ডা.সন্মথ দত্ত(১৯০৬ - ১৯৮২) ছিলেন একজন বাঙালি কিংবদন্তি ফুটবলার, যিনি কলকাতার মোহনবাগান দলের সেন্টার হাফ ও পরবর্তীতে সেন্টার ব্যাকে খেলতেন। তিনি দলের ও দেশের হয়ে অধিনায়ক হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। [১]

সন্মথ দত্ত
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম সন্মথ দত্ত
জন্ম (১৯০৬-০৫-০৬)৬ মে ১৯০৬
মৃত্যু ১৯৮২
মাঠে অবস্থান সেন্ট্রার হাফ ও ব্যাক
জ্যেষ্ঠ পর্যায়*
বছর দল ম্যাচ (গোল)
১৯২৭–৩৬ মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব
জাতীয় দল
১৯৩৪–৩৬ ভারত
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

সন্মথ দত্তের জন্ম এবং আদি নিবাস ছিল বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের রাজশাহীর কালনায়। বিদ্যালয়ের পাঠ কটকের রাভেনশ কলেজিয়েট স্কুলে। পরে চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেন কলকাতার ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল কলেজ ও পরে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ছাত্রাবস্থায় তার খেলাধূলায় বিশেষ আগ্রহ ছিল।

ক্রীড়া জীবন সম্পাদনা

কলকাতায় ডাক্তারি পড়ার সময়ই তিনি মোহন বাগান ক্লাবে যুক্ত হয়ে যান। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ হতে একটানা আট বৎসর মোহনবাগান ক্লাবের আর এক কিংবদন্তি ফুটবলার গোষ্ঠ পালের সঙ্গে সমান দক্ষতা ও ক্রীড়া নৈপুণ্যে লেফ্ট ব্যাকে খেলেছেন। গোষ্ঠ পাল খেলতে রাইট ব্যাকে। তার অন্য সহযোগী ফুটবলার ছিলেন উমাপতি কুমার, করুণাশঙ্কর ভট্টাচার্য, বিমল মুখার্জি, সন্তু চৌধুরীরাও প্রমুখেরা। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে গোষ্ঠ পাল অবসর নিলে পরবর্তী পাঁচ বছর তিনি তার উত্তরসূরি হয়ে খেলেন। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি নিখিল ভারত ফুটবল দলের অধিনায়ক হয়ে প্রথম বিদেশ সফরে যান দক্ষিণ আফ্রিকা । ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে চিনের অলিম্পিক দল লি ওয়াই টাং ভারতে খেলতে আসলে তিনি আইএফএ দলের অধিনায়কত্ব করেন। ১৯৩১-৩৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি মোহন বাগান ক্লাবের অধিনায়কও ছিলেন। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি অবসর নেন।

খেলা থেকে অবসরের পর তিনি ক্রীড়াপ্রশাসকের কাজে লিপ্ত হন। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ক্লাবের ফুটবল সম্পাদক, ১৯৫১-৫২ খ্রিস্টাব্দে ক্লাবের সহকারী সম্পাদক হয়েছিলেন। ১৯৬৭ ৬৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি হন।

পারিবারিক জীবন সম্পাদনা

ডা. সন্মথ দত্তের স্ত্রী সুধারানি দত্ত মহিলা ক্রীড়া প্রশাসনে যুক্ত ছিলেন এবং কংগ্রেস প্রার্থী হয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তিন বার (১৯৫১,'৬২, '৬৭)। তাদের তিন কন্যা ( কৃষ্ণা বিশ্বাস, শিপ্রা ব্যানার্জি, শুক্লা বসু) ও এক পুত্র সুপ্রিয় দত্ত। দত্ত পরিবারের উদ্যোগে ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই এক অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী সন্মথ দত্তের ক্রীড়া নিয়ে আত্মজীবনী বাংলায় সবুজে মেরুনে জীবনী এবং ইংরাজীতে লিভিং উইথ গ্রীন অ্যান্ড মেরুন প্রকাশ করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ৭৬৬, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬