লিপ সেকেন্ড

পৃথিবীর আহ্নিক গতির সঙ্গে সঙ্গতির জন্য অতিরিক্ত সেকেন্ড

লিপ সেকেন্ড হচ্ছে সর্বজনীন সমন্বিত সময়ে (ইউটিসি) এক সেকেন্ডের সংশোধন, যা পারমাণবিক ঘড়ি দ্বারা নির্ণীত নিখুঁত আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সময় (টিএআই) এবং খুঁতসহ নিরীক্ষিত সৌর সময়ের (ইউটি১) মধ্যে সামঞ্জস্য আনার জন্য যোগ করা হয়। পৃথিবীর আহ্নিক গতির অনিয়ম এবং দীর্ঘমেয়াদি হ্রাসের জন্য নিরীক্ষিত সৌর সময় পরিবর্তিত হয়। আন্তর্জাতিক সময়রক্ষণের জন্য ব্যবহৃত ইউটিসি সময় কাল গণনার জন্য টিএআই ব্যবহার করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ইউটি১-এর সঙ্গে সঙ্গতি না রাখলে এটি নিরীক্ষিত সৌর সময়কে এগিয়ে যাবে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়। ১৯৭২ সালে লিপ সেকেন্ড চালু হয়েছিল এবং তখন থেকে ইউটিসি সময়ে ২৭টি লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছে।[১]

৩১ ডিসেম্বর ২০১৬-এ লিপ সেকেন্ডের সময় time.gov ওয়েবসাইটের ইউটিসি ঘড়ির একটি স্ক্রিনশট

যেহেতু বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনার জন্য পৃথিবীর আহ্নিক বেগ পরিবর্তিত হয়,[১][২] সেহেতু ইউটিসি লিপ সেকেন্ড অনিয়মিত এবং অনুমানযোগ্য নয়। ইন্টারন্যাশনাল আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফারেন্স সিস্টেমস সার্ভিস (IERS) সাধারণত ছয় মাস আগে থেকে লিপ সেকেন্ড যোগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, যাতে করে ইউটিসি ও ইউটি১ সময়ের মধ্যে পার্থক্য ০.৯ সেকেন্ডের বেশি না হয়।[৩][৪]

লিপ সেকেন্ড যোগ করার এই প্রথা মূলত একবিংশ শতাব্দীতে বিঘ্নকারী আকার ধারণ করেছে, বিশেষ করে সেইসব পরিষেবায় যারা নিখুঁত টাইমস্ট্যাম্পিং বা প্রসেস কন্ট্রোলের উপর নির্ভরশীল। এবং যেহেতু সব কম্পিউটারের সময় লিপ সেকেন্ডের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে পারে না, তাই তাদের সময় লিপ সেকেন্ড সংশোধিত সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।[৫] বিভিন্ন প্রমাণ সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার পর নভেম্বর ২০২২-এ ২৭তম ওজন ও পরিমাপ সাধারণ বৈঠকে ২০৩৫ সালে বা তার আগে লিপ সেকেন্ড বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।[৬][৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. প্রতিবেদন, নিজস্ব। "Leap Second: অদ্ভুত এক কারণে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বছর ১৯৭২, কেন জানেন?"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৬ 
  2. "IERS science background"। Frankfurt am Main: IERS। ২০১৩। ২৯ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৬ 
  3. Gambis, Danie (৫ জানুয়ারি ২০১৫)। "Bulletin C 49"। Paris: IERS। ৩০ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১৫ 
  4. James Vincent (৭ জানুয়ারি ২০১৫)। "2015 is getting an extra second and that's a bit of a problem for the internet"The Verge। ১৭ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. Finkleman, David; Allen, Steve; Seago, John; Seaman, Rob; Seidelmann, P. Kenneth (২০১১)। "The Future of Time: UTC and the Leap Second"American Scientist99 (4): 312–319। arXiv:1106.3141 এসটুসিআইডি 118403321ডিওআই:10.1511/2011.91.312 
  6. "Do not adjust your clock: scientists call time on the leap second"The Guardian। Agence France-Presse। ১৮ নভেম্বর ২০২২। 
  7. Gibney, Elizabeth (১৮ নভেম্বর ২০২২)। "The leap second's time is up: world votes to stop pausing clocks"। Nature612 (7938): 18। আইএসএসএন 0028-0836ডিওআই:10.1038/d41586-022-03783-5 পিএমআইডি 36400956 |pmid= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)বিবকোড:2022Natur.612...18G 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা