হাবিবুর রহমান (সিলেটের রাজনীতিবিদ)

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান (৯ অক্টোবর ১৯২৭–১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৪) যিনি কমরেড পীর হাবিবুর রহমান নামে পরিচিত ছিলেন। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক যিনি সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৫৭ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্যও ছিলেন।[১][২][৩]

কমরেড

পীর হাবিবুর রহমান
মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান.jpg
সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
৭ মে ১৯৮৬ – ৩ মার্চ ১৯৮৮
পূর্বসূরীদেওয়ান সামসুল আবেদিন
উত্তরসূরীআবদুল মুকিত খান
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মমোহাম্মদ হাবিবুর রহমান
৯ অক্টোবর ১৯২৭
সিলেট জেলা
মৃত্যু১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৪
রাজনৈতিক দল১৫ দলীয় জোট

প্রাথমিক জীবনসম্পাদনা

পীর হাবিবুর রহমান ৯ অক্টোবর ১৯২৭ সালে সিলেটের লালাবাজার ইউনিয়নের বাগেরখলা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন।[২]

রাজনৈতিক জীবনসম্পাদনা

হাবিবুর রহমান প্রথম রাজনৈতিক জীবনে আবুল হাশিমের প্রভাবে তিনি মুসলিম লীগের সাথে যুক্ত হন। ১৯৪৮ সালে তিনি সিলেটের নানকার আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৬ নভেম্বর ১৯৫১ সালে (১৯৫২ সালে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পূর্বে) সিলেট জেলা ছাত্র ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী মুসলীম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।[২]

১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগ থেকে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) প্রতিষ্ঠাকালে তিনি যুক্ত হয়ে একই সালে সিলেট সদরের একটি আসনের উপনির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন।[২]

১৯৬৭ সালে ন্যাপ বিভক্ত হলে তিনি ন্যাপ মোজফ্ফরে অবস্থান নেন। ১৯৬৭ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ন্যাপের যুগ্ম সম্পাদক এবং পরে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অবিভক্ত পাকিস্তান ন্যাপের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও ছিলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৬৮ সালে ন্যাপ মোজফ্ফরের হয়ে আওয়ামী লীগে যুক্ত হয়ে তিনি আইয়ুব বিরোধী মোর্চা গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।[২]

১৩ ডিসেম্বর ১৯৬৮ সালে তিনি জুলুম প্রতিরোধ দিবসের কর্মসূচী ঘোষণা করেন। ১৯৭৭ সালে ন্যাপ মোজাফ্ফরের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে গণতন্ত্রী পার্টি গঠিত হলে তিনি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছিলেন এবং সর্বশেষ কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি ছিলেন। ৬ দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্দোলন সহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।[২]

হাবিবুর ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৫ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে সিলেট-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।[৪][৫] ২০০১ সাল থেকে তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন।[২]

মৃত্যুসম্পাদনা

পীর হাবিবুর রহমান ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে সিলেটে মৃত্যুবরণ করেন। সিলেটের লালা বাজার ইউনিয়ন এর বাগেরখলা গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়।[১][২]

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "'একটি' নামে ডাকো আমায়"দৈনিক প্রথম আলো। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  2. শফিক আহমদ শফি (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১)। "শোষণ মুক্তি আন্দোলনের প্রাণপুরুষ"দৈনিক সিলেটের ডাক। ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  3. মাহবুবুর রহমান (৬ ডিসেম্বর ২০১৯)। "আটচল্লিশ বছর আগে, এই ডিসেম্বরে"দৈনিক প্রথম আলো। ৬ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০২২ 
  4. "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. Nohlen, D, Grotz, F & Hartmann, C (2001) Elections in Asia: A data handbook, Volume I, p536 ISBN 019924958