সর্পগন্ধা

উদ্ভিদের প্রজাতি

সর্পগন্ধা তথা সর্পমূল একটি গুল্মজাতীয় ভেষজ উদ্ভিদ গাছ। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এর ব্যবহার আছে। এই গুল্মটির পাতা ছোট ছোট লম্বা ও পাতার ডগা সরু। ফুল প্রথম অবস্হায় সবুজ রঙের হলেও পাকলে বেগুনী-কালো রঙের হয়। মূলের রং ধূসর ও গন্ধ কাঁচা তেঁতুলের মত। সারা বছরই গাছে ফুল ফোটে ও ফল ধরে। চড়ক সংহিতাতেও এর ভেষজ ব্যবহার সম্পর্কে উল্লেখ পাওয়া যায়।

সর্পগন্ধা
Rauwolfia serpentina
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
বিভাগ: Magnoliophyta
শ্রেণী: Magnoliopsida
বর্গ: Gentianales
পরিবার: Apocynaceae
গণ: রাউভলফিয়
প্রজাতি: R. serpentina
দ্বিপদী নাম
রাউলভলফিয়া সার্পেন্টিনা'
(L.) Benth.
ex Kurz[১]

সর্পগন্ধার বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে রাউলভলফিয়া সার্পেন্টিনা (Rauwolfia serpentina)। রাউলভলফিয়া ১৬শ শতাব্দীর একজন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী এবং ভেষজ চিকিৎসক। তার নামেই ঊনিশ শতকে এই প্রজাতির নামাকরণ করা হয়।[২] একে সংস্কৃতে চন্দ্রিকা, হিন্দিতে ছোটা চাঁদ, উর্দুতে ধনবরুয়া ইত্যাদি বলা হয়।[৩]

উৎস সম্পাদনা

ভারতবর্ষের সর্বত্র জন্মে। বাংলাদেশেও জন্মে প্রচুর। কোথাও কোথাও চাষ করা হয়। ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে মাটি খুঁড়ে শেকড় তোলা হয়। শেকড়গুলি পানিতে ভালভাবে ধুয়ে রৌদ্রে শুকিয়ে নিয়ে তারপর ব্যবহার করা হয়। চীন দেশের পঞ্চাশটি মৌলিক ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে সর্পগন্ধা একটি।

বর্ণনা সম্পাদনা

একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ যা ঊর্ধ্বমুখী ঝোপ আকারে জন্মে। উচ্চতা ৩০ থেকে ৭৫ সেন্টিমিটার। প্রতি গ্রন্তিতে ৮ থেকে ২০ সেন্টিমিটার দীঘল উজ্জ্বল সবুজ বর্ণের পাতা জন্মে যা বৃত্তাকারে কান্ডের চারপাশে সাজানো থাকে তবে শীর্ষ ভাগে সরু হয়ে ছোট বৃন্তের মতো দেখায়। ফুল ফোটে গুচ্ছাকারে। ফুল ১.৫ সেন্টিমিটার লম্বা আর পাড়িগুলো সাদা বা হালকা গোলাপী, একটু বেগুনী ছোপ থাকে। পুষ্পবৃন্ত গাঢ় লাল বর্ণ হয়ে থাকে। ক্ষুদ্রাকৃতির ফল জন্মে যা পেকে গেলে কালচে দেখায়।

রাসায়নিক উপাদান সম্পাদনা

সর্পগন্ধার শিকড়ে বা মূলে ইনডোল এলকালয়েড রয়েছে যাতে রিসারপিন, ডিসারপিন, রেসিনামিন থাকে। অন্যান্যের মধ্যে আজমলীন, আজমালিসিন, সার্পেটাইন , অলিরোসিন ও আনস্যারচুরেটিড এলকোহল ইত্যাদি রয়েছে।

উপকারিতা সম্পাদনা

যে বাড়ীতে সর্পগন্ধা থাকে সে বাড়ীতে সাপ আসে না। গাছের মূল নানা প্রকার রোগের চিকিত্সায় লাগে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। সর্পগন্ধার মূল চুর্ণ করে অল্প পরিমাণ খেলে উত্তেজনা প্রশমিত হয় ও ঘুম ভাল হয়। দৈহিক দুবর্লতা ও মানসিক অবসাদজনিত রোগেও মূলের চূর্ণ ব্যবহৃত হয়।[৪] স্কিটসোফ্রিনিয়ার রোগীরা এতে উপকৃত হয়। সাধারণ জ্বর এবং পেটের গোলমালেও উপকারী। তবে ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, গ্যাসট্রিক আলসারে এর ব্যবহার ক্ষতিকর।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Module 11: Ayurvedic"। ২০০৭-১২-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-১১ 
  2. মেরিয়াম-ওয়েবস্টার
  3. "Efloraofindia তথ্যতীর্থ"। ২৯ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  4. "efloraofindia তথ্যতীর্থ"। ২৯ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা