রূপহী
রূপহী (অসমীয়া: ৰূপহী) হলো চতুর্থ অসমীয়া ছবি যা ১৯৯৮ সালে মুক্তি মুক্তি পেয়েছিল। পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া প্রযোজিত ও পরিচালিত এই ছবির একমাত্র প্রিন্টটি ১৯৭৮ সালে সোনারী সিনেমাহলে আগুন লেগে পুড়ে যায়। এমনকি কলকাতার ফিল্ম সার্ভিসের গুদামেও চলচ্চিত্রটির সমস্ত নেগেটিভগুলি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। [১] [২]
রূপহী | |
---|---|
পরিচালক | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া |
প্রযোজক | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়ার তৈরি প্রযোজক সংস্থা 'বরুবা বোলছবি, রূপালী পাম' |
কাহিনিকার | কমলেশ্বর চলিহা |
শ্রেষ্ঠাংশে | কানন চক্ৰবৰ্তী ডানকান আচাও |
সুরকার | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া |
চিত্রগ্রাহক | বিভূতি দাস, ধীরেন দে |
প্রযোজনা কোম্পানি | শ্ৰী ভারত লক্ষ্মী ষ্টুডিও, কলকতা |
মুক্তি | ১৯৪১ |
দেশ | ভারত |
ভাষা | অসমীয়া |
কাহিনি
সম্পাদনাভূমি এবং চম্পা লুইতপারিয়ার একটি ছোট গ্রাম রূপিমুখের এক যুবক দম্পতি। তারা দুজনেই পুনর্মিলনের স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু চম্পা বড় হয়েছেন বারমেধির ঘরে। আপনি আপনার আত্মবিশ্বাসের উন্নতি করতে পারেন এমন অনেক উপায় আছে। অনেক উপায় আছে যেগুলোতে আপনি আপনার আত্মবিশ্বাসকে উন্নত করতে পারেন। নিহতের নাম ধনঞ্জয় দত্ত, শহরের আইনজীবী বিশ্বকান্ত হাজারিকার গার্ড।
কনক ও মিনতি শহরের ধনী ভদ্রলোক হরপ্রসাদ বড়ুয়ার সন্তান। তারা কিছু উত্সাহী বন্ধুদের সহায়তায় অসমীয়া শিল্প ও সাহিত্যের বিকাশে নিযুক্ত রয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্বকান্ত হাজারিকা তার অভিজাত ও তরল মনের মেয়ে মৃদুলাকে কনকের সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মার্জিত রুচির অধিকারী কনক বিয়েতে রাজি হননি।
ব্রতী সংগঠনের কিছু কাজের জন্য কনক রুপহীমুখ গ্রামে আসে। এখানেই চম্পার সাথে তাঁর প্রথম পরিচয় হয়। মায়ারামে এই পরিচয়ের সুযোগ নিয়ে আরো অধিক অর্থ উপার্জনের লোভের বশবর্তী হয়ে ব্রতী সংঘের প্রধান সদস্য পবনের কাছে চম্পার বিষয়ে মিথ্যা কথা বলে। মানবধর্মী, ভাবপ্রবণ পবন চম্পাকে অপবাদ থেকে বাঁচানোর জন্য কনককে চম্পার সাথে বিবাহ করতে বাধ্য করায়। অবশেষে কনকও এই বিবাহে সন্মতি জানায়। অন্যদিকে কনকের পিতা হরপ্রসাদ বড়ুয়া ছেলের জোরণ (বিবাহের তত্ব) নিয়ে মায়ারামের গৃহে উপস্থিত হয়। কিন্তু ভুমি ও মৃদুলার কী হয়? - তা কেবল প্রশ্ন হয়েই থেকে যায়।[১][৩][২]
অভিনয়ে
সম্পাদনা- ডানকান আচাও (ভূমি)
- কানন চক্ৰবৰ্তী (চম্পা)
- গৌরী কাকতি (কনক)
- পুণ্য কৌরব (মৃদুলা)
- সুভা দত্ত (মিনতি)
- সূৰ্য বুড়ুয়া (মায়ারাম)
- শৈলেন ফুকন (বিশ্বকান্ত)
- পদ্মধর চলিহা (হরপ্ৰসাদ)
- দুলাল গোস্বামী (ধনঞ্জয়)
- মণিকা নাজির (কেতেকী)
- প্ৰদীপ চলিহা (পবন)
- তরুণ হাজারিকা (গগন)
- চারু বরদলৈ (অমর)
- দুৰ্গা ফুকন]] (বেজ)
- বাপুরাম বরা (গোচরীয়া)
- এস. এম. মহবুবুল্লা (ডাক্তার)
- শরৎ বরা (দারোগা)
- রাম দত্ত (লাটুম)
- পাৰ্বতি প্ৰসাদ বড়ুয়া (আনন্দ) আরও অনেক চরিত্রে অভিনয় করেছেন[৩]
চলচ্চিত্র নির্মাণ
সম্পাদনাদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে রূপহী চলচ্চিত্র তৈরির কাজ শুরু হয়। পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া 'বড়ুয়া বলসবি, রূপালী পাম' নামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এই সংস্থার ব্যানারেই নির্মিত হয়েছিল রূপহী। ছবিটি পরিচালনা ও প্রযোজনা সহ পার্বতী প্রসাদ এর চিত্রনাট্য, সংলাপ, গান করেছিলেন এবং তারই সাথে সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বও তিমিই সামলেছেন। রূপহীর গল্পটি কমলেশ্বর চালিহার একটি ছোটো গল্পের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। তবে ছবিটির গল্প মূল গল্প থেকে একটু আলাদা। যেমন, প্রথম অংশের শুটিং হয়েছে মাজুলিতে। দক্ষিণপাট সাতরাতে রাস নৃত্য এবং ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের দৃশ্য অন্তর্দৃষ্টি চিত্রগ্রহণের জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কলকাতায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসামে একটি ছবিরও শুটিং হয়নি। তাই পার্বতী প্রসাদকে সেই অংশটি বাদ দিয়ে পুরো গল্পটি পুনর্বিন্যাস করতে হয়েছিল। এটি ট্র্যাজেডির গল্পকে মিলনের গল্পে পরিবর্তন করে। ছবিটির শুটিং হয়েছে কলকাতার শ্রী ভারত লক্ষ্মী স্টুডিওতে। 1941 সালের 30 আগস্ট কলকাতার পূর্বী থিয়েটারে ছবিটির প্রিমিয়ার হয়। ছবিটি ১৯৪১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর গুয়াহাটির সতী [২] হাউসে (পরে বিজুলি সিনেমা ঘর) মুক্তি পায়। [৪]
সংগীত
সম্পাদনাগীত রচনা তথা সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া। কণ্ঠ দিয়েছেন চারু বরদলৈ, তরুণ হাজরিকা, দুৰ্গা ফুকন, পূৰ্ণ কৌরব ও পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া।[৩][৫]
গানের শিরোনাম | ||||
---|---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | গীতিকার | কণ্ঠশিল্পী | দৈর্ঘ্য |
১. | "নোবোলো তোক সোণর অসম" | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া | তরুণ হাজারিকা ও চারু বরদলৈ | |
২. | "জোনাক জোনাক শীতল জোনাক" | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া | পুণ্য কোঁবর | |
৩. | "বজালে আহিনে বাঁহী নে বীণ" | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া | দুর্গা ফুকন | |
৪. | "অকলশরীয়া বাটরুবা" | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া | তরুণ হাজারিকা | |
৫. | "প্রিয়তম তুমি আহিবা বুলি" | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া | দুর্গা ফুকন | |
৬. | "হাতর হেরোবা ধন বাটত হেরা পায়" | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া | |
৭. | "তোর নাই যে বন্ধোবা বাট" | পার্বতী প্রসাদ বড়ুয়া | চারু বরদলৈ |
ব্যবসা
সম্পাদনামোট দুটি প্রিন্টে রূপহী মুক্তি পায়। থিয়েটারে রূপহী ভালো করতে পারেনি। ফলাফলস্বরূপ ছবিটি ব্যবসায়িক ভাবে ব্যর্থ হয়।[১]
তথ্য সংগ্ৰহ
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ এবাৰ উভতি চাওঁ। শিশুসাৰথি প্ৰকাশন, গুৱাহাটী। ২০০১।
- ↑ ক খ গ "Assamese Movie Rupohi"। ১২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ ক খ গ ১০০ অসমীয়া চলচ্চিত্ৰৰ কাহিনী আৰু গীত। শশী শিশু প্ৰকাশন, গুৱাহাটী। ২০১৩।
- ↑ "Flashback-Ruphi (1941) আহৰণ কৰা তাৰিখ: ০২-০৪-২০১২"। ৫ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০২২।
- ↑ Babul Das (১৯৮৫)। অসমীয়া বলশাবীর গীতর প্রতিযোগিতা। বনি প্রকাশ, ডিব্রুগড়। পৃষ্ঠা ৯।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- গীতিকবি পাৰ্ৱতি প্ৰসাদ বৰুৱা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ জুন ২০১৯ তারিখে