রসুলপুর বন্দর

পশ্চিমবঙ্গের বন্দর

রসুলপুর বন্দর[২] হল একটি প্রস্তাবিত গভীর জলের বন্দর। বন্দরটি নির্মাণের অনুমতি পত্র আন্মা লাইন্স অর্জন করেছিল। বন্দরটি পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় রসুলপুর নদী মোহনায় গড়ে উঠবে। বন্দরের জলের গভীরতা ১৮ মিটার হবে। এই বন্দরটি তৈরি হলে, এটিই পশ্চিমবঙ্গ এর প্রথম বেসরকারি জাহাজ বন্দর ও পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বেশি গভীরতা যুক্ত বন্দর হবে।[১]

রসুলপুর বন্দর
অবস্থান
দেশ ভারত
অবস্থানরসুলপুর,পশ্চিমবঙ্গ,ভারত
স্থানাঙ্ক২২°০৬′ উত্তর ৮৮°০৭′ পূর্ব / ২২.১০° উত্তর ৮৮.১২° পূর্ব / 22.10; 88.12
বিস্তারিত
পরিচালনা করেআন্মা লাইন্স
মালিকআন্মা লাইন্স[১]
পোতাশ্রয়ের ধরননদী বন্দর

ইতিহাস সম্পাদনা

রসুলপুর বন্দর তৈরির দায়িত্ব ২০০৭ সালে মেকা গোষ্ঠীর শাখা আম্মা লাইন্সকে প্রদান করা হয়েছিল। বিভিন্ন আইনি জটিলতায় প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছিল না। বন্দরটি নির্মাণের প্রক্রিয়া ২০১০ সালে শুরু হলে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে পরিবেশগত নিষেধাজ্ঞার ফলে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। নিষেধাজ্ঞা ২০১৩ সালে উঠে যাবার পড় আবার নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।[১] কিন্তু রাজ্য সরকারের সহযোগিতার অভাবে নির্মান সংস্থা বন্দর নির্মান প্রকল্প স্থগিত করে।[৩][৪]

নির্মাণ কাজ সম্পাদনা

বন্দরটি নির্মাণের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র ও "কোক্টাল রেগুলুশন জোন ম্যাপ" দরকার। বন্দরটি নির্মাণের জন্য উক্ত শর্ত দুটিই নির্মাণ সংস্থা অর্জনের করে। বন্দটি নির্মাণের প্রথম ধাপে উপকূলে মাটি জমা করে প্রয়োজনীয় জমি তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বন্দরটি নির্মাণে "আম্মা লাইন্স" মোট ৬,০০০ কোটি টাকা (₹) খরচ করবে।

আম্মা লাইন্সের অনুযায়ী, যে প্রযুক্তিতে বন্দরের চ্যানেল তৈরির পরিকল্পনা করা হবে, সেই প্রযুক্তির মেধাস্বত্ব তাদের কাছে রয়েছে। ইতিপূর্বে একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে মহারাষ্ট্রে রিলায়েন্স গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলিত ভাবে রেওয়াস বন্দর নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। রেওয়াসে নাব্যতা যেখানে ১৬ মিটার হবে, সেখানে রসুলপুরের গভীরতা ১৮ মিটার হবে।

যোগাযোগ সম্পাদনা

বন্দর থেকে ৯ কিলোমিটার (৫.৬ মা) দূরে জাতীয় সড়ক ১১৬ বি অবস্থিত। রেলপথও ১০ কিমি দূরে কাঁথিতে অবস্থিত। ফলে বন্দর থেকে পন্য পরিবহনের জন্য সড়ক পথ ও রেলপথ নির্মান করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

সড়ক নির্মান পরিকল্পনা সম্পাদনা

প্রকল্পের জন্য জুনপুট থেকে কাঁথি পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার রাস্তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যাবতীয় পণ্য যাওয়া আসার জন্য এই সংযোগ জরুরি বলে উল্লেখ করে বন্দর নির্মাতা আম্মালাইন্স। কিন্তু জুনপুট-কাঁথি সড়কের উন্নয়ন পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ঘুরপথে হরিপুর থেকে কাঁথি পর্যন্ত রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করে সংস্থাটি।

আপাতত জুনপুট থেকে কাঁথি পর্যন্ত রাস্তা মাত্র দেড় লেন চওড়া। কমপক্ষে তিন লেন না-তৈরি করতে পারলে পণ্য পরিবহন সম্ভব নয়। তবে রাস্তা চওড়া করার জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন নেই। জমি বহু আগেই নিয়ে রেখেছিল সরকার। কিন্তু সেই জমি অধিগ্রহণের মানচিত্র না থাকায় সংস্থাটি সড়ক নির্মানে ব্যর্থ হয়।

মোট তেরোটি মৌজার জমি এই রাস্তায় রয়েছে। তাই রাস্তা চওড়া করার জন্য এই জমির মানচিত্র ও বিবরণ জরুরি। দক্ষিণ রামপুর, দক্ষিণ গোপীনাথপুর, খাকিনা, বেণীপুর, বিচুনিয়া-সহ তেরোটি মৌজার জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

আম্মালাইন্স প্রাথমিক সমীক্ষায় পর বিকল্প হরিপুর-কাঁথি পথে ১২ থেকে ১৫ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি পরিকল্পনা করে। তার জন্য জমির মালিকদের থেকে জমি কিনবে সংস্থা। জমি কেনার বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলে দাবি সংস্থা কর্তৃপক্ষের।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "রসুলপুর বন্দর নিয়ে আশার আলো"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ২২ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  2. "KoPT help sought in Rasulpur port plan"। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৭ 
  3. "বন্দর নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  4. "রাজ্যে গভীর সমুদ্র-বন্দর তৈরি আরও অনিশ্চিত"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ১২ আগস্ট ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮