হরেন্দ্র কুমার মুখার্জি
হরেন্দ্র কুমার মুখার্জি বা হরেন্দ্র কুমার মুখোপাধ্যায় (৩ অক্টোবর, ১৮৮৭- ৭ আগস্ট, ১৯৫৬) যিনি এইচ সি মুখার্জি নামেও পরিচিত, ছিলেন ভারত ভাগ হওয়ার পূর্বে ভারতীয় সংবিধান-এর খসড়া রচনার জন্যে ভারতীয় সংবিধান রচনা পর্ষদ-এর তিনি ছিলেন সহ-সভাপতি; এবং ভারত ও পাকিস্তান ভাগ হয়ে ভারত প্রজাতন্ত্র হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের প্রথম রাজ্যপাল।[১][২][৩]
হরেন্দ্র কুমার মুখার্জি | |
---|---|
তৃতীয় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল | |
কাজের মেয়াদ ১ নভেম্বর ১৯৫১ – ৮ আগস্ট ১৯৫৬ | |
পূর্বসূরী | কৈলাস নাথ কাটজু |
উত্তরসূরী | ফণীভূষণ চক্রবর্তী |
সহ-সভাপতি ভারতীয় সংবিধান রচনা পর্ষদ | |
রাষ্ট্রপতি | রাজেন্দ্র প্রসাদ |
পূর্বসূরী | Office Established |
সভাপতি সংখ্যালঘু উপ-সমিতি | |
নেতা | বল্লভভাই পটেল |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ৩ অক্টোবর ১৮৮৭ |
মৃত্যু | ৭ আগস্ট ১৯৫৬ | (বয়স ৬৮–৬৯)
হরেন্দ্র কুমার মুখার্জি একজন শিক্ষাসংস্কারক ছিলেন, বাংলার বিশিষ্ট খ্রিস্টান নেতা, এবং সংখ্যালঘু অধিকার কমিটির সভাপতি এবং সংবিধান রচনা পর্ষদের রাজ্য সংবিধান কমিটি--ভারতীয় সংবিধানের খসড়া রচনার জন্যে পরোক্ষভাবে নির্বাচিত, সেই সঙ্গে বর্তমান পাকিস্তান-এর অঙ্গরাজ্য এবং বাংলাদেশ (তখনকার পূর্ব পাকিস্তান)--সংবিধান শুধুমাত্র মুসলমান এবং শিখদের ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিসেবে মান্যতা দেয়—ভারত প্রজাতন্ত্র হওয়ার পর, ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে এই একই সংবিধান রচনা পর্ষদ প্রথম ভারতের সংসদ হিসেবে পরিগণিত হয়।[২][৩][৪][৫][৬][৭][৮]
জীবনপঞ্জি
সম্পাদনাহরেন্দ্র কুমার মুখার্জি বঙ্গদেশের কলকাতায় সম্ভ্রান্ত বাঙালি ক্রিশ্চিয়ান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম লালচাঁদ মুখোপাধ্যায়। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার রিপন কলেজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে রিপন কলেজ থেকে এফ.এ এবং ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে ইংরাজীতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে এম.এ পাশ করেন। এরপর সিটি কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষকতা ও বরিশাল রাজচন্দ্র কলেজ ও কলকাতার সিটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইংরাজীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারতীয় হিসাবে পিএইচডি লাভ করেন। [৯] তিনি একজন মানবহিতৈষী এবং শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন।[১০]
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বহু পদ অলংকৃত করেছেন--অধ্যাপক হিসেবে, সম্পাদক, স্নাতকোত্তর শিক্ষক সংসদ, কলাবিভাগ, কলেজ পরিদর্শক, ১৯৩৬ থেকে ১৯৪০ পর্যন্ত ইংরেজি প্রফেসর, এবং ইংরেজি বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। তিনি পরবর্তীকালে 'বঙ্গীয় বিধান পরিষদ'-এ মনোনীত হন এবং 'বঙ্গীয় বিধানসভা'য় নির্বাচিত হন।[৮][১১][১২]
যখন তিনি সংবিধান রচনা পর্ষদের সহ-সভাপতি ছিলেন এবং সংখ্যালঘু সাব-কমিটি ও প্রাদেশিক সংবিধান কমিটির সভাপতি ছিলেন, তিনি সংখ্যালঘুদের উন্নতিসাধনে রাজনীতি সমেত সব ক্ষেত্রে সংরক্ষণের পরামর্শ দিতে শুরু করেন। ভারত বিভাগের সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার মনোভাব বদল করেন এবং এটা সংখ্যালঘুদের ভাষা ও সংস্কৃতির রক্ষণের সংস্থানের দিকে সীমাবদ্ধ রাখেন--এই পর্যায়ে, এই অবস্থান মুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিশদায়িত করেন।[২][৩][৪][৫][৭][১৩][১৪][১৫]
সংবিধান রচনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার পর, ড. মুখার্জি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল নিযুক্ত হন, ১ নভেম্বর ১৯৫১ থেকে ৭ অগস্ট ১৯৫৬ পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন। বঙ্গের রাজ্যপাল থাকাকালীন সময়ে, ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তিনি 'দেশবন্ধু মেমোরিয়াল সোসাইটি'র সভাপতি হিসেবে কাজ করেছেন। শিক্ষকসুলভ অনাড়ম্বর জীবনযাত্রার জন্য রাজ্যপাল থাকাকালে জনসাধারণের শ্রদ্ধাভাজন হন। [৯] ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ৭ অগস্ট কলকাতা কার্যালয়ে তার দেহাবসান হয়।[১৬]
খ্রিস্টান নেতা
সম্পাদনাহরেন্দ্র কুমার মুখার্জি বঙ্গে খ্রিস্টানদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, এবং জাতীয় রাজনীতিতে তার অংশগ্রহণের পর, তিনি 'সর্ব ভারতীয় খ্রিস্টান পর্ষদে'র সভাপতি নির্বাচিত হন, তিনি অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান ছাড়াও সর্বভারতীয় খ্রিস্টানদের প্রতিনিধি ছিলেন।[১৭][১৮]
তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস-এর সদস্যও ছিলেন এবং বঙ্গ খ্রিস্টান গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন।[১৯] He confessed to his community as:
We have to demonstrate by every word we utter and by every act we perform that the professing of a different religious faith has not tended in the least to make us less Indian in our outlook than our non-Christian brethren, that we are prepared to play our part and to shoulder our share of the responsibility in every kind of work undertaken for the benefit of our country as a whole.[১৯]
[৮] তার গোষ্ঠীর কাছে তার স্বীকারোক্তি:
আমাদের প্রত্যেকটা শব্দ উচ্চারণের মধ্যে দিয়ে প্রদর্শন করতে হবে এবং প্রত্যেকটা কাজের দ্বারা আমরা সম্পাদন করি, বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসে চালিত হওয়া, যেন আমাদের ধারণা না-হয় যে আমাদের অ-খ্রিস্টান ভাইদের চেয়ে আমরা কম ভারতীয়, সাকুল্যে দেশের কল্যাণে যেকোনো রকমের কাজের ভার নিয়ে আমাদের জন্যে বরাদ্দ কাজের দায়িত্ব কাঁধে নিতে আমরা প্রস্তুত.উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগের ক্ষেত্রে</ref>
ট্যাগ যোগ করা হয়নি
আরো দেখুন
সম্পাদনা- সংবিধান রচনা পর্ষদ - ভারভ
- সংখ্যালঘু সাব-কমিটি - এইচ সি মুখার্জি
- সংবিধান রচনা পর্ষদ : দ্য মাইনরিটি কমিউনিটি চেয়ারম্যান মি হরেন্দ্র কুমার মুখার্জি সকল খ্রিস্টানের প্রতিনিধি
- এ মাইন্ড টু ওয়র্ক
- ডেটাবেস ইন দ্য কন্সটিটুয়েন্ট অ্যাসমব্লি
- বুদ্ধিজম অ্যান্ড দ্য পার্লামেন্ট অফ রিলিজিয়ন্স
তথ্যসূত্রাদি
সম্পাদনা- ↑ B. Schemmel (২০০৮)। "States after 1947"। Rulers। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০০৮।
- ↑ ক খ গ "What was the Constituent Assembly of India?"। rishabhdara.com। ৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১২।
The Vice President of the Constituent Assembly was Professor Harendra Coomar Mookerjee, former Vice-Chancellor of Calcutta University and a prominent Christian from Bengal who also served as the Chairman of the Minorities Committee of the Constituent Assembly. He was appointed Governor of West Bengal after India became a republic.
- ↑ ক খ গ "Drafting of Indian Constitution – The beginning"। gktoday.in। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১২।
- ↑ ক খ "The Constitution-framers India forgot"। NY Times Co.। ৬ নভেম্বর ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১২।
Represented Bengal. Was vice-president of the assembly and member of the minority rights sub-committee and provincial constitution committee. Went on to become governor of Bengal.
- ↑ ক খ "Forgotten fathers of the Constitution"। zeenews.india.com। ২৬ জানুয়ারি ২০১০। ২৯ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১২।
H C Mookerjee: A representative of Bengal apart from being the former Vice-Chancellor of Calcutta University and a prominent Christian
- ↑ Datta-Ray, Sunanda K. (১২ জুন ২০১০)। "Threats against RI atheist teen being investigated"। Calcutta, India: telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১২।
he sole exception for a while was West Bengal's devoutly Christian rajyapal, Harendra Coomar Mookerjee, whose attire occasioned merriment in the school where no one followed his Biblical references.
- ↑ ক খ "Reservations for Muslims"। drthchowdary.net। ৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১২।
H.C.Mookerjee, speaking on behalf of the Christian community
- ↑ ক খ গ "The Constituent Assembly"। scribd.com। H.C. Mookherjee(1887–1956) – Reputed author, educationalist, Congress leader. Member of All India Christian Council and Bengal Lesislative Assembly। সংগ্রহের তারিখ 27 May 2012। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ ক খ সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ৮৫৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ NIC, Darjeeling district centre। "Step Aside"। NIC, Darjeeling district centre। ৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০০৮।
- ↑ "A study of the Department of English University of Calcutta"। uvm.edu। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১২।
Prof. Harendra Coomar Mookerjee served the University in many capacities – as Lecturer, Secretory, Council of Post-Graduate Teaching in Arts, Inspector of Colleges, and University Professor of English (1936–40).
- ↑ Chatterj, Joya (২০০৭)। The Spoils of Partition: Bengal and India, 1947–1967। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 72। আইএসবিএন 0521875366। আইএসবিএন ৯৭৮০৫২১৮৭৫৩৬৩।
- ↑ Weiner, Myron; Ashutosh Varshney; Gabriel Abraham Almond (২০০১)। India and the Politics of Developing Countries: Essays In Memory Of Myron Weiner। SAGE। পৃষ্ঠা 134। আইএসবিএন 0761932879। আইএসবিএন ৯৭৮০৭৬১৯৩২৮৭১।
- ↑ Nigel, South (১৯৮৮)। Policing for Profit: The Private Security Sector। SAGE। পৃষ্ঠা 134। আইএসবিএন 0803981759। আইএসবিএন ৯৭৮০৮০৩৯৮১৭৫১।
- ↑ Hasan, Zoya; Eswaran Sridharan; R. Sudarshan (২০০৪)। India's Living Constitution: Ideas, Practices, Controversies। Orient Blackswan। পৃষ্ঠা 213–217। আইএসবিএন 8178240874। আইএসবিএন ৯৭৮৮১৭৮২৪০৮৭৯।
- ↑ গুগল বইয়ে Land and people of Indian states and union territories, পৃ. 514,
- ↑ Stanley, Brian; Alaine M. Low (২০০৩)। Missions, Nationalism, and the End of Empire। Wm. B. Eerdmans Publishing। পৃষ্ঠা 129। আইএসবিএন 0802821162। আইএসবিএন ৯৭৮০৮০২৮২১১৬৪।
- ↑ "Constituent Assembly:-"। lexvidhi.com। ১৪ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১২।
The Chairman of the Minorities Committee was Harendra Coomar Mookerjee, a distinguished Christian who represented all Christians other than Anglo-Indians
- ↑ ক খ "Happy Gestures"। hindubooks.org। ২৯ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১২।