শ্রীরামকৃষ্ণ দর্শনম্
শ্রীরামকৃষ্ণ দর্শনম্ হল ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এবং সিঙ্গাপুর-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত রামকৃষ্ণ পরমহংসের জীবনীমূলক একটি চলচ্চিত্র। এই ছবিটি তামিল ও হিন্দি ভাষায় মুক্তিলাভ করেছিল। ছবিটির পরিচালক হলেন জি. এন. দাস ও প্রযোজক জি.এন.ডি ইন্টারন্যাশানাল প্রাইভেট লিমিটেড। ২০১২ সালের ১৭ অগস্ট স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে তামিলনাড়ু রাজ্যের রাজধানী চেন্নাই শহরে এই ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছিল।[১]
কাহিনী-সারাংশ
সম্পাদনাআমি সমাজকে কিছু ফিরিয়ে এনে দিতে চেয়েছিলাম এবং এটি আমার সশ্রদ্ধ নিবেদন।[২]
চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে জি. এন. দাস
রামকৃষ্ণ পরমহংসের সমগ্র জীবনকাহিনীটিই শ্রীরামকৃষ্ণ দর্শনম্ ছবিতে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। ছবির শুরুতে দেখানো হয়েছে তদনীন্তন ব্রিটিশ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির হুগলি জেলার অন্তঃপাতী কামারপুকুর গ্রামে গদাধর চট্টোপাধ্যায়ের (রামকৃষ্ণ পরমহংসের পূর্বাশ্রমের নাম) জন্ম। এরপর আধ্যাত্মিকতার প্রতি তার আকর্ষণ ও ভাবতন্ময়তা, প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রত্যাখ্যান করে রামায়ণ, মহাভারত ও পুরাণ প্রভৃতি অবলম্বনে নির্মিত যাত্রাপালা দেখে ধর্মশিক্ষা, যৌবনে কলকাতায় এসে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে পৌরহিত্য গ্রহণ এবং কিছুকাল পরেই পৌরোহিত্য ছেড়ে সাধনায় মনোনিবেশ ও সিদ্ধিলাভের বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
এরপর দেখানো হয়েছে, তিনি কীভাবে সহজ ভাষায় সরলভাবে সাধারণ মানুষ ও কলকাতার পাশ্চাত্য-শিক্ষায় শিক্ষিত সমাজকে অধ্যাত্ম-তত্ত্ব ও ভক্তিযোগ শিক্ষা দিতে শুরু করেন। নরেন্দ্রনাথ দত্তের (স্বামী বিবেকানন্দের পূর্বাশ্রমের নাম) সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে, তিনি তাকে ‘শিবজ্ঞানে জীবসেবা’র নির্দেশ দেন। এরপর গলার ক্যান্সার ধরা পড়ে তাঁর। তবু চিকিৎসকের নির্দেশ অমান্য করে তিনি ধর্মোপদেশ দান থেকে বিরত হন না। শেষ পর্যন্ত নিজ স্বাস্থ্যের প্রতি উদাসীন রামকৃষ্ণ পরমহংসের দেহত্যাগের মধ্যে দিয়ে এই চলচ্চিত্রের সমাপ্তি ঘটেছে।
অভিনেতা-অভিনেতা
সম্পাদনা- বিঘ্নেশ – শিশু রামকৃষ্ণ
- শশীকুমার – রামকৃষ্ণ পরমহংস
- দেলহি গণেশ
- রবীন্দ্রনাথ
- সুরজ
- লক্ষ্মী
- উমা
প্রযোজনা
সম্পাদনাজি.এন.ডি ভিশন ইন্টারন্যাশানাল প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যানারে ৭৪ বছর বয়সী জি. এন. দাস সিঙ্গাপুরীয় শ্রীরামকৃষ্ণ দর্শনম্ ছবিটি পরিচালনা ও প্রযোজনা করেন। ছবিটি সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, এই ছবিটি “বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র নয়” এবং এটি এমন “একটি চলচ্চিত্র যাতে শৈশব থেকে শুরু করে শ্রীরামকৃষ্ণের সমগ্র জীবন চিত্রিত হয়েছে, যা ইতিপূর্বে কখনও করা হয়নি।” তিনি বলেন, এই কারণেই তারা এই ছবিটি তৈরি করে রামকৃষ্ণ পরমহংসের দৃষ্টিভঙ্গি ও শিক্ষার প্রসার ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।[৩]
মুক্তি
সম্পাদনা২০১২ সালের ১৭ অগস্ট এই ছবিটি তামিল ও হিন্দি ভাষায় মুক্তিলাভ করে। এটি সিঙ্গাপুর ও ভারতে প্রদর্শিত হয়। এই ছবির মুক্তি ছিল স্বামী বিবেকানন্দের জন্মসার্ধশতবর্ষ উদযাপনের অংশ। সিঙ্গাপুরে সেই উপলক্ষ্যেই ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছিল।[১][৪]
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে ইউনিভার্সিটি কালচারাল সেন্টারে ছবিটি প্রদর্শিত হয়। সেখানে সিঙ্গাপুরের উপ-প্রধানমন্ত্রী থরমন শন্মুগরত্নম এই ছবিটি দেখেন।[৪]
প্রতিক্রিয়া
সম্পাদনাসমালোচকদের পর্যবেক্ষণ | |
---|---|
পর্যবেক্ষণ মান | |
সূত্র | রেটিং |
দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া |
ছবিটি মুক্তিলাভ করার পর সমালোচকদের থেকে মিশ্র ও প্রধানত ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া ছবিটিকে ৫ তারার মধ্যে ৩ তারা রেট দেয় এবং মন্তব্য করে, ছবি আগ্রহব্যঞ্জক, যদিও পরিচালক নতুন কিছুই বলেননি। এই সংবাদপত্রে আরও বলা হয় যে, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় সন্তোষজনক এবং শশীকুমার অভিনয় “ঠিকঠাক”। সমালোচনার শেষে সমালোচক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, “সন্তের (রামকৃষ্ণ পরমহংস) জীবন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত একটি ধারণা পেতে হলে এই ছবি দেখা খুবই জরুরি বলে মনে করা যেতে পারে।”[৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনাপাদটীকা
সম্পাদনা- ↑ ক খ "Feature film on Sri Ramakrishna Paramahamsa"। The Hindu। ১৫ আগস্ট ২০১২। ৪ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ Editorial 2013, পৃ. 4।
- ↑ "GND Vision International Pte Ltd release" (পিডিএফ)। GND Vision International Pte Ltd। ১২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ ক খ Editorial 2013, পৃ. 3।
- ↑ "Sri Ramakrishna Dharisanam review"। The Times of India। ১২ আগস্ট ২০১২। ৪ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৩।
সূত্র
সম্পাদনা- Editorial (২০১৩)। "Nirvana 2013 issue Jan-Mar" (পিডিএফ)। Ramakrishna Mission Singapore। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৩।