শ্যামনগর জমিদার বাড়ি

শ্যামপুর জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ এর সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। যা স্থানীয়দের কাছে রায় চৌধুরীর বাড়ি, জমিদার হরিচরণ রায়ের বাড়ি ও নকিপুর জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত।[১]

শ্যামনগর জমিদার বাড়ি
বিকল্প নামহরিচরণ রায়ের বাড়ি
হরিচরণ রায়ের জমিদার বাড়ি
নকিপুর জমিদার বাড়ি
রায় চৌধুরীর জমিদার বাড়ি
সাধারণ তথ্য
ধরনবাসস্থান
অবস্থানশ্যামনগর উপজেলা
ঠিকানানকিপুর গ্রাম
শহরশ্যামনগর উপজেলা, সাতক্ষীরা জেলা
দেশবাংলাদেশ
খোলা হয়েছে১৮শ শতকের মাঝামাঝি
বন্ধ১৯৪৭
স্বত্বাধিকারীহরিচরণ রায় চৌধুরী
কারিগরী বিবরণ
উপাদানইট, সুরকি ও রড
তলার সংখ্যাদুই (০২)
তলার আয়তন১৯ মিঃ
অন্যান্য তথ্য
কক্ষ সংখ্যাএকচল্লিশ (৪১)

ইতিহাস সম্পাদনা

প্রায় ১৮০০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জমিদার হরিচরণ রায় চৌধুরী এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই এলাকার একজন প্রতাপশালী জমিদার ছিলেন। এই বাড়িতে প্রতিবছর দুর্গা পূজা হতো। যার জন্য বিশেষভাবে একটা পাকা প্যান্ডেল তৈরি করা ছিল। জমিদার হরিচরণ রায় ধনী হওয়ার পেছনে লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে তার মা ঘুমের মধ্য স্বপ্নে বস্তা বস্তা টাকা বা গুপ্তধনের সন্ধান পেতেন।(সঠিক কোন প্রমাণ নেই ) আর এই থেকেই হরিচরণ অনেক ধন-সম্পত্তির মালিক হন। তখন থেকে সূর্যাস্ত আইনের মাধ্যমে নিলামে উঠা চৌহার্দিগুলো তিনি কিনে নিতেন। যার ফলস্বরূপ পরবর্তীতে তিনি একজন স্বতন্ত্র জমিদার হয়ে উঠেন।


তিনি ছিলেন একজন ভালো অপরূপভাবশালী জমিদার।

লেখক:- মো: সিয়াম হোসেন।(স্থানীয়)

বাড়ি:- শ্যামনগর,কাশিমাড়ী।

অবকাঠামো সম্পাদনা

জমিদার বাড়িটিতে দুই তলা বিশিষ্ট্য ইংরেজি বর্ণমালা এল (এল) প্যাটার্নের ১৯ মিটার লম্বা একটি ভবন রয়েছে। জোড়া দুটি শিব মন্দির, চিকিৎসালায়, নহবতখানা, পূজা মণ্ডপ, দিঘী ও পুকুর রয়েছে। তবে এসবের অধিকাংশ এখন স্থানীয়দের ভোগদখলে।[২]

ভবনটির বৈশিষ্ট্যগুলি সেই সময়ের স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যকে প্রতিনিধিত্ব করে যা ব্রিটিশরা চালু করেছিল। উন্মুক্ত কলাম এবং শোভাময় উপাদানগুলি সেই সময়ে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কক্ষগুলির চারপাশে খোলা বারান্দা, যা বিনোদন এবং বায়ু চলাচলের জন্য সঞ্চালন এবং স্থান সরবরাহ করে, যা কলোনিয়াল সময়ের স্থাপত্য শৈলীর আরেকটি বৈশিষ্ট্য।

 
শ্যামনগর জমিদার বাড়ির পেছনের অংশের ধ্বংসাবশেষ।

কলোনিয়াল আমলের জমিদার বাড়িগুলিতে রয়েছে মহিমান্বিত কলাম, আলংকারিক খিলান খিলান খোলা,পেডিমেন্ট, ক্রেস্ট এবং অন্যান্য আলংকারিক উপাদান। এই উপাদানগুলি বিল্ডিংয়ের সমন্বিত ফর্ম, যা ব্যাপকভাবে মহিমা এবং বিভিন্ন অলঙ্করণের সাথে প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যবহার করা হয় কলোনিয়াল সময় পর্যন্ত উন্নয়ন। শৈলী পরিপক্ক হওয়ার সাথে সাথে এটি ভলিউম এবং পরিমাণে কম হয়ে যায়। কাঠামোগত উপাদানগুলি হল প্রাচীর, খিলান, কলাম, ভল্ট, লিন্টেল, রাফটার এবং বন্ধনী।

বর্তমান অবস্থা সম্পাদনা

অপরিচর্যা ও অবহেলার কারণে জমিদার বাড়ির ভবন ও শিব মন্দির সবকিছুই এখন ধ্বংসের মুখে। ইট, সুরকি খসে পড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের গাছগাছালি ও লতাপাতা ভবনগুলোকে ঘিরে ধরেছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা