রক্তাম্বর-ধারিণী মা

রক্তাম্বর-ধারিণী মা বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত একটি কবিতা। এটি কবি রচিত অগ্নিবীণা[] কাব্যগ্রন্থের তৃতীয় কবিতা। এ কবিতাটি কবি ১৯২২ সালের আগে কোনো সময়ে রচনা করেছিলেন, যা ১৯২২ সালে অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়।

রক্তাম্বর পর মা এবার জ্বলে পুড়ে যাক শ্বেত বসন।
রক্তাম্বর-ধারিণী মা
কবিতার রচয়িতা
কথাকাজী নজরুল ইসলাম, ১৯২১
সঙ্গীতকাজী নজরুল ইসলাম, ১৯২১

কবিতার কথা

সম্পাদনা


রক্তাম্বর পর মা একবার
           জ্ব’লে পুড়ে যাক শ্বেত বসন;
দেখি ঐ করে সাজে মা কেমন
           বাজে তরবারি ঝনন্-ঝন্ ।
সিঁথির সিঁদুর মুছে ফেল মা গো,
            জ্বাল সেথা জ্বাল কাল-চিতা ।
তোমার খডুগ-রক্ত হউক
            স্রষ্টার বুকে লাল ফিতা ।
এলাকেশে তব দুলুক ঝঞ্ঝা
            কাল বৈশাখী ভীম তুফান,
চরণ আঘাতে উদ্ গারে যেন
            আহত বিশ্ব রক্ত-বান।
নিঃশ্বাসে তব পেঁজা-তুলো সম
           উড়ে যাক মা গো এই ভুবন।
অসুর নাশিতে হউক বিষ্ণু-
           চক্র মা তোর হেম কাঁকন।
টুঁটি টিপে মারো অত্যাচারে মা,
          গল-হার হোক নীল ফাঁসি,
নয়নে তোমার ধুমকেতু-জ্বালা
          উঠুক সরোষে উদ্ভাসি’
হাস খল খল ,দাও করতালি,
          বল হর হর শঙ্কর !
আ হ;তে মা গো অসহায় সম
          ক্ষীণ ক্রন্দন সম্বর।
মেখলা ছিঁড়িয়া চাবুক কর মা,
          সে চাবুক কর নভ-তড়িৎ,
জালিমের বুক বেয়ে খুন ঝ’রে
         লালে লাল হোক শ্বেত হরিৎ।
নিদ্রিত শিবে লাথি মার আজ,
         ভাঙো মা ভোলার ভাঙ-নেশা,
পিয়াও একবার অ-শিব গরল
        নীলের সঙ্গে লাল মেশা।
দেখ মা আবার দনুজ দলনী
        অশিব -নাশিনী চন্ডী-রূপ;
দেখাও মা ঐ কল্যাণ-করই
        আনিতে পারে কি বিনাশ-স্তূপ।
শ্বেত শতদল-বাসিনী নয় আজ
        রক্তাম্বর ধারিণী মা,
ধ্বংসের বুকে হাসুক মা তোর
 সৃষ্টির নব পূর্ণিমা।


[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Uddin, Baktiar (২০২২-১১-১৭)। "'অগ্নিবীণা' : বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কাব্য"Suprobhat Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০১ 
  2. https://www.jagonews24.com। "নজরুলের কবিতা: অসাম্প্রদায়িক ও সাম্যবাদী মানস"jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০১