সোনভদ্র জেলা
সোনভদ্র হল ভারতের উত্তরপ্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা। সোনভদ্র ভারতের একমাত্র জেলা যার সীমান্তে চারটি রাজ্য রয়েছে, সেগুলি হল পশ্চিমে মধ্যপ্রদেশ, দক্ষিণে ছত্তিশগড়, দক্ষিণ - পূর্বে ঝাড়খণ্ড এবং পূর্বে বিহার। এটি রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। এর উত্তর-পশ্চিমে মির্জাপুর জেলা, উত্তরে চান্দৌলি জেলা, উত্তর-পূর্বে বিহার রাজ্যের কাইমুর, রোহতাস জেলা, পূর্বে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গড়োয়া জেলা, দক্ষিণে ছত্তিশগড় রাজ্যের বলরামপুর জেলা এবং পশ্চিমে মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের সিংরৌলি জেলা। জেলাটি ৬৭৮৮ কিলোমিটার২ অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত এবং এর জনসংখ্যা ১,৮৬২,৫৫৯ (২০১১ আদমশুমারি), এখানকার জন ঘনত্ব প্রতি কিলোমিটার২-এ ২৭০ জন। জেলা সদর শহর রবার্টসগঞ্জ শহরে অবস্থিত। সোনভদ্র জেলা একটি শিল্প অঞ্চল এবং এখানে প্রচুর খনিজ যেমন বক্সাইট, চুনাপাথর, কয়লা, স্বর্ণ ইত্যাদি রয়েছে।
সোনভদ্র জেলা | |
---|---|
উত্তর প্রদেশের জেলা | |
উত্তরপ্রদেশে সোনভদ্র জেলার অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | উত্তরপ্রদেশ |
বিভাগ | মির্জাপুর |
স্থাপিত | ৪ঠা মার্চ ১৯৮৯ |
সদর দপ্তর | রবার্টসগঞ্জ |
তহশিল | রবার্টসগঞ্জ, ঘোড়াওয়াল, দুধী |
সরকার | |
• জেলা ম্যাজিস্ট্রেট | এস রাজালিঙ্গম (আইএএস) |
• লোকসভা কেন্দ্রগুলি | রবার্টসগঞ্জ |
• বিধানসভা কেন্দ্রগুলি | রবার্টসগঞ্জ, ঘোড়াওয়াল, ওবরা, দুধী |
আয়তন | |
• মোট | ৬,৭৮৮ বর্গকিমি (২,৬২১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১৮,৬২,৫৫৯ |
• জনঘনত্ব | ২৭০/বর্গকিমি (৭১০/বর্গমাইল) |
জনসংখ্যার উপাত্ত | |
• সাক্ষরতা | ৬৪% |
• যৌন অনুপাত | ৯১৮ |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০) |
প্রধান মহাসড়ক | এনএইচ ৭, এনএইচ ৭৫, এসএইচ ৫এ |
ওয়েবসাইট | http://sonbhadra.nic.in/ |
সোনভদ্রকে ‘ভারতের শক্তি রাজধানী’ বলা হয়, কারণ এখানে প্রচুর বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে।[১] সোনভদ্র বিন্ধ্য পর্বত এবং কাইমুর পর্বতের মধ্যে অবস্থিত এবং এর ভূসংস্থান ও প্রাকৃতিক পরিবেশে মুগ্ধ। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহ্রু সোনভদ্রকে ’ভারতের সুইজারল্যান্ড‘ বলে উল্লেখ করেছিলেন।[২]
২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ "সোনভদ্র"কে পূর্বাঞ্চলের পর্যটক আকর্ষণ কেন্দ্র হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং উত্তরপ্রদেশের পর্যটন বিভাগ দ্বারা একে আরও উন্নীত করা হয়েছে।
ইতিহাস
সম্পাদনাসোন নদীর উপত্যকায় প্রচুর গুহা ছিল, যেখানে প্রাচীন বাসিন্দাদের আদি বাসস্থান ছিল। এই অঞ্চলটি প্রাগৈতিহাসিক মানুষদের ক্রিয়াকলাপের কেন্দ্র ছিল এই অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে শিলা চিত্র (প্রাগৈতিহাসিক গুহা শিল্প) পাওয়া গেছে, যা থেকে এই ধারণাটি স্পষ্ট হয়েছে। রামায়ণ এবং মহাভারতের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে হুইয়েন এখানে সাংস্কৃতিক প্রতিচ্চিত্রের সন্ধান পেয়েছিলেন। জরাসন্ধ মহাভারতের অনেক শাসককে এখানে বন্দী করে রেখেছিল। বলা হয় যে 'ভরদের' এখানে বসতি ছিল, এর সাথে এখানে ৫ম শতাব্দী পর্যন্ত জেলার চেরো, সিয়ারিস এবং খারোয়ার সম্প্রদায় বসবাস করত। বিজয়গড় দুর্গে 'স্থানীয়' রাজাদের শাসন ছিল। এই জেলা ১১শ থেকে ১৩শ শতাব্দীর মধ্যে দ্বিতীয় কাশী হিসাবে বিখ্যাত ছিল। খ্রীষ্টপূর্ব নবম শতাব্দীতে ব্রহ্মদত্ত রাজবংশ, নাগ বংশ দ্বারা বিভক্ত ছিল। গুপ্ত সাম্রাজ্য শুরু হওয়ার আগে কুষাণ এবং নাগেরা এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। সপ্তম শতাব্দীর শেষার্ধে হর্ষবর্ধন মারা যাওয়ার পরে, এটি ১০২৫ সাল অবধি গুর্জর-প্রতিহারের নিয়ন্ত্রণে ছিল, এর পরে মাহমুদ গজনভি তাদের বিতাড়িত করে। এই অঞ্চলটি মোগল সম্রাটদের বিভিন্ন শাসকের প্রশাসনের অধীনে ছিল। কিছু দুর্গ যেমন আগোরি দুর্গ মদন শাহের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১৮শ শতকে, জেলাটি বেনারস রাজ্যের নারায়ণ শাসকদের নিয়ন্ত্রণে আসে, যারা জেলার বেশ কয়েকটি দুর্গ নির্মাণ বা দখল করেছিল। ১৭৭৫-এর পরের দশকে, ব্রিটিশ বেনারসের রাজাদের বেশিরভাগ অঞ্চল নিজেদের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল। ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণাধীন মির্জাপুরই বর্তমান মির্জাপুর এবং সোনভদ্র জেলা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়াও, বর্তমানের সোনভদ্র জেলা এবং রবার্টসগঞ্জ তহশিল এর আওতাধীন।
১৯৮৯ সালের ৪ঠা মার্চ, সোনভদ্র জেলাকে মির্জাপুর জেলা থেকে আলাদা করা হয়।[৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Catch News। "Sonbhadra Singrauli has all the ingredients Energy capital of India"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৬-০৭।
- ↑ Sudhir Kumar (জুলাই ৭, ২০১৮)। "Once hailed by PM Nehru for its beauty, 'India's Switzerland' lacks access to power, water, healthcare"। Hindustan Times। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-০৭।
Country's first Prime Minister Jawaharlal Nehru was so taken up by the natural beauty of the region that he once described Sonbhadra as the "Switzerland of India."
- ↑ Patrika। "Foundation day of Sonbhadra History"। ২০১৮-১০-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০৪।