সুন্দরবন মধু
সুন্দরবন মধু হল সুন্দরবন থেকে প্রাপ্ত এক প্রকার মধু, যা ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা এবং বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায় সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করা হয়। সুন্দরবন মধু ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে পশ্চিমবঙ্গের একটি নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য,[১] যা পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত সুন্দরবন থেকে সংগৃহীত ও উত্পাদিত হয়। মধুর রং সোনালি হয়, যদিও লাল বা গাঢ় বাদামী বর্ণের মধুও পাওয়া যায়। এই মধু মৌমাছিদের দ্বারা সুন্দরবনের বিভিন্ন উদ্ভিদের ফুল থেকে সংগৃহীত ও মৌচাকে সঞ্চিত হয়; মৌলেরা সুন্দরবনের গভীরে থাকা মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে।
সুন্দরবন মধু | |
---|---|
ভৌগোলিক নির্দেশক | |
বিকল্প নাম | পদ্ম মধু |
বর্ণনা | সুন্দরবন মধু হল পশ্চিমবঙ্গে সংগ্রহ করা বনজ মধু |
ধরন | বনজ মধু |
অঞ্চল | দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তর ২৪ পরগনা |
দেশ | ভারত |
নথিবদ্ধ | ২০২৪ |
প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট | ipindiaservices.gov.in |
সুন্দরবনের মধু সংগ্রহকারীরা প্রতি বছর মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে মধু সংগ্রহ করে, যখন মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। মধু সংগ্রহ একটি মৌসুমী কার্যকলাপ যা মার্চ মাসের শেষ থেকে জুন মাসের শুরুতে শুরু হয়। এই ঋতুতে, বেশিরভাগ ম্যানগ্রোভ ফুল মকরন্দে (মধু) পরিপূর্ণ থাকে। এটি মাঘ মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য মৌমাছিদের (এপিস ডরসাটা) আকৃষ্ট করে, সেখানে তাদের মধু সংগ্রহের জীবনকাল অতিবাহিত হয় এবং আষাঢ় মাসে (জুলাই) পূর্বের বাস্থানে ফিরে যায়। সুন্দরবনের বেশিরভাগ মৌচাক শিলা মৌমাছি দ্বারা তৈরি।
প্রকৃত অর্থে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বারা সুন্দরবন মধু সহ সুন্দরবনের বনজ দ্রব্যের ব্যাপক ব্যবহার ও শোষণ শুরু হয়। তৎকালীন সময়ে জীবন-জীবিকার জন্য বিপুল সংখ্যক মানুষকে মধু ও মোমের মতো গৌণ বনজ দ্রব্য সংগ্রহের ওপর নির্ভর করতে হতো। তারা ছোট ছোট দলে বনের গভীর থেকে মধু সংগ্রহ করত। এই গুরুত্বপূর্ণ বনজ দ্রব্যের ব্যবহার সম্পর্কিত প্রমাণ কবিতা ও গানের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়।
স্বীকৃতি
সম্পাদনাভৌগোলিক নির্দেশক
সম্পাদনাওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড ২০২১ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন মধুর জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই স্বত্বের আবেদন করে। ভারতের চেন্নাই শহরস্থিত দপ্তর থেকে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই ট্যাগ প্রদান করা হয়। প্রাপ্ত সনদপত্র অনুযায়ী, পণ্যটির নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন ২০৩১ খ্রিস্টাব্দের ১১ই জুলাই পর্যন্ত বৈধ থাকবে।[২] বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই স্বত্বের আবেদন করা হয়েছে।[৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "STATE WISE REGISTRATION DETAILS OF G.I APPLICATIONS" (পিডিএফ)। Intellectual Property India (ইংরেজি ভাষায়)। ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি ইন্ডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "Application details of the Sundarban Honey - Geographical Indications"। ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ইন্ডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "বাংলাদেশের যে ১৪টি পণ্যর জি আই সনদের জন্য আবেদন করা হয়েছে"। বিবিসি নিউজ বাংলা। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪।