শীতল ব্লব বলতে বুঝায় নর্থ আটলান্টিক এলাকার(যাকে উত্তর আটলান্টিক উষ্ণ গর্ত বলা হয়) [২][৩] উত্তর মধ্যরেখীয় পিছলানো প্রবাহের(এএমওসি) যা থার্মোহ্যালিনে প্রবাহকে প্রভাবিত করে এর কারণে শীতল তাপমাত্রার ব্যতিক্রম ঘটছে ।এই প্রভাবের জন্য বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং গ্রীনল্যান্ড এর বরফ গলে যাচ্ছে।

২০১৫ সালে,সর্বোচ্চ তাপমাত্রার বছর(১৮৮০ সাল থেকে) নাসার গড় তাপমাত্রায় দৃশ্যমান ব্লব,রং দ্বারা তাপমাত্রার ব্যতিক্রম দেখানো হয়। (নাসা/এন্ওএএ; ২০জানুয়ারি,২০১৬)[১]

সাধারণ সম্পাদনা

এএমওসি সাধারণত সমুদ্রের তাপমাত্রা এবং লবণাক্ততা পার্থক্যের জন্য হয়।যার মধ্যে অন্যতম হলো পরিষ্কার পানি লবণাক্ততা কমিয়ে দেয় যা শীতল পানির ডুবে যাওয়াকে বাধা দেয়।এই পানি বৃদ্ধির কারণ গ্রীনল্যান্ড এর বরফ চাদরের গলন।[৪]

গবেষণা সম্পাদনা

২০১৫ এবং পূর্ববর্তী সম্পাদনা

 
এএম্ওসি-নির্দেশকে পতন-৯০০ সিই থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত।র‌্যামস্টর্ফ(২০১৫)[৫]

জলবায়ু প্রভাব গবেষণার জলবায়ু বিজ্ঞানী পেন স্টেটের মিচেল মান এবং পটসদাম স্টেটের স্টেফান রহমস্তরফ গবেষণা করে দেখেন যে বিগত বছরের তাপমাত্রা রেকর্ড অনুযায়ী উত্তর মধ্যরেখীয় পিছলানো প্রবাহ(এএমওসি) এবং শীতলীকরণ কমেছে।তারা তাদের গবেষণার ফল পর্যবেক্ষণ করে বলেন যে এএমওসি প্রবাহ ব্যাপক হারে কমেছে এবং তার অন্যতম কারণ গ্রিনল্যান্ড এর বরফের গলন।[৫] এনওএএ এর টম দেলওয়ার্থ বলেন প্রাকৃতিক বিভিন্ন পরিবর্তন যেমন উত্তর আটলান্টিক দোলনএবং আটলান্টিকের বহু বছরের দোলন যা বায়ুর উপর নির্ভরশীল তার জন্য তাপমাত্রা কমছে। জন রবসনের ২০১৪ সালে প্রকাশিত নিবন্ধে ইউনিভার্সিটি অফ রিডিং এ বলা হয়,এএমওসি এর একটি অন্যরকম পরিবর্তন এখন আমরা দেখতে পারছি।[৪][৬] দিদিয়ের স্বিংয়েদৌ এর মতে ১৯৭০ সাল থেকে এএমওসি এর যে পরিবর্তন তা অকল্পনীয়।[৭]

২০১৬ সম্পাদনা

২০১৬ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দক্ষিণ ফ্লোরিডা, কানাডা, নেদারল্যান্ডস বিশ্ববিদ্যালয় গ্রেস স্যাটেলাইট ব্যবহার করে গ্রীনল্যান্ড এর বিশুদ্ধ পানি মাপার জন্য তথ্য সংগ্রহ করেন।তারা এই মতামতে পৌঁছান যে বিশুদ্ধ পানি প্রবাহ বেড়েই চলেছে যা ভবিষ্যতে এএমওসি এর প্রবাহে বিঘ্ন ঘটাতে পারে এবং ইউরোপ,উত্তর আমেরিকাতে আঘাত হানতে পারে।[৮]

২০১৬ সালে প্রকাশিত আরেকটি নিবন্ধে আমেরিকার পূর্ব উপকূলে ব্যাপক সমুদ্র উচ্চতা বৃদ্ধিপেয়েছে।তাদের গবেষণায় তারা এ এলাকাকে হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত করেন  যার গড় সমুদ্র উচ্চতার চেয়ে ৩-৪ গুন বেশি সমুদ্র উচ্চতা বাড়ানোর  ক্ষমতা রয়েছে ।তারা সমুদ্রের গতির সম্ভাব্য উচ্চতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে গভীর জলাভূমি গঠন বলেন এবং যার ফলে এএমওসি কমে  যাচ্ছে এবং মাটির নিচের পানির উৎস গরম হয়ে যাচ্ছে।এখানে আরও বলা হয় "অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের ফলেও এই এলাকায় গড়ের চেয়ে বেশি হারে সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে।"[৯]

ইতিহাস সম্পাদনা

২০০৫ সালে ব্রিটিশ গবেষক দেখেন যে উত্তর উপসাগরীয় প্রবাহ ১৯৫৭ সাল থেকে ৩০% কমে গিয়েছে। উডসোলের বিজ্ঞানীরা উত্তর আটলান্টিকের বিশুদ্ধ পানি মাপছিলেন যখন তখন পৃথিবী গরম ছিল।তাদের গবেষণায় দেখা যায় উত্তর কর্কটক্রান্তি রেখা বরাবর অধঃক্ষেপ বেশি হওয়ায় মেরু এলাকায় গলন বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত বিশুদ্ধ পানি দ্বারা উত্তর সাগর প্লাবিত হ্ওয়ায় এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য উপসাগরীয় প্রবাহ ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ এবং নরওয়ে এর  উত্তর দিকে প্রবাহিত হচ্ছে যা নিরক্ষরেখা বরাবর প্রবাহিত হয় ।আর এটা যদি ঘটে তাহলে ইউরোপের আবহাওয়া এর উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।[১০][১১][১২]

ইউএসএফ এর সমুদ্রবিজ্ঞান কলেজের ডন চেম্বার্স বলেন,"এএমওসি ধীরগতির হওয়ায় উত্তর আটলান্টিকে শীতকাল এবং গ্রীষ্মকালে ঠান্ডা বেশি পড়ে এবং উত্তর আমেরিকার উপকূলে সমুদ্র উচ্চতা সামান্য বৃদ্ধি পাবে।"[৮]জেমস হানসেন এবং মাকিকো সাতো বলেন ,"এএমওসি হ্রাস পাওয়ায় তাপমাত্রা ১ ডিগ্রী কমছে এবং এএমওসি স্থির এর চেয়ে বেশ কয়েক ডিগ্রী বেশি তাপমাত্রা পরিবর্তন দেখাবে যা ভবিষ্যতে ঝড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাবে।[১৩] উত্তর আটলান্টিক মধ্যরেখীয় প্রবাহ পরিবর্তন সমুদ্র উচ্চতা সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন দেখা যাবে। [১৪]

ব্যবস্থা সম্পাদনা

আরএপিআইডি ২০০৪ সাল থেকে সমুদ্রের গতি পর্যালোচনা করছে।[৪]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Brown, Dwayne; Cabbage, Michael; McCarthy, Leslie; Norton, Karen (২০ জানুয়ারি ২০১৬)। "NASA, NOAA Analyses Reveal Record-Shattering Global Warm Temperatures in 2015"NASA। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৬ 
  2. "North Atlantic warming hole impacts jet stream"ScienceDaily (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৪ 
  3. "If you doubt that the AMOC has weakened, read this"RealClimate (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৪ 
  4. "Everything you need to know about the surprisingly cold 'blob' in the North Atlantic ocean"The Washington Post। ২০১৫। 
  5. Stefan Rahmstorf, Jason E. Box, Georg Feulner, Michael E. Mann, Alexander Robinson, Scott Rutherford & Erik J. Schaffernicht (২০১৫)। "Exceptional twentieth-century slowdown in Atlantic Ocean overturning circulation" (পিডিএফ)Nature Climate Change5 (5): 475–480। ডিওআই:10.1038/nclimate2554 
  6. Jon Robson, Dan Hodson, Ed Hawkins, Rowan Sutton (২০১৪)। "Atlantic overturning in decline?" (পিডিএফ)Nature Geoscience7: 2–3। ডিওআই:10.1038/ngeo2050 
  7. Didier Swingedouw (২০১৫)। "Oceanography: Fresh news from the Atlantic"। Nature Climate Change5: 411–412। ডিওআই:10.1038/nclimate2626 
  8. "Melting Greenland ice sheet may affect global ocean circulation, future climate"। Phys.org। ২০১৬। 
  9. "Why the U.S. East Coast could be a major 'hotspot' for rising seas"The Washington Post। ২০১৬। 
  10. Garrison, Tom (২০০৯)। Oceanography: An Invitation to Marine Science (7th সংস্করণ)। Cengage Learning। পৃষ্ঠা 582। আইএসবিএন 9780495391937 
  11. Bryden, H.L., H.R. Longworth and S.A. Cunningham (২০০৫)। "Slowing of the Atlantic meridional overturning circulation at 25° N"। Nature438 (7068): 655–657। এসটুসিআইডি 4429828ডিওআই:10.1038/nature04385পিএমআইডি 16319889 
  12. Curry, R.; Mauritzen, C. (২০০৫)। "Dilution of the northern North Atlantic in recent decades"। Science308 (5729): 1772–1774। এসটুসিআইডি 36017668ডিওআই:10.1126/science.1109477পিএমআইডি 15961666 
  13. James Hansen and Makiko Sato (২০১৫)। "Predictions Implicit in "Ice Melt" Paper and Global Implications" 
  14. Jianjun Yin and Stephen Griffies (২৫ মার্চ ২০১৫)। "Extreme sea level rise event linked to AMOC downturn"। CLIVAR। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা