শুভদা (চলচ্চিত্র)
শুভদা হল ১৯৮৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র। বাঙালি কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শুভদা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম। ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আনোয়ারা,[১] অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন গোলাম মুস্তাফা, রাজ্জাক, বুলবুল আহমেদ ও জিনাত।[২]
শুভদা | |
---|---|
পরিচালক | চাষী নজরুল ইসলাম |
প্রযোজক | একেএম জাহাঙ্গীর খান |
রচয়িতা | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | খোন্দকার নুরুল আলম |
চিত্রগ্রাহক | জেড এইচ মিন্টু |
সম্পাদক | খোরশেদ আলম |
মুক্তি | ১৯৮৬ |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনাহারানের দুই মেয়ে। একজনের নাম ললনা, যে বিয়ের একমাসের মাথায় বিধবা হয়ে বাপের বাড়ি চলে এসেছে। আরেক মেয়ে ছলনা, যে খুবই চঞ্চল। হারানের কোমলমতি স্ত্রী শুভদা, অসুস্থ ছেলে মাধব আর এক বিধবা বোনকে নিয়ে তার সংসার। জুয়া আর গাঁজার প্রতি আসক্তি থাকার কারণে অভাব তার পরিবারের নিত্যসঙ্গী। সদানন্দ একজন আধপাগল কর্মঠ মানুষ। সে হয়তো ললনাকে ভালোবাসে কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারে না। সদানন্দ যথাসম্ভব ললনার পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করে। এদিকে বিয়ের আগে ললনার সাথে প্রেম ছিল সারদার। কিন্তু সমাজ ও তার লোভী বাবার রক্তচক্ষুর ভয়ে সে বিধবা ললনাকে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করে। ললনা সারদাকে অনুরোধ করে, সে যেন তার ছোট বোন ছলনাকে বিয়ে করে। একদিন ললনাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। নদীর জলে ললনার কাপড় পেয়ে সবাই ধরে নেয় ললনা নদীতে ডুবে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাক্রমে নদীতে ভাসতে ভাসতে ললনা আশ্রয় পায় এক জমিদারের কাছে। জমিদার তাকে নিজের সাথে কলকাতা নিয়ে যায়। এদিকে ললনার শেষ ইচ্ছা পূরণ করার জন্য সদানন্দ তার সম্পত্তি বিক্রি করে সারদার সাথে ছলনার বিয়ে দেয়। জমিদারের নির্দেশে ললনা তার ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য শুভদার কাছে ৫০০ টাকা পাঠায়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। মাধব মারা গেছে। শুভদার কলকাতায় কোন আত্মীয় নেই। তারপরও সেখান থেকে ৫০০ টাকা পেয়ে সে টাকাগুলো না নিয়ে সদানন্দকে কলকাতায় পাঠায় টাকার মালিকের খোঁজ নিতে। সদানন্দ কলকাতা গিয়ে জানতে পারে ললনা বেঁচে আছে। ললনা লোভে পড়ে জমিদারের রক্ষিতা হয়ে গেছে এই ভুল বোঝে সে ভারাক্রান্ত মনে ললনার সাথে দেখা না করেই চলে আসে। বাড়িতে ফিরে সে শুভদাকে সব খুলে বলে। তারপর অনাথ সদানন্দ শুভদাকে "মা" বলে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে। যেন অনাথ সদানন্দ ফিরে পায় তার মাকে আর শুভদা ফিরে পায় তার মৃত পুত্রকে।
শ্রেষ্ঠাংশে
সম্পাদনা- আনোয়ারা - শুভদা
- গোলাম মুস্তাফা - হারান
- রাজ্জাক - সদানন্দ
- বুলবুল আহমেদ - জমিদার
- জিনাত - ললনা
- আঃ সাত্তার - সারদা
সম্মাননা
সম্পাদনাএই চলচ্চিত্রটি ১৯৮৬ সালে ১১টি বিভাগে ১১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বাংলাদেশ) পায়।
- শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র - প্রযোজকঃ- এ কে এম জাহাঙ্গীর খান
- শ্রেষ্ঠ পরিচালক - চাষী নজরুল ইসলাম
- শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - গোলাম মুস্তাফা
- শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী - আনোয়ারা
- শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী - জিনাত
- শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক- খন্দকার নুরুল আলম
- শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতশিল্পী - সুবীর নন্দী ও নীলুফার ইয়াসমিন
- শ্রেষ্ঠ গীতিকার - মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান
- শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক (সাদা কালো ও রঙিন) - সাধন রায়
- শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক - এমএ বাসেত
- শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক - আব্দুস সবুর
সংগীত
সম্পাদনাশুভদা চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন খন্দকার নুরুল আলম।[৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ সাজু, শাহ আলম (৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "Suchitra was Chashi mama's first choice for 'Shubhoda…Anwara"। দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ করিম, ওয়াহিদ (২০০৬)। "The red and green silver screen"। দ্য ডেইলি স্টার। ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ মাহফুফা আক্তার (সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১১) Lifetime Achievement In Music Khandker Nurul Alam (ইংরেজি ভাষায়) দ্য ডেইলি স্টার (এপ্রিল ২২, ২০১২)
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে শুভদা (ইংরেজি)