মোমবাতি আলোর একটি উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়, কখনো কখনো একে তাপের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এটি জ্বালানির (সাধারণত মোম) একটি কঠিন টুকরোয় তৈরি এবং এর ভেতরের একটি সলতের মাধ্যমে জ্বলতে থাকে।

মোমবাতির খুব কাছ থেকে তোলা একটি ছবিতে সলতে ও শিখার বিভিন্ন অংশ দেখা যাচ্ছে।

আজকাল বেশিরভাগ মোমই প্যারাফিন থেকে তৈরি করা হয়। এছাড়াও মোমবাতি মৌমাছির শরীর-নিঃসৃত মোম, সয়াবিন এবং অন্যান্য উদ্ভিজ্জ মোম, পশুর শক্ত চর্বি থেকে তৈরি হয়। জেল মোমবাতি প্যারাফিন ও প্লাস্টিকের মিশ্রণ থেকে তৈরি হয়।

মোমবাতির প্রস্তুতকারককে মোমবাতির কারবারি বলা হয়। মোমবাতি ধরে রাখার জন্যে হরেক রকম মোমবাতি-ধারক প্রচলিত আছে, যা সাধারণ ক্যান্ডল-হোল্ডার থেকে শুরু করে জাঁকালো ঝাড়বাতি পর্যন্ত বিস্তৃত।

দিয়াশলাই কাঠির তাপ দিয়ে মোমবাতি জ্বালানোর সময় মোমের কিছু অংশ গলে যায় এবং জ্বালানির অতি সামান্য অংশ বাষ্পীভূত করে দেয়। বাষ্পীভবন হয়ে গেলে জ্বালানি বাতাসের অক্সিজেনের সাথে মিশে শিখা তৈরি করে। এই শিখাই মোমবাতির পরবর্তী অংশটুকু জ্বালিয়ে রাখবার জন্যে প্রয়োজনীয় তাপ তৈরি করে: শিখাটির তাপ মোমবাতির ওপরের কঠিন অংশটুকু গলিয়ে ফেলে, তারপর তরল মোম সলতে বেয়ে কৈশিকতার দরুন ওপরে উঠে যায় আর বাষ্পীভূত হয়ে অক্সিজেন সহযোগে পুড়ে শিখাটিকে প্রজ্জলিত রাখে।

জ্বালানির দহন কয়েকটি পৃথক অংশে ঘটে থাকে (যা কিনা মোমের শিখার বিভিন্ন অংশে রং এর পার্থক্য থেকে বলা যায়)। নীল অংশে দহনযোগ্য জ্বালানি থেকে হাইড্রোজেন পৃথক হয় এবং পুড়ে গিয়ে পানি বাষ্প তৈরি করে। উজ্জ্বল, হলুদ অংশটুকুতে কার্বন পুড়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড তৈরি হয়।

ধীরে ধীরে মোমবাতির কঠিন অংশটুকু গলতে থাকে, আর মোমের দৈর্ঘ্যও ছোট হতে থাকে। সলতের যে অংশে তরল মোম বাষ্পীভূত হয় না তা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সলতের এই ভস্মীভবনের মাধ্যমে এর অতিরিক্ত দৈর্ঘ্য নিয়ন্ত্রিত হয়, যা দহনের তাপমাত্রা এবং জ্বালানি ব্যয় একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় ধরে রাখে। আবার কোন কোন সলতে ছেঁটে দিয়ে সুস্থির শিখাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা হয়।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Commoncat