সন্ধানী
সন্ধানী বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।[১] ১৯৭৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে যাত্রা শুরু করে[২] এবং পরবর্তীকালে, ১৮ অক্টোবর, ১৯৭৯ তারিখে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ সন্ধ্যানীর দ্বিতীয় ইউনিটে পরিণত হয়। বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান আন্দোলনের পথিকৃৎ "সন্ধানী"।[১] বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোতে সন্ধানীর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। রক্ত দানের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি মানুষের চক্ষু ব্যাংক হিসেবে কাজ করে।[১] মৃত্যুর পূর্বে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত চক্ষু দানের ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করে থাকে যাতে ভবিষ্যতে সেগুলো অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারেন।[১][৩] সমাজসেবায় অবদানের জন্য ২০০৪ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্করে ভূষিত করে।
![]() | |
নীতিবাক্য | সেবাই আমাদের আদর্শ |
---|---|
গঠিত | ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭ |
প্রতিষ্ঠাস্থান | ঢাকা মেডিকেল কলেজ |
ধরন | স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন |
সদরদপ্তর | সন্ধানী ভবন, 33/2, বাবুপাড়া রোড, নীলক্ষেত, ঢাকা, বাংলাদেশ |
অবস্থান |
|
যে অঞ্চলে | বাংলাদেশ |
পরিষেবা | স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা |
স্বেচ্ছাকর্মী | প্রতিটি ইউনিটের ছাত্রদের সমন্বয়ে গঠিত |
পুরস্কার | স্বাধীনতা পুরস্কার |
ওয়েবসাইট | www |
বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও প্রতিষ্ঠানটি রক্ত সংগ্রহ করে থাকে। সংগ্রহীত রক্তকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তা শ্রেণিবিন্যাস করা হয়।[১] ১৯৭৮ সালের ২রা নভেম্বর ডিএমসিএইচ ব্লাড ব্যাংকে সন্ধানী প্রথমবারের মত ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর’ আয়োজন করে এবং পরবর্তীতে এই দিনটিকেই ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস’ হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেয়া হয়।[২] ১৯৮২ সালে ‘সন্ধানী ডোনার ক্লাব’ এবং ১৯৮৪ সালে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষুব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়।
সন্ধানীর কার্যক্রম:
সম্পাদনা- স্বেচ্ছায় রক্তদান
- বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ
- মরণোত্তর চক্ষু দান
- বিনামূল্যে স্বাস্থ্য ক্যাম্প
ইতিহাস:
সম্পাদনা১৯৭৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে যাত্রা শুরু করার পর সন্ধানীর দ্বিতীয় ইউনিট হিসেবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ আত্মপ্রকাশ করে ১৮ অক্টোবর, ১৯৭৯ সালে। সন্ধানী মূলত মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ছাত্রছাত্রী দ্বারা পরিচালিত একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি ইউনিটের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ঐ নির্দিষ্ট ইউনিটের ছাত্রদের নিয়ে গঠিত একটি কার্যকরী কমিটির মাধ্যমে এবং সবগুলো ইউনিটকে সমন্বয় করার জন্য রয়েছে একটি ‘কেন্দ্রীয় পরিষদ’।[২]
বেসরকারী মেডিকেল কলেজ:
সম্পাদনাবেসরকারী মেডিকেল কলেজগুলোর প্রতিনিধি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সন্ধানীর সাথে প্রথম পরিচয় ঘটে ১৯৯৫ সালে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির একটি জোনের আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে।[৪] ২০০৩ সালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ আয়োজিত সন্ধানী ২২তম কেন্দ্রীয় বার্ষিক সম্মেলনে বেসরকারী মেডিকেল কলেজে সন্ধানী ইউনিট স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়।[৪] প্রথম বেসরকারী মেডিকেল কলেজ হিসেবে সন্ধানী বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ইউনিট আত্মপ্রকাশ করে ১২ এপ্রিল,২০০৪ইং তারিখে। [৪] বর্তমানে সারা বাংলাদেশে অনেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজে সন্ধানীর শাখা রয়েছে।
পুরস্কার
সম্পাদনা- জুয়েল মেমোরিয়াল মেডেল - ১৯৮৬
- আসফ-উদ-দৌলা মেমোরিয়াল মেডেল - ১৯৮৮
- রিয়াল এডমিরাল মাহবুব আলী খান গোল্ড মেডেল - ১৯৯১
- কমনওয়েলথ ইয়ুথ সার্ভিস এওয়ার্ড - ১৯৯৫
- ওডিএ, ইউকে এওয়ার্ড - ১৯৯৫
- বাংলাদেশ মেডিকল টিচার্স এসোসিয়েশন ফেডারেশন এওয়াডর্ - ১৯৯৫
- ইবনে সিনা ট্রাস্ট এওয়ার্ড - ২০০৩ [৫]
- স্বাধীনতা পুরস্কার - ২০০৪
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ জিয়া উদ্দিন আহমেদ (২০১২)। "সন্ধানী"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ ক খ গ হোসেন, আফরিনা (১৬ জুন ২০১৩)। "জীবনের স্পন্দনে সন্ধানী"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "শোকের শক্তি দেখিয়েছে সন্ধানী"। যায়যায় দিন। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ ক খ গ "Sandhani Bangladesh Medical College Unit"। Sandhani Bangladesh Medical College Unit। ২০২৩-০৮-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৭।
- ↑ Trust, The Ibn Sina। "Home | The Ibn Sina Trust | pioneer in Healthcare"। www.ibnsinatrust.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১১।