শিল-নোড়া হচ্ছে দুই খণ্ড পাথর যা প্রধানত রান্নাঘরে মশলা পেষার জন্য ব্যবহৃত হয়। শিল ট্রাপিজয়েডাকার এবং মেঝেতে রাখা হয়। শিলের ওপর মশলা, যেমন শুকনো মরিচ, ধনে, হলুদ, জিরা ইত্যাদি রেখে নোড়া দিয়ে ডলা দিতে হয়।

নোড়া একটি দীঘল পাথর খণ্ড, যা প্রস্থে কিঞ্চিৎ গোলাকার। দুই হাতে নোড়া আঁকড়ে ধরে শিলের ওপর মশলা পিষতে হয়।

কারিগর

সম্পাদনা

কাটনিওয়ালা কত স্বাভাবিক ভঙ্গিতে পাটার পাথরটি খোদায় করে চলত। কিছুক্ষণের মধ্যেই সাড়া পাটার গা মাছের আঁশের মত রূপ ধারণ করে ফেলেন তারা। শ্রমের সাথে শিল্পের সক্ষতা বাঙালি মানসে যেন প্রোথিত। পাটা ধার কাটনিওয়ালারা তাদের দক্ষতা আর গৃহস্থের ইচ্ছা অনুযায়ী পাটাতে ধার কেটে কেটে ফুটিয়ে তুলত মাছ, ফুল, লতা ও পাখির ছবি।

পাথরে ধাতুর টোকা পড়ে খোদাই হতো আর থেকে থেকে ঝলকে উঠত আগুনের ফুলকি। বাতাসে পাথর পোড়া বারুদের গন্ধ।

প্রাপ্তিস্থান

সম্পাদনা

বাংলাদেশে অনেক জেলায় শিল-পাটা তৈরি করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য জেলাগুলি হচ্ছে, সিলেট, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, পঞ্চগড়, কক্সবাজার, নেত্রকোনা। তবে সবচেয়ে বেশি তৈরি হয় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর, চক্রপাড়া ও গোপীনাথপুর গ্রামে।

ব্যবহার

সম্পাদনা

ভোজনরসিক বাঙালিদের ঐতিহ্যে আজো আছে হাতে বাটা মশলায় তৈরি খাবার। এখন হাতে বাটা মশলার বদলে মেশিনে ভাঙানো গুড়া মশলার প্রচলন এসেছে। তারপরও অনেকে হাতে বাটা মশলায় তৈরি খাবার পছন্দ করেন।

বাসায় শিল-পাটা ধাঁর করা

সম্পাদনা

বাজারের গুঁড়া মশলার তুলনায় বাটা মশলায় রান্নায় স্বাদ এ ভিন্নতা পাওয়া যায়। তবে সমস্যা হলো সবসময় এই শিল-পাটা ধার করানোর লোক পাওয়া যায় না। আর শিল-পাটার ধার কমে গেলে মশলা পিষে নেয়া বেশ কষ্টকর হয়। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেয়া যাক বাসায় কীভাবে ধার করবেন শিল-পাটা- []

  1. প্রথমে মেঝেতে একটি মোটা কাপড় বা তোয়ালের উপর শিল-পাটা বসিয়ে নিন। হাতুড়ি এবং বড় স্ক্রু অথবা গজাল নিন।
  2. পুরনো গর্তের মধ্যে খানিকটা বাঁকা করে স্ক্রু ধরুন এবং অল্প অল্প করে হাতুড়ি দিয়ে ঠুকুন।
  3. চাইলে নতুন করেও গর্ত করতে পারেন। ঘন ঘন গর্ত করতে হবে, পাটা গর্ত হয়ে গেলে একইভাবে শিলে ধার দিয়ে নিন।

সতর্কতা

সম্পাদনা

শিল পাটা ধার করার সময় চোখে বড় চশমা অথবা সানগ্লাস পরে নেবেন অবশ্যই। নাহলে ছোট ছোট পাথরের টুকরা ছিটকে চোখে যেতে পারে। হাতে গ্লাভসও পড়ে নিতে পারেন।


তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "ঘরে বসেই ধার করুন শিল-পাটা"আজকের টাঙ্গাইল। ২০২০-০১-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১২