মোহাম্মদ ইউনুস (শিক্ষাবিদ)

মোহাম্মদ ইউনুস ছিলেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক। তিনি ২৪ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখে ইসলামী সন্ত্রাসী সংগঠন জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ কর্তৃক নিহত হন।[১][২] রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত চার অধ্যাপকের একজন ছিলেন তিনি।[৩]

কর্মজীবন সম্পাদনা

ইউনুস রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি রাজশাহীর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার ছিলেন। তিনি রাজনৈতিকভাবে উদার ছিলেন।একাত্তরের মুজিব নগর সরকারের রিসার্চ ইকোনমিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন।আজীবন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ মেনে চলেছেন।কুচবিহার ক্যাম্পে কাজ করেছেন।তার স্কুল কলেজের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন ড ওয়াজেদ মিয়া,বিখ্যাত পরমানু বিজ্ঞানী।1995 সালে তাকে শিবিরের সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে,তখন তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলেন।।।[৪][৫]

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হিসেবে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ইসলাম ধর্মাবলম্বী এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলেন।[৬]

মৃত্যু সম্পাদনা

ইউনুস ২৪ ডিসেম্বর ২০০৪ সালে সকালে হাঁটার সময় রাজশাহী শহরের বিনোদপুরে বাসা থেকে একশো হাত সামনে বাংলা ভাইয়ের সন্ত্রাসী দ্বারা নিহত হন।[৭]

বিচার সম্পাদনা

বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ শহিদুল্লাহ ওরফে মাহবুব ও সফিউল্লাহসহ ৬ জনকে হত্যার অভিযোগ এনেছে। সফিউল্লাহকে ১৩ এপ্রিল ২০০৬ সালে গ্রেফতার করা হয়। তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের প্রধান শায়খ আবদুর রহমানের নির্দেশে হত্যা করা হয়েছে। এর পরপরই বগুড়া থেকে শহিদুল্লাহ গ্রেফতার হন। তিনি জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের সামরিক প্রধান সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাইয়ের বড় ভাই রফিকুল ইসলামের জামাতা ছিলেন।[৭] অপরাধ তদন্ত বিভাগ ১০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ এ অভিযোগ দায়ের করে[৮]

২০০৯ সালে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা বাংলাদেশ হাইকোর্টে আপিল করেন যা হাইকোর্ট মঞ্জুর করেন। ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয় এবং অন্য ছয় আসামিকে খালাস দেয়। পুনর্বিচারে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি গোলাম আহমেদ খলিলুল ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে দুই আসামি শহিদুল্লাহ ও সফিউল্লাহর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।পরিবারের সদস্যরা এই রায়ে সন্তুষ্ট না।এখনো সুপ্রিম কোর্টের কোন অগ্রগতি হয়নি।[৭][৯][১০][১১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Atik, S.M.; Ali, Sujon। "4 RU teachers killed in 12yrs"New Age। ৯ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮ 
  2. "Islamic State claims killing of Bangladeshi professor"ABC News। ২৩ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮ 
  3. "Enemy of none, lover of sitar"The Daily Star। ২৪ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮ 
  4. "Rajshahi University Professor Killed & a Former AL MP Injured"VOA। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮ 
  5. "Professor Mohammad Yunus Killing: Shiksa Andolan Manch held Protest Rally"mm-gold.azureedge.net। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮ 
  6. Ramsey, Syed (২০১৭)। Pakistan and Islamic Militancy in South Asia (ইংরেজি ভাষায়)। Vij Books India Pvt Ltd। আইএসবিএন 9789386367433। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮ 
  7. "Two killers of RU professor Mohammad Yunus get death sentence reduced to life term following retrial"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮ 
  8. "Verdict in Prof Yunus murder case today"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮ 
  9. "Victims' families, colleagues blame probe failure"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২৫ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮ 
  10. "Two JMB men's death commuted to life term"observerbd.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮ 
  11. "RU prof yunus killing: Two JMB men's death sentence reduced to life-term"New Age। ৯ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৮