মে সায়েঘ

ফিলিস্তিনি কবি ও কর্মী

মে মুসা সায়েঘ (আরবি: مي الصايغ; জন্ম ১৯৪০) হলেন একজন ফিলিস্তিনি কবি, নারীবাদী, রাজনৈতিক কর্মী এবং লেখক।

মে সায়েঘ
مي الصايغ
জন্ম১৯৪০ (বয়স ৮৩–৮৪)
জাতীয়তাফিলিস্তিনি
পেশাকবি, কর্মী, নারীবাদী

জীবনী সম্পাদনা

সায়েঘ ১৯৪০ সালে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিনের গাজা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন ও সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।[১] ১৯৫৪ সালে, তিনি ফিলিস্তিন অঞ্চলের বাথ পার্টির মহিলা বিভাগের প্রধান ছিলেন।[২] ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধ এবং গাজা ভূখণ্ড দখলের পর, তিনি গাজা ছেড়ে পালিয়ে বৈরুতে বসবাস শুরু করেন।

১৯৭৬ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার (পিএলও) মহিলা ইউনিয়নের মহাসচিব এবং প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল কাউন্সিলের (পিএনসি) সদস্য ছিলেন।[৩] ১৯৬৪ সালে পিএনসির সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ জেনারেল ইউনিয়ন অফ প্যালেস্টিনিয়ান উইমেন ১৯৬৫ সালে গঠিত হয়েছিল।[২] তার শক্তিশালী জায়নবাদ বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তিনি পরিচিত, তিনি বলেছিলেন যে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনের মুক্তি।

তিনি ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের মধ্যে, বিশেষ করে রাজনৈতিকভাবে নারীদের অধিকারের পক্ষে একজন স্পষ্টভাষী আইনজীবী, ফিলিস্তিন জাতীয় কাউন্সিল ও নীতি নির্ধারণে নারীদের অধিকতর অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানান। সায়েঘ বিশ্বাস করতেন যে নারী ও পুরুষের বিচ্ছিন্নতা বৈষম্যের একটি রূপ, কারণ এটি আন্দোলনে পুরুষদের অগ্রাধিকার দেয়। ১৯৬৮ সালে, তিনি ফাতাহের পুরুষদের নারীকে তাদের লিঙ্গের উপর ভিত্তি করে নেতৃত্ব দেওয়ার নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন এবং অবশেষে তিনি তৃণমূল পর্যায়ে লিঙ্গ সমতার দিকে নিয়ে যান।[৪] নারীর ক্ষমতায়নে তার সাহসী দৃষ্টিভঙ্গি সমালোচিত হয়েছিল, ১৯৮৮ সালে একজন ভাষ্যকার বলেছিলেন "তিনি খুব বেশি চিৎকার করেন"।[৫] তিনি ১৯৮০ সালে কোপেনহেগেনে জাতিসংঘের নারী সম্মেলনের বক্তা ছিলেন, যেখানে তিনি শান্তি, সমতা ও উন্নয়নে তার বক্তৃতার জন্য "বজ্রধ্বনি করতালি" পেয়েছিলেন।[৬] তিনি বলেছিলেন যে সম্মেলনের ফলাফল কেবল ফিলিস্তিনিদের জন্য নয়, "বর্ণবাদ, শোষণ এবং বিদেশী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করা সমস্ত জনগণের জন্য"।

ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে নারীদের মুখোমুখি লড়াই নিয়েও সায়েঘ কবিতা লিখেছেন।[৭] তার কবিতাগুলি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলজুড়ে বিশিষ্ট আরব পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, যেমনঃ লেবাননের আল-আদাব পত্রিকা, ইরাকের আকলাম পত্রিকা। তিনি বৈরুত, বাগদাদ, কুয়েত সিটি, ওমান এবং কায়রো সহ আরব বিশ্ব জুড়ে কবিতা উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন। সায়েঘের বিয়ে হয়েছে ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার কর্মকর্তা আবু হাতেমের সঙ্গে।[১] তাদের ৪টি সন্তান রয়েছে।

স্বীকৃতি সম্পাদনা

১৯৮০-এর দশকে কিউবার সভাপতি ফিদেল কাস্ত্রোর কাছ থেকে সায়েঘ আনা বেতানকোর্ট পুরস্কার পান।[৩]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Turki, Fawaz (১৯৮৮)। Soul in Exile (ইংরেজি ভাষায়)। NYU Press। আইএসবিএন 978-0-85345-747-3 
  2. Pappe, Ed (১৯৯৯)। The Israel/Palestine Question (ইংরেজি ভাষায়)। Psychology Press। আইএসবিএন 978-0-415-16948-6 
  3. "الصفحة الرئيسية - وزارة الثقافة"culture.gov.jo। ২০২১-০৬-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-১৪ 
  4. Matos, Christine De; Ward, Rowena (২০১২-০৪-২৭)। Gender, Power, and Military Occupations: Asia Pacific and the Middle East since 1945 (ইংরেজি ভাষায়)। Taylor & Francis। আইএসবিএন 978-1-136-33934-9 
  5. "Women in the PLO: rifles, fatigues, but no veils"Christian Science Monitor। ১৯৮১-০৭-৩১। আইএসএসএন 0882-7729। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-১৪ 
  6. "CONTENTdm"content.library.arizona.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-১৪ 
  7. Abdelrazek, Amal Talaat (২০০৭)। Contemporary Arab American Women Writers: Hyphenated Identities and Border Crossings (ইংরেজি ভাষায়)। Cambria Press। আইএসবিএন 978-1-62196-957-0