রযোজনা হিমালয় পুত্র ছবিতে অভিনয় করেছিলেন, যা বিনোদয়ের ছেলে অক্ষয় খান্নার আত্মপ্রকাশের লক্ষ্যে চিহ্নিত হয়েছিল।
২০০০ - বর্তমান
সম্পাদনাবেশ কয়েক বছর ফিল্ম থেকে বিরতি নেওয়ার পরে, মালিনী বাগবানের (২০০৩) মাধ্যমে ফিরে আসেন, যার জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। তিনি ২০০৪ সালে নির্মিত বীর-জারা এবং ২০০ film সালে নির্মিত লাগা চুনারি মে দাগে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ২০১০ সালে তিনি সহযোদ্ধা অভিনেত্রী রেখার সাথে সাদিয়ানে অভিনয় করেছিলেন। ২০১১ সালে, তিনি তার তৃতীয় ফিচার ফিল্ম টেল মি ও খুদা প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছিলেন, এতে তার স্বামী ধর্মেন্দ্র এবং তার মেয়ে এশা দেওল উভয়ই অভিনয় করেছিলেন, যা বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছিল। ২০১৭ সালে তিনি বিজয় রাজে সিন্ধিয়ার ভূমিকায় এক থা রানী আইসি ভি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
চলচ্চিত্র
সম্পাদনাএই তালিকাটি অসম্পূর্ণ; এটি সম্প্রসারণ করে আপনি সাহায্য করতে পারেন। |
বছর | চলচ্চিত্র | ভূমিকা | নোট |
---|---|---|---|
১৯৭০ | জনি মেরা নাম | রেখা | |
১৯৭২ | সীতা অর গীতা | সীতা / গীতা | |
১৯৭৫ | শোলে | বসন্তী | |
১৯৭৭ | ড্রিম গার্ল | স্বপ্না / পদ্মা / চম্পবাই / ড্রিম গার্ল / রাজকুমারী | |
২০০০ | হ্যায় রাম | আমবুজাম আয়েনগার | |
২০০১ | সেন্সর | রাধা | |
২০০৩ | আমান ক্যা ফারিস্তে | ||
২০০৩ | বাগবান | পুজা মালোত্রা | |
২০০৪ | ভীর-জারা | স্বরসতী | |
২০০৫ | বাগমতি | বিশেষ উপস্থিতি | |
২০০৬ | গঙ্গা | ঠাকুরাইন সাবিত্রী বি. সিং | |
২০০৬ | বাবুল | শোভানা কাপুর | |
২০০৭ | লাগা চুনারির মে দাগ | দুলারিয়া | বিশেষ উপস্থিতি |
২০০৭ | গাঙ্গত্রী | ঠাকুরাইন সাভিত্রী ভি. সিং | |
২০১০ | সাদিয়ান | বেনেজার পারভেজ শাহাবুদ্দিন | |
২০১১ | বুডঢা... হোগা তেরা বাপ | সীতা | |
২০১১ | আরাকসান | শাকুন্তালা | বিশেষ উপস্থিতি |
২০১১ | টেল মি ও খুদা | সুসান ডি মেলো | |
২০১২ | বারবারীক - শেষ ধানি মাহায়োদ্ধা | হিদিম্বা |
১৯৭৩- গেহেরি চাল - অমিতাভ বচ্চন ও জিতেন্দ্র
১৯৭৫- শোলে - ধর্মেন্দ্র, সঞ্জীব কুমার, জয়া ভাদুড়ি, আমজাদ খান ও অমিতাভ বচ্চন
১৯৮১- নসিব - অমিতাভ বচ্চন, ঋষি কাপুর, আমজাদ খান
১৯৮২ - সত্তা পে সাত্তা - অমিতাভ বচ্চন, শক্তি কাপুর, আমজাদ খান
১৯৮৩- নাস্তিক - অমিতাভ বচ্চন
১৯৮৩ - আন্ধা কানুন - অমিতাভ বচ্চন, হেমা মালিনী, রজনীকান্ত
২০২০ - শিমলা মিরচি - হেমা মালিনী, রাজকুমার রাও, রাকুল প্রীত সিং
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "rediff.com: A dream called Hema Malini"। In.rediff.com। ১৬ অক্টোবর ১৯৫৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-১৪।
- ↑ "Dharmendra or "Dilawar Khan?""। Milli Gazete। ১৬–৩০ জুন ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ Amir, Insiya (জুন ২১, ২০০৯)। "Convert to Islam, bypass bigamy laws?"। The Times of India। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "'Dharmendra embraced Islam to marry Hema'"। Indian Express। ১৯ এপ্রিল ২০০৪। ১৫ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১১।
- ↑ "Hemaji @ Hemamalini, ever dream girl turned 65"। cinemanewstoday.com। ১৭ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৪।
- ↑ India Today International। Living Media International Limited। ২০০৪। পৃষ্ঠা 23.
"I'm a pukka Iyengar Brahmin..."। - ↑ "My dad opposed my marriage: Hema"। IBNLive.com। ৮ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ Hema Malini. Living Media International Limited 2004 p23.
- ↑ My Fun Days. Telegraph India 29 June 2011. Accessed 6 July 2011.
- ↑ Detailed Profile, Smt. Hema Malini, Members of Parliament (Rajya Sabha), Who's Who, Government: National Portal of India. India.gov.in Accessed 6 July 2011.
- ↑ "Hema Malini Drives into Mathura Nagari"। New Indian Express। ২ এপ্রিল ২০১৪। ৮ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৬।
- ↑ "From Hema Malini-Dharmendra, Rekha-Vinod Mehra to Aamir Khan-Reena: Bollywood's most controversial and secret marriages"। Daily News and Analysis। ৩ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৬।
- ↑ "Hema Malini-Biography, Career, Awards and Net Worth"। ২০ মে ২০১৭।
- ↑ Hits and misses. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে Screenindia.com Accessed 24 September 2009
- ↑ ক খ গ Hema Malini: Bollywood's dreamgirl. Rediff.com 25 October 2002. Accessed 1 July 2011
- ↑ Revisiting Seeta Aur Geeta. Rediff.com 25 May 2009 Accessed July 2011
- ↑ The Winners – 1972– The 51st Filmfare Awards. The Times of India. 14 June 2011.
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে হেমা মালিনী (ইংরেজি)