স্যামুয়েল বেল্লামি

ইংরেজ জলদস্যু

ক্যাপ্টেন স্যামুয়েল বেল্লামি (আনু. ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৬৮৯ – ২৬ এপ্রিল ১৭১৭) ছিলেন ১৮-শতকের একজন ইংরেজ জলদস্যু। তিনি ব্ল্যাক স্যাম বেল্লামি নামে অধিক পরিচিত। যদিও তার জলদস্যু জীবন এক বছরেরও কম সময় স্থায়ী ছিল, তারপরও তিনি ও তার ক্রুরা কমপক্ষে ৫৩টি জাহাজ লুট করেন। ২৮ বছর বয়সে তার মৃত্যুর পূর্বে তিনি ছিলেন ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী জলদস্যু। কেপ কোডের লোককাহিনীতে তাকে ব্ল্যাক স্যাম বলা হয় কারণ তিনি তার লম্বা চুল পিছনে নেওয়ার জন্য এক ধরনের ফ্যাশানেবল পাউডার ও চুলের ব্যান্ড ব্যবহার করতেন। বেল্লামি সবসময় তার লুট করা জাহাজের বন্দিদের ক্ষমা করে দিতেন এবং জাহাজের লোকদের কোন প্রকার ক্ষতি করতেন না। এই চরিত্রের কারণে তিনি প্রিন্স অফ পাইরেট খেতাব অর্জন করেন। তিনি নিজেকে রবিনহুডের সাথে তুলনা করতেন এবং তার ক্রুরা নিজেদেরকে রবিনহুডের লোক বলে পরিচয় দিত।

স্যামুয়েল বেল্লামি
— জলদস্যু —
ওয়াইদাহর ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা রৌপ্য। ফোর্বস ম্যাগাজিন "টপ-আর্নিং পাইরেটস" এর তালিকায় বেলামিকে #১ এ স্থান দিয়েছে। [১]
ডাকনাম"ব্ল্যাক স্যাম" বেল্লামি
"প্রিন্স অফ পাইরেট"
"ব্ল্যাক বেল্লামি"
ধরনজলদস্যু
জন্মআনু. (১৬৮৯-০২-২৩)২৩ ফেব্রুয়ারি ১৬৮৯
জন্মস্থানইংল্যান্ড হিটিসলিগ, ডেভন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৬ এপ্রিল ১৭১৭
মৃত্যুর স্থানওয়েলফ্লিট, মেসাচুয়্যাটস
আনুগত্যনাই
কার্যকাল১৭১৬ – ২৬ এপ্রিল ১৭১৭
স্থানজলদস্যু বহরের কমান্ডা
অপারেশনের বেজব্লানকো ইজলেট, বি.ভি.আই (পরবর্তীতে “বেল্লামি কে” নামকরণ করা হয়), ক্যারিবীয় সাগর
কমান্ডপোস্টেলিয়ন, ম্যারি অ্যানি, সুলতানা, হুয়াইদা গ্যালি

জীবনী সম্পাদনা

বেল্লামি ১৬৮৯ সালে ইংল্যান্ডের ডেভনসায়ারের হিটিসলিগে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম স্টিফেন ও মাতার নাম এলিজাবেথ।[২] সম্ভবত তিনি ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন। তার মা এলিজাবেথ সন্তান জন্মের সময় মৃত্যুবরণ করেন ও ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৬৮৯ সালে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। বেল্লামি যুবক বয়সে নাবিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং কেপ কোডে যাত্রা করেন। স্থানীয় লোককাহীনি অনুযায়ী সেখানে তিনি মারিয়া হেলেট (উইচ অফ ওয়েলফ্লিট) নামে একজন নারীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পরেন।[৩]

তিনি শীঘ্রই কেপ কোড ত্যাগ করেন। তিনি ও তার বন্ধু পালগ্রেভস উইলিয়ামের (পালসগ্রেভ, পলগ্রেভ, পলগ্রেভস ও পলসগ্রেভ নামেও লিখা হয়।) সাথে ফ্লোরিডা উপকূলে ডুবে যাওয়া একটি স্প্যানীয় বহর থেকে মূল্যবান সাম্রগী সংগ্রহ করতে যাত্রা করেন। এই দুই সমুদ্র অভিযাত্রিক অবশ্য কিছু সাফল্য অর্জন করেন। দুই অভিযাত্রিক পরবর্তীকালে জলদস্যুতা শুরু করেন ও জলদস্যু ক্যাপ্টেন বেঞ্জামিন হর্নিগোল্ডের ক্রু হিসেবে যোগদান করেন। বেঞ্জামিন মারিয়ানি নামে একটি জাহাজের কামান্ডার ছিলেন ও তার ফার্স্ট ম্যাট ছিলেন আরেক বিখ্যাত জলদস্যু এডওয়ার্ড “ব্ল্যাকবিয়ার্ড” টীচ

১৭১৬ সালের বসন্তে ক্রুরা হর্নিগোল্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তিনি ইংল্যান্ডের কোন জাহাজ আক্রমণ করত না। ক্রুরা এটা নিয়ে একটি ভোটগ্রহণ করেন ও তাতে প্রায় অধিকাংশ ক্রুরাই সকল জাহাজ আক্রমণের পক্ষে মত দেন কিন্তু হর্নিগোল্ড এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করায় মারিয়ানির ক্যাপ্টেন পদ থেকে পদচ্যুত হন এবং তার অনুসারীদের নিয়ে ভেসেল ত্যাগ করেন। এডওয়ার্ড টীচ তখন এই সিদ্ধান্তের কথা জানত না। বাকী ৯০ জন জলদস্যু ক্রু বেল্লামিকে তাদের নতুন ক্যাপ্টেন হিসেবে নির্বাচিত করে।

সুলতানা গ্যালি নামে একটি জাহাজ আটকের পর, অন্যান্য ক্রুদের মতামতের ভিত্তিতে তার বন্ধু পালসগ্রেভ উইলিয়ামকে মারিয়ানির কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করেন এবং সুলতানাকে তার ফ্ল্যাগশিপ হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন। বেল্লামি ও তার ক্রুদের সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল হুয়াইদা গ্যালি আটক। ১৭১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি হুয়াইদা গ্যালি আটক করেন।

পদটীকা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

সাধারণ
নির্দিষ্ট
  1. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ForbesRank নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  2. Woodard, Colin (২০০৮)। The republic of pirates : being the true and surprising story of the Caribbean pirates and the man who brought them down (1st Harvest ed. সংস্করণ)। Orlando, Fla.: Harcourt, Inc.। পৃষ্ঠা 28–29। আইএসবিএন 978-0-15-603462-3। ৪ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১৩ 
  3. "The Whydah Museum"The Whydah Museum Official Site। Historic Shipwrecks, Inc.। ৮ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১২