হেবা সাদিয়া

ফিলিস্তিন ফুটবল রেফারি

হেবা সাদিয়া (আরবি: هبه سعدية, প্রতিবর্ণীকৃত: Hība Saʿadiyya) (হিবা সাদিয়া নামেও পরিচিত) একজন ফিলিস্তিনি নারী ফুটবল রেফারি ও শারিরীক শিক্ষার প্রশিক্ষক।[১] দামেস্কের শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণকারী হেবা একই শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। কর্মজীবনে তিনি ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ পরিচালনা শুরু করেন। তিনি নারীদের এএফসি এশিয়ান কাপ এবং ২০২০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক২০২৩ ফিফা মহিলা বিশ্বকাপ ম্যাচ পরিচালনায় প্রধান রেফারি অথবা সহকারী রেফারি হয়েছেন। তিনি ফিফার যেকোন বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার চূড়ান্তপর্বে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্ব করা প্রথম রেফারি।[২][১]

হেবা সাদিয়া
هبه سعدية
জন্ম (1989-01-03) ৩ জানুয়ারি ১৯৮৯ (বয়স ৩৫)
ইয়ারমুক শিবির, দামেস্ক, সিরিয়া
জাতীয়তাফিলিস্তিনি
পেশাফুটবল রেফারি
উল্লেখযোগ্য কর্ম
২০২৩ ফিফা মহিলা বিশ্বকাপের রেফারি

প্রাথমিক জীবনী সম্পাদনা

হেবা সাদিয়া সিরিয়ার দামেস্কের একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী ইয়ারমুক শিবির সম্প্রদায়ের ফিলিস্তিনি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[৩]

তিনি ফিলিস্তিন জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলার ইচ্ছা থেকে ফুটবল খেলতে শুরু করেন,[২][৪] এবং দামেস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা নিয়ে পড়াশোনা করেন।[৪]

কর্মজীবন সম্পাদনা

তিনি পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে এগিয়ে যেতে না পারার পর একজন রেফারি হন। সাদিয়া নারীবিহীন একদল রেফারিকে দেখে রেফারি হওয়া কথা চিন্তা করেন। রেফারিদের গ্রুপে নারী রেফারির প্রয়োজন আছে কিনা জিজ্ঞাসা করার পরে তারা তাকে রেফারি হিসেবে গ্রুপে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি সিরিয়ায় লীগ পরিচালনায় চতুর্থ কর্মকর্তা ছিলেন।[৪] তিনি ২০১২ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে পালিয়ে মালয়েশিয়া এবং পরবর্তীতে ২০১৬ সালে সপরিবারে সুইডেনের স্টকহোমে চলে যান,[২][৪] তিনি সুইডেনে মহিলাদের ডিভিশন ১ লীগ ও পুরুষদের দ্বিতীয় বিভাগ লিগের ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন। স্টকহোমে তিনি ফিফার আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনার রেফারি লাইসেন্স পেয়েছেন এবং ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা শুরু করেন।[১][৪]

তিনি যে দেশগুলোর ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনগুলোতে কাজ করেছেন সেগুলোর পাশাপাশি তিনি ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএফএ) এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) সাথেও প্রশিক্ষণ নেন যেন রেফারি হিসাবে তার দক্ষতা অর্জনের জন্য শারিরীক সক্ষমতা তৈরি করা যায়। পিএফএ এবং এএফসি ফিফার কাছে তার প্রশিক্ষণের নিয়মিত প্রতিবেদন দিয়েছে। ফিফা তাদের পর্যবেক্ষণ ও প্রতিক্রিয়া জানাতো। সে অনুযায়ী পরিশ্রম করে সাদিয়া নিজেকে ভাল রেফারি হিসেবে তৈরি করেছেন।[৪]

নারীদের এএফসি এশিয়ান কাপ এবং ২০২০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের পাশাপাশি মরিস রেভেলো টুর্নামেন্ট এবং ২০২৩ এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপে পুরুষদের আন্তর্জাতিক ফুটবলে দায়িত্ব পালন করার পরে সাদিয়াকে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ২০২৩ ফিফা মহিলা বিশ্বকাপে লিঙ্গভেদে প্রথম ফিলিস্তিনি হিসাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল।[২][৪] তিনি প্রতিযোগিতায় সহকারী রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরমাধ্যমে ফিফার যেকোন বিশ্বকাপের চুড়ান্তপর্বে প্রথম ফিলিস্তিনি রেফারি হিসেবে ম্যাচ পরিচালনায় অংশ নেন।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. কেডি, প্যাট্রিক (২০২৩-০৭-১৮)। "'So proud': Heba Saadieh, the first Palestinian World Cup referee"আল জাজিরা (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৮-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৩ 
  2. মিলার, নিক (১৯ জুলাই ২০২৩)। "The stars and storylines that could define the Women's World Cup"দ্য এথলেটিক (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ জুলাই ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০২৩ 
  3. "Saadia to become first Palestinian referee at FIFA Women's World Cup"ইনসাইড দ্য গেম (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ জানুয়ারি ২০২৩। ২১ মে ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০২৩ 
  4. সাহা রয়, শিলার্জে (১৩ জানুয়ারি ২০২৩)। "Trailblazer: Palestine's Heba Saadieh is creating history and more"ফিফা। ১৮ মে ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০২৩