শিলা

ভূত্বক গঠনকারী পদার্থ

শিলা হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে গঠিত শক্ত পদার্থ কিংবা খনিজ পদার্থের সমষ্টি। শিলার অভ্যন্তরে খনিজ পদার্থ, এর রাসায়নিক গঠন এবং কীভাবে শিলাটি তৈরি হয় তার উপর ভিত্তি করে একে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। শিলাসমূহ প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে বিভক্তঃ আগ্নেয় শিলা, পাললিক শিলারূপান্তরিত শিলা। পৃথিবীর বাইরের শক্ত স্তর, পুরু স্তর ক্রাস্ট ও ক্রাস্টের বাইরের তরল কেন্দ্রাংশ ব্যতীত প্রায় সব অভ্যন্তরীণ অংশ ও পৃথিবীর অ্যাসথেনোস্ফিয়ার এর ম্যাগমা (লাভা)গর্ত শিলা দ্বারা গঠিত।

শিলা
পাললিক শিলার স্তূপের মাঝে খাঁজের মাধ্যমে তৈরি গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন

আগ্নেয় শিলা তখন গঠিত হয় যখন লাভা পৃথিবীর ক্রাস্টে উত্তপ্ত অবস্থা থেকে ঠান্ডা হয়ে পড়ে কিংবা লাভা পৃথিবীপৃষ্ঠে অথবা সমুদ্র সৈকতে ঠান্ডা হয়। পাললিক শিলার উৎপত্তি ঘটে পলি বা পলল এর ডায়াজেনেসিস (পললের বাহ্যিক ও রাসায়নিক পরিবর্তন) কিংবা লিথিফিকেশন(পললের পাথর হওয়ার প্রক্রিয়া) ঘটে। পরবর্তীতে এ পাথরগুলো পৃথিবীর পরিবেশের সাথে ও ভূ-পৃষ্ঠের স্বাভাবিক ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। প্রক্রিয়াগুলোকে যথাক্রমে ওয়েদারিংডিপোজিশন বলা হয়। আর রূপান্তরিত শিলা গঠন হয় যখন কোনো পাথর উচ্চ চাপ ও তাপমাত্রার মুখোমুখি হয়। এ উচ্চ চাপ ও তাপমাত্রার ফলে পাথরসমূহ রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এরকম অবস্থা তখন হয় যখন কন্টিনেন্টাল প্লেটসমূহের সংঘর্ষ হয়। []

শিলা সম্পর্কিত বিজ্ঞানে যে বিদ্যাবিভাগ আছে তা পেট্রোলজি নামে পরিচিত যা ভূতত্ত্ব এর গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা৷ []

শ্রেণিবিভাগ

সম্পাদনা
 
কোস্তা রিকার ওরোসির পর্বতের খাত বরাবর শিলার উদগত স্তর।

শিলা খনিজের দানা দিয়ে প্রস্তুত। এই খনিজ দানাগুলো মূলত কেলাসিত শক্ত পদার্থ দিয়ে তৈরি যা রাসায়নিক যৌগ এর নিয়মমাফিক বিন্যাসের ফলে তৈরি হয়। [] ঘনীভূত খনিজ পদার্থ যারা শিলা গঠন করে তারা রাসায়নিক বন্ধন এর মাধ্যমে একে অপরের সাথে একত্রে থাকে। কিছু শিলা দৃঢ় খনিজ পদার্থ যেমনঃ ভল্কানিক গ্লাস, যা দ্রুত শীতল হতে থাকা লাভার অ-কেলাসিত উৎপাদন নিয়ে গঠিত৷[]:৫৫,৭৯ শিলায় খনিজ পদার্থের ধরন ও অনুপস্থিতি নির্দেশ করে কোথায় ও কীভাবে শিলাটি তৈরি হয়েছে।

অধিকাংশ শিলা তাদের কেলাস গঠনে সিলিকন অক্সাইড টেট্রাহেড্রার মত সিলিকন খনিজ পদার্থ ধারণ করে। এর পাশে এক তৃতীয়াংশ অন্যান্য খনিজজাত পদার্থ থাকে এবং পৃথিবীর ক্রাস্টের ৯৫% শতাংশ থাকে শিলার ভেতরে৷[] শিলা ও খনিজে সিলিকার অনুপাত তাদের নাম ও বৈশিষ্ট্য নির্দেশে একটি মুখ্য উপাদান। []

শিলাসমূহকে কিছু বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয় যেমনঃ খনিজ ও রাসায়নিক গঠন, ভেদ্যতা, উপাদানের গঠনবিন্যাস এবং কণার আকৃতি। এই বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগুলি শিলা গঠন প্রক্রিয়ার ফলে সৃষ্টি হয়।[] শিলা চক্র নামক ভূতাত্ত্বিক একটি মডেল অনুসারে, অনেক সময় পর পর এক প্রকার শিলা অন্য প্রকার শিলাতে রূপান্তরিত হয়। এই রূপান্তরের ফলে শিলার তিনটি সাধারণ শ্রেণি দেখা দেয়ঃ আগ্নেয় শিলা, পাললিক শিলারূপান্তরিত শিলা

এই তিনটি শ্রেণি আবার অনেক ধরনের উপশ্রেণিতে বিভক্ত। যা হোক, শিলাসমূহের রূপান্তরের পেছনে কোনো বাঁধাধরা নিয়ম থাকে না। তাদের মধ্যে উপস্থিত খনিজ দ্রব্যের অনুপাতের বৃদ্ধি বা হ্রাসের দ্বারা তারা এক শ্রেণি হতে অন্য শ্রেণির শিলায় ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হয়। যার ফলে হয়ত স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কোনো শিলাকে সহজেই শনাক্ত করা যায় অন্য শ্রেণির শিলার খনিজ দ্রব্যের সাথে তুলনা করে। এজন্য যে শিলার শ্রেণিগুলোর নামকরণ করা হয় সে শিলাগুলোর প্রত্যেকেই আসলে অন্য শিলাতে পরিবর্তনশীল। []

আগ্নেয় শিলা

সম্পাদনা
 
আগ্নেয় শিলার নমুনা গ্যাব্রো

আগ্নেয় নামটি লাতিন শব্দ "ইগ্নিয়াস" থেকে এসেছে যার অর্থ হচ্ছে আগুন। আগ্নেয় শিলা উৎপন্ন হয় লাভা শীতল ও শক্ত হওয়ার কারণে। এই লাভা উৎপন্ন হয় পৃথিবীর গহ্বর কিংবা ক্রাস্টের আংশিক গলিত বিদ্যমান পাথরের কারণে। সাধারণত তাপমাত্রা বৃদ্ধি, চাপ হ্রাস ও গাঠনিক পরিবর্তন, এই তিনটি কারণের একটি অথবা তিনটির কারণেই পাথর গলন শুরু হয়।

আগ্নেয় শিলা দুইটি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত।

১. অনুপ্রবেশিত শিলাঃ এটি তখন উৎপন্ন হয় যখন লাভা শিলাটির ভেতরে অনুপ্রবেশ করে এবং এর ফলে পৃথিবী ক্রাস্টে লাভা (ম্যাগমা) শীতল ও কেলাসিত হয়। অনুপ্রবেশিত বা প্লুটোনিক শিলার একটি উদাহরণ হলো গ্রানাইট

২. অগ্নুৎপাত বা বাহ্যিক শিলাঃ আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে লাভা বা ফ্র‍্যাগমেন্টাল ইজেক্টা যখন পৃথিবীর মাটি স্পর্শ করে তখন সেখান থেকে শিলা উৎপন্ন হয়। এটি বাহ্যিক শিলা নামের পরিচিত যার উদাহরণ হলো পিউমিস ও ব্যাসাল্ট শিলা। []

রাসায়নিক পদার্থের পরিমাণ ও লাভার শীতল হওয়ার হার একটি ক্রম তৈরি করে যা বোয়েনের বিক্রিয়া সিরিজ নামে পরিচিত। অধিকাংশ আগ্নেয় শিলার কেলাসিত হওয়ার ক্রম উক্ত সিরিজটিকে অনুসরণ করে। []

পৃথিবীর ক্রাস্টের আয়তনের প্রায় ৬৫% আগ্নেয় শিলা দিয়ে তৈরি, যার ফলে সর্বোচ্চ প্রাচুর্যতাপূর্ণ শ্রেণি হিসেবে বিবেচিত। এদের মধ্যে ৬৬% ব্যাসাল্ট ও গ্যাব্রো, ১৬% গ্রানাইট, ১৭% গ্র‍্যানোডিউরাইট এবং ডিউরাইট। শুধু ০.৬% হচ্ছে সায়নাইট ও ০.৩% হলো আল্ট্রামাফিক। সামুদ্রিক ক্রাস্টের ৯৯%ই ব্যাসাল্ট যা মূলত মাফিক (ম্যাগ্নেসিয়াম ও আয়রন সমৃদ্ধ শিলা) সমৃদ্ধ আগ্নেয় শিলা। কন্টিনেটাল ক্রাস্টের বেশিরভাগ অঞ্চল জুড়ে থাকে গ্রানাইট ও গ্রানাইট জাতীয় শিলা বা গ্রানিটোইডস দ্বারা। [][]

পাললিক শিলা

সম্পাদনা
 
আয়রন অক্সাইড ব্যান্ডসহ পাললিক বেলেপাথর

পাললিক শিলা পৃথিবী পৃষ্ঠে তৈরি হয় পাথর, খনিজ ও মৃত জীব না উদ্ভিদদেহের টুকরার সিমেন্টেশন ও জমাট প্রক্রিয়ার দরুন কিংবা পানিতে রাসায়নিক পদার্থ ও জৈব দ্রব্য পতিত এবং বৃদ্ধি হওয়ার ফলে যাকে সেডিমেন্টেশন বলা হয়। [১০] এই প্রক্রিয়ার ফলে পাথরের টুকরা তৈরি হয় কিংবা জৈব কণাগুলো একত্র হয়ে জমাট বাঁধে এবং এই প্রক্রিয়ার ফলে খনিজ দ্রব্য দ্রবণ থেকে বাষ্পীভূত হয়ে যায়। এরপরে কণাগুলো স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও চাপে সিমেন্টেশন প্রক্রিয়া অতিক্রম করে।

পলি/পললসমূহ (সেডিমেন্ট) জমা হওয়ার পূর্বে, পলিসমূহ পাথরের ওয়েদারিং ও ভাঙ্গনের ফলে গঠিত হয় এবং পানি, বায়ু, বরফ, ও যথেষ্ট ঘনত্ববিশিষ্ট বরফ গ্ল্যাসিয়ার এর চলাচলের কারণে জমাট বাঁধার স্থানে গমন করে। [] আয়তনের দিক থেকে, ক্রাস্টের ৭.৯% তৈরি হয় পাললিক শিলা দ্বারা, ৮২% শতাংশ থাকে শ্লেটজাতীয় নরম শিলা এবং বাকি অংশ চুনাপাথর, বেলেপাথর ও এক প্রকার পাললিক শিলা আর্কোজ দ্বারা পূর্ণ থাকে। [১১] কিছু কিছু পাললিক শিলার ভেতরে ফসিল পাওয়া যায়। পাললিক শিলা গঠন হয় অভিকর্ষের প্রভাবে ও সাধারণত স্ট্রাটাম এর অনুভূমিক স্তরের কাছে জমাট বাঁধে। এদেরকে হয়ত এজন্যই কখনো কখনো স্ট্র‍্যাটিফাইড রক বলা হয়। [১২]

রূপান্তরিত শিলা

সম্পাদনা
 
মেটামরফিক ব্যান্ডেড নাইস

রূপান্তরিত শিলা অন্যান্য যে কোনো শিলা যেমনঃ আগ্নেয় শিলা, পাললিক শিলা হতে ভিন্ন তাপমাত্রা ও চাপের প্রভাবে তৈরি হয়। এই ভৌত অবস্থা শুরুতে যে পাথর তৈরি হয় তার থেকে আলাদা হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে রূপান্তর বলা হয়,যার অর্থ হলো অবস্থার পরিবর্তন। এর ফলে গভীরভাবে শিলাটির বাহ্যিক ও রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। প্রথম বা আসল যে শিলাটি থাকে তাকে প্রোটোলিথ বলা হয়, প্রোটোলিথ থেকেই রূপান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয় যা অবশেষে রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হয়। [১৩] এই প্রোটোলিথ পুনরায় কেলাসিত হওয়ার ফলে অন্য ধরনের খনিজে পরিবর্তন হয় কিংবা একই খনিজের অন্য অবস্থা লাভ করে। এই প্রক্রিয়ার জন্য যে তাপমাত্রা ও চাপ দরকার যা পৃথিবীর পৃষ্ঠতলের চেয়েও বেশিঃ তাপমাত্রা হতে হয় ১৫০ থেকে ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও চাপ হতে হয় ১৫০০ বার।[১৪] আয়তনের হিসাবে, ক্রাস্টের ২৭.৪% গঠন করে রূপান্তরিত শিলা। []

রূপান্তরিত শিলার প্রধান তিনটি শ্রেণি তাদের গঠন প্রক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল। লাভার কাছে থাকা শিলা যখন লাভার উচ্চ তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসে তখন "সংস্পর্শ রূপান্তর" এর প্রক্রিয়া শুরু হয়- যা একটি তাপমাত্রা প্রধান রূপান্তর প্রক্রিয়া। চাপীয় রূপান্তর প্রক্রিয়া তখন শুরু হয় পলিসমূহ মাটির গভীর নিচে চাপা পড়ে থাকে; চাপ বেশি প্রভাব ফেলে এবং তাপমাত্রা খুবই কম ভূমিকা রাখে। একে গোর রূপান্তর (ইংরেজিঃ Burial metamorphism) বলা হয়। জেড এর মত শিলায় এ ধরনের রূপান্তর দেখা যায়। তবে যে ক্ষেত্রে তাপ এবং চাপ উভয়ই ভূমিকা রাখে সে ক্ষেত্রে একে রিজিওনাল রূপান্তর বলে। পাহাড়-পর্বত বিশিষ্ট অঞ্চলে সাধারণত এরূপ দেখা যায়। []

গঠনের উপর ভিত্তি করে রূপান্তরিত শিলাকে দুইটি সাধারণ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। যাদের বাহ্যিক গঠন স্তরবিশিষ্ট তাদেরকে ফলিয়েটেড (ভাঁজযুক্ত) রূপান্তরিত শিলা ও এছাড়া বাকিদেরকে নন-ফলিয়েটেড রূপান্তরিত শিলা বলা হয়। তখন শিলার নামকরণ হয় শিলাতে খনিজ পদার্থের উপস্থিতি বিবেচনা করে। শিস্ট এক ধরনের ভাঁজযুক্ত রূপান্তরিত শিলা যারা মিকা এর মতো ফলকবিশিষ্ট খনিজ দ্বারা তৈরি। নেইজ জাতীয় শিলার দেহে বিভিন্ন আলোর দৃশ্যমান ব্যান্ড বিদ্যমান, শিলাটির একটি সাধারণ উদাহরণ হচ্ছে গ্রানাইট নেইজ। এছাড়াও অন্যান্য ধরনের ভাঁজযুক্ত রূপান্তরিত শিলার মধ্যে রয়েছে স্লেট, ফাইলাইটসমায়লোনাইট। কিছু ভাঁজহীন রূপান্তরিত শিলার উদাহরণ হলো মার্বেল, সাবানপাথর বা সাজিমাটি ও সার্পেনটাইন]]। এই শ্রেণির একটি শিলা হলো কোয়ার্টজাইট যা বেলেপাথর ও হর্নফেলের একটি রূপান্তরিত রূপ। []

মানুষ কর্তৃক ব্যবহার

সম্পাদনা
 
মঙ্গোলিয়ার আনুষ্ঠানিক শিলাস্তূপ, একটি ওভো

শিলার ব্যবহার মানবজাতির সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিশাল প্রভাব ফেলে। প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বছর আগে হতে মানুষ ও প্রাইমেট বর্গীয় অন্যান্য প্রাণি শিলা ব্যবহার করতে শুরু করে।[১৫] এর মধ্যে রয়েছে লিথিক প্রযুক্তি যা একটি পুরোনো ও এখনো চলমান একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পাথর তৈরি করা হয়। খনি প্রকৌশল অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরের শিলা হতে খনিজ উত্তোলন মানবজাতির উন্নয়নে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ এবং এটি একেক স্থানে একেক হারে উন্নয়ন সাধন করেছে কারণ অঞ্চলভেদে শিলার খনিজের পার্থক্য দেখা দেয়।

খনি প্রকৌশল

সম্পাদনা

খনি প্রকৌশল হচ্ছে ভূ-পৃষ্ঠের ও্যর, ভেইন কিংবা স্ট্রাটাম হতে মূল্যবান খনিজ পদার্থ আহরণ।[১৬] মাটি অপসারণ করাও এই বিষয়টির ভেতরে পড়ে। খনি প্রকৌশলের ফলে যেসব পদার্থ আহরণ করা যায় সেগুলো হলো ক্ষার ধাতু, উৎকৃষ্ট ধাতু, আয়রন, ইউরেনিয়াম, কয়লা, হীরক, চুনাপাথর, স্লেট, খনিজ লবণ, পটাশ, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত জিনিস ও বিশেষ বৈশিষ্ট্যের ডাইমেনশন পাথর।

যেসব জিনিস প্রাকৃতিকভাবে কিংবা কৃষিকাজের ফলে জন্মায় না কিংবা গবেষণাগার ও ফ্যাক্টরিতেও প্রস্তুত করা যায় না সেসব জিনিস লাভের জন্য খনি প্রকৌশল দরকার হয়। বৃহৎ অর্থে, খনি প্রকৌশল ভূ-পৃষ্ঠ হতে যেকোনো পদার্থ (যেমনঃ পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস, লবণ ও এমনকি পানি আহরণের ব্যাপারটিকে প্রকাশ করে। [১৭]

শিলা ও খনিজের খননকার্য প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে হয়ে আসছে। আধুনিক খনি প্রকৌশল প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে প্রথমে খনি জমা থাকতে পারে এমন সম্ভাব্য এলাকা পরীক্ষা করা, প্রস্তাবিত খনি কার্যের লাভ বিশ্লেষণ, আকাঙ্ক্ষিত পদার্থের উত্তোলন এবং অবশেষে খনিকার্য শেষ হওয়ার পরে উক্ত স্থানকে অন্যান্য কাজের জন্য মেরামত করে তোলা। [১৮]

তবে খনিকার্যের ফলে পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে এমনকি খনিকার্য শেষ হওয়ার অনেকদিন পর্যন্ত প্রভাবটি থাকতে পারে। এই সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাবগুলো রোধের উদ্দেশ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খনিকার্যের জন্য কিছু বিধান প্রণীত হয়েছে। [১৯]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Tarbuck; Lutgens, s 194
  2. Harbaugh, John W.; Windley, Brian Frederick। "Geology"Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৯ 
  3. Cipriani, Nicola (১৯৯৬)। The encyclopedia of rocks and minerals। New York: Barnes & Noble। আইএসবিএন 978-0-7607-0291-8 
  4. Blatt, Harvey; Tracy, Robert J. (১৯৯৬)। Petrology (2nd সংস্করণ)। W.H. Freeman। আইএসবিএন 978-0-7167-2438-4 
  5. Heinen, Wouter; Oehler, John H. (১৯৭৯)। "Evolutionary Aspects of Biological Involvement in the Cycling of Silica"। Trudinger, P.A.; Swaine, D.J.। Biogeochemical Cycling of Mineral-Forming Elements। Amsterdam: Elsevier। পৃষ্ঠা 431। আইএসবিএন 9780080874623। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০২০ 
  6. A collector's guide to rock, minerals & fossil localities of Utah
  7.   One or more of the preceding sentences একটি প্রকাশন থেকে অন্তর্ভুক্ত পাঠ্য যা বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনেFlett, John Smith (১৯১১)। "Petrology"। চিসাম, হিউ। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ21 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 327। 
  8. Condie, Kent C. (২০১৫)। Plate Tectonics & Crustal Evolution (2nd সংস্করণ)। New York: Pergamon। পৃষ্ঠা 68। আইএসবিএন 9781483100142। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০২০ 
  9. Petrogenesis of Metamorphic Rocks
  10. Gilluly, James (১৯৫৯)। Principles of Geology । W.H. Freeman। 
  11. Plate tectonics & cluster evolution
  12. Monroe, James S.; Wicander, Reed (২০০৮)। The Changing Earth: Exploring Geology and Evolution (5th সংস্করণ)। Belmont, CA: Brooks/Cole। পৃষ্ঠা 438। আইএসবিএন 9780495554806। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০২০ 
  13. Blatt, Harvey; Tracy, Robert J. (1996). Petrology (2nd ed.). W.H. Freeman.
  14. Blatt, Harvey and Robert J. Tracy, Petrology, W.H.Freeman, 2nd ed., 1996, p. 355 আইএসবিএন ০-৭১৬৭-২৪৩৮-৩
  15. William Haviland, Dana Walrath, Harald Prins, Bunny McBride, Evolution and Prehistory: The Human Challenge, p. 166
  16. Gajul, Shekhar (২৮ জুলাই ২০১৮)। "Underground Mining Equipment Market 2017 Global Key Players, Share, Challenges, Industry Size, Growth Opportunities & Forecast To 2021"Journalist Book। ২৮ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  17. Botin, J.A., সম্পাদক (২০০৯)। Sustainable Management of Mining Operations। Denver, CO: Society for Mining, Metallurgy, and Exploration। আইএসবিএন 978-0-87335-267-3 
  18. Wilson, Arthur (১৯৯৬)। The Living Rock: The Story of Metals Since Earliest Times and Their Impact on Developing Civilization। Cambridge, England: Woodhead Publishingআইএসবিএন 978-1-85573-301-5 
  19. Terrascope। "Environmental Risks of Mining"The Future of strategic Natural Resources। Cambridge, Massachusetts: Massachusetts Institute of Technology। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 

আরোও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা