শাহীন দিল-রিয়াজ (জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯) হলেন একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত জার্মান সাংবাদিক, চিত্রগ্রাহক, পরিচালক ও লেখক। ১৯৯২ সাল থেকে তিনি জার্মানির বার্লিনে বসবাস করছেন। চট্টগ্রাম সীতাকুন্ড এলাকায় জাহাজ কাটা শ্রমিকদের জীবন নিয়ে নির্মাণ করা কোরানকিন্ডার-এর জন্য ২০১০ সালে এবং প্রজেকশনিস্ট জীবন নিয়ে নির্মিত ডের ফোরফিউরার-এর জন্য ২০১৩ সালে দুইবার আডল্ফ গ্রিমে পুরস্কার লাভ করেন।

শাহীন দিল-রিয়াজ
জন্ম (1969-02-12) ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ (বয়স ৫৫)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
শিক্ষাশিল্পকলার ইতিহাস
মাতৃশিক্ষায়তনফ্রি ইউনিভার্সিটি, বার্লিন
পেশাসাংবাদিক, চিত্রগ্রাহক, পরিচালক, লেখক
পুরস্কারআডল্ফ গ্রিমে পুরস্কার

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

দিল-রিয়াজ ১৯৬৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নোয়াখালী জেলা একটি স্কুলে পড়াশুনা করে এবং পরে ঢাকার ও কুমিল্লার মিলিটারিস স্কুলে পড়াশুনা করেন। তিনি ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব সংস্থার সাথে জড়িত ছিলেন এবং বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ সালে তিনি ঢাকার গ্যোটে ইনস্টিটিউশনে জার্মান ভাষা শিখেন এবং ১৯৯২ সালে বার্লিন গ্যোটে ইনস্টিটিউশন থেকে বৃত্তি পেয়ে দুই মাসের কোর্স করতে জার্মানি যান। পরবর্তীতে তিনি বার্লিনে ফ্রি ইউনিভার্সিটিতে ভারতীয় শিল্পকলার ইতিহাস ও মঞ্চ শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার পর তিনি ১৯৯৫ সালে পট্‌সডাম-বাবেলস্‌বার্গের এইচএফএফ কনরাড উল্ফ থেকে চিত্রগ্রহণ কোর্স করেন।[]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

২০০২ সালে দিল-রিয়াজ যমুনা নদীর তীরবর্তী চরের জীবন নিয়ে নির্মাণ করেন সান্ড উন্ড ভাসের (বালি ও পানি) প্রামাণ্যচিত্র, যা তাকে খ্যাতি ও পুরস্কার এনে দেয়।[] ২০০৯ সালে তিনি বাংলাদেশে চট্টগ্রাম সীতাকুন্ড এলাকায় জাহাজ কাটা শ্রমিকদের জীবন নিয়ে নির্মাণ করেন প্রামাণ্যচিত্র কোরানকিন্ডার (লোহাখোর)। এই প্রামাণ্যচিত্রের জন্য তিনি ২০১০ সালে আডল্ফ গ্রিমে পুরস্কার লাভ করেন[] এবং ডুইসবার্জার ফিল্মওখে থেকে দর্শক পুরস্কার লাভ করেন। ২০১০ সালে তিনি কন্সটাঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের কুল্টুরভিসেন্সচাফ্‌টালিখে কলেজ থেকে ফেলোশিপ লাভ করেন। ২০১১ সালে তিনি রিউর ইউনিভার্সিটি বোচাম এবং ২০১২ সালে কন্সটাঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। প্রজেকশনিস্ট জীবন নিয়ে তিনি নির্মাণ করেন ডের ফোরফিউরার (২০১২)। এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি দ্বিতীয়বারের মত আডল্ফ গ্রিমে পুরস্কার লাভ করেন।[]

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

দিল-রিয়াজের পছন্দের ছবি হল সত্যজিৎ রায় পরিচালিত জন অরণ্য এবং আন্দ্রেই তার্কভ্‌স্কি পরিচালিত জেরকাওয়া[]

চলচ্চিত্রের তালিকা

সম্পাদনা
বছর চলচ্চিত্রের শিরোনাম বাংলা নাম টীকা
১৯৯৫ এইন টাগ, জেডেন টাগ একদিন প্রতিদিন স্বল্পদৈর্ঘ্য
১৯৯৮ আউগেন হোরেন, ওহরেন সেহেন চোখে দেখা, কানে শুনা স্বল্পদৈর্ঘ্য
২০০২ সান্ড উন্ড ভাসের বালি ও পানি প্রামাণ্যচিত্র
২০০৫ ডি গ্লুক্লিখ্‌স্টেন মেন্সশেন ডের ভেট পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ প্রামাণ্যচিত্র
২০০৮ আইসেনফ্রেসার লোহাখোর প্রামাণ্যচিত্র
২০০৯ কোরানকিন্ডার কোরানকিন্ডার প্রামাণ্যচিত্র
২০১১ ডের নেৎজভার্কার নেটওয়ার্কার স্বল্পদৈর্ঘ্য
২০১২ শুল্টার আন শুল্টার কাঁধে কাঁধ প্রামাণ্যচিত্র
২০১২ ডের ফোরফিউরার উপস্থাপক স্বল্পদৈর্ঘ্য
২০১৫ ফের্নগ্লুক ফের্নগ্লুক প্রামাণ্যচিত্র

পুরস্কার

সম্পাদনা
আডল্ফ গ্রিমে পুরস্কার
  • ২০১০: কোরানকিন্ডার
  • ২০১৩: ডের ফোরফিউরার

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Shaheen Dill-Riaz"LEMME FILM (জার্মান ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০১৭ 
  2. "Shaheen Dill-Riaz BIOGRAFIE"filmportal। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০১৭ 
  3. "২০১০ সালের 'আডল্ফ গ্রিমে' পুরস্কার পেলেন শাহীন দিল-রিয়াজ"ডয়চে ভেলে। ৮ এপ্রিল ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৭ 
  4. "আবার 'আডল্ফ গ্রিমে' জিতলেন শাহীন দিল-রিয়াজ"ডয়চে ভেলে। ১৫ এপ্রিল ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৭ 
  5. "সময়ের তারকা - শাহীন দিল-রিয়াজ"দৈনিক প্রথম আলো। ২২ মে ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা