হানা আরেন্ট
হানা আরেন্ট (জার্মান: Hannah Arendt; ১৪ অক্টোবর, ১৯০৬, লিন্ডেন, জার্মান সাম্রাজ্য – ৪ ডিসেম্বর, ১৯৭৫, নিউ ইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র) বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক-দর্শন-বিদদের একজন[১১] যদিও তিনি নিজে নিজেকে দার্শনিক হিসেবে পরিচয় দিতেন না, কারণ তার মতে দর্শন ব্যক্তি পুরুষ নিয়ে চিন্তিত যেখানে তিনি চিন্তিত সামষ্টিক মানুষ নিয়ে যাদের মধ্যে নারীও আছে এবং যারা বিশ্বজগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো ভাবুক সত্তা নয় বরং জগতের মধ্যে সমষ্টিগতভাবে প্রোথিত।[১২] তার জন্ম এক জার্মান-ইহুদি পরিবারে, কিন্তু ১৯৩৩ সালে হিটলার ক্ষমতায় আসার পর জার্মানি ত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং পরবর্তী আট বছর প্যারিসে বাস করেন ও বিভিন্ন ইহুদি শরণার্থী সংগঠনের জন্য কাজ করেন। ১৯৪১ সালে ফ্রান্স থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হিসেবে যান এবং শীঘ্রই নিউ ইয়র্ক সিটি'র একটি কর্মচঞ্চল বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠীর সাথে অঙ্গীভূত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমীয় পদে কাজ করেছিলেন।
হানা আরেন্ট | |
---|---|
জন্ম | জোহানা কোহেন আরেন্ডেট ১৪ অক্টোবর ১৯০৬ |
মৃত্যু | ৪ ডিসেম্বর ১৯৭৫ | (বয়স ৬৯)
সমাধি | বার্ড কলেজ, নিউ ইয়র্ক,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
অন্যান্য নাম | হানা আরেন্ট ব্লুচার |
নাগরিকত্ব |
|
দাম্পত্য সঙ্গী | গ্যান্থার স্টার্ন (বি. ১৯২৯; বিচ্ছেদ. ১৯৩৭) হেনরিখ ব্লুচার (বি. ১৯৪০; মৃ. ১৯৭০) |
পিতা-মাতা |
|
আত্মীয় | ম্যাক্স আরেন্ডেট (দাদু) হেনরিট আরেন্ডেট(কাকিমা) |
দার্শনিক জীবন | |
শিক্ষা | বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয় মারবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় ফ্রাইবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইচডি, ১৯২৯) |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | তালিকা
|
যুগ | বিশ শতকের দর্শন |
অঞ্চল | পাশ্চাত্য দর্শন |
ধারা | |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | Karl Jaspers[৫] |
প্রধান আগ্রহ | রাজনৈতিক তত্ত্ব, সর্বগ্রাসীবাদ, ইতিহাসের দর্শন, আধুনিকতা তত্ত্ব |
উল্লেখযোগ্য অবদান | তালিকা
|
ওয়েবসাইট | hac |
স্বাক্ষর | |
আরেন্ট অ্যাকাডেমিয়ার ভিতরে এবং বাইরে সবচেয়ে বেশি পরিচিত প্রধানত দুইটি বইয়ের কারণে: The Origins of Totalitarianism (১৯৫১) এবং The Human Condition (১৯৫৮)। টোটালিটারিয়ানিজম-এ তিনি বিগত নাৎসি ও স্টালিনীয় শাসন নিয়ে গবেষণাধর্মী আলোচনা করেছেন যা সমগ্রতাবাদী (totalitarian) শাসনের প্রকৃতি ও উদ্ভব নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল। কন্ডিশন বইটি ছিল মানুষের "ভিতা আক্তিভা"-র ("কর্মমুখর জীবন") মৌলিক ধরনগুলো নিয়ে একটি মৌলিক দার্শনিক গবেষণা। এছাড়া তিনি বিপ্লব, স্বাধীনতা, কর্তৃপক্ষ, প্রথা ও আধুনিক যুগ নিয়ে অনেক প্রবন্ধ লিখেছেন। তার সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক বই The Life of the Mind এর কেবল প্রথম দুই খণ্ড মৃত্যুর আগে শেষ করে যেতে পেরেছিলেন। বইটির বিষয় ছিল "ভিতা কন্তেমপ্লাতিভা" ("চিন্তামুখর জীবন")। কন্ডিশন এ যেমন কর্মমুখর জীবনের ক্যাটেগরি হিসেবে লেবার, ওয়ার্ক, ও অ্যাকশন উল্লেখ করেছিলেন তেমনি লাইফ অফ দ্য মাইন্ড এ চিন্তামুখর জীবনের মৌলিকতম তিনটি শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন থিংকিং, উইলিং, ও জাজিং।[১১]
আরেন্টের চিন্তাধারার কেন্দ্রীয় বিষয় ছিল মানুষের রাজনৈতিক জীবন। তার কাজকে এক কথায় প্রকাশ করতে হলে বলতে হয় সেটা মানুষের রাজনৈতিক অস্তিত্ব তাত্ত্বিকভাবে পুনর্নির্মাণের একটি প্রচেষ্টা। এবং এই কাজটি তিনি করেছেন পুরোপুরি রূপতাত্ত্বিকভাবে, যা তার উপর হাইডেগারের প্রভাবকে স্মরণ করিয়ে দেয়; তিনি হাইডেগারের ছাত্রী এবং ১৯২৫ সালে এক বছরের জন্য প্রেমিকা ছিলেন। আরেন্ট রাজনৈতিক দর্শনের সব তত্ত্ব বা আদর্শ এড়িয়ে গিয়ে একেবারে গোঁড়া থেকে মানুষের বিশ্বমাঝে-রাজনৈতিকভাবে-বিরাজনের রূপ বিশ্লেষণের মাধ্যমে তার গবেষণা শুরু করেন। তিনি দেখার চেষ্টা করেন মানুষ কীভাবে একটি পাবলিক গণতান্ত্রিক জীবন যাপন করতে পারে, কোন জিনিসগুলো সেই জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ, ব্যক্তিক ও সামষ্টিক জীবনের মধ্যে সংঘর্ষ কি কি, এবং উৎপাদন ও ভোগের সুতীব্র চক্র কীভাবে চলে।[১৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Allen 1982।
- ↑ Bowen-Moore 1989, p. 119।
- ↑ Kristeva 2001, p. 48।
- ↑ Lovett 2018।
- ↑ Grunenberg 2017, p. 3।
- ↑ Yar ২০১৮।
- ↑ Fry ২০০৯।
- ↑ d'Entreves ২০১৪।
- ↑ Berkowitz ২০১২।
- ↑ Lefort ২০০২।
- ↑ ক খ স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফিতে Maurizio Passerin d'Entreves কর্তৃক "Hannah Arendt" ভুক্তি
- ↑ Arendt, Hannah. The Human Condition. 2nd ed. Chicago: University of Chicago, 1998.
- ↑ "Hannah Arendt" — Majid Yar, ইন্টারনেট এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফি, আইএসএসএন ২১৬১-০০০২, ২৮ নভেম্বর ২০২৪।