মুহাম্মদ ইয়াকুব খান

মুহাম্মদ ইয়াকুব খান (১৮৪৯ – ১৫ নভেম্বর ১৯২৩) ছিলেন আফগানিস্তানের আমির। ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি আমিরের পদে ছিলেন। তিনি তার পূর্ববর্তী শাসক শের আলি খানের পুত্র।

মুহাম্মদ ইয়াকুব খান
আফগানিস্তানের আমির
মুহাম্মদ ইয়াকুব খান
আফগানিস্তানের আমির
রাজত্ব১৮৭৯
পূর্বসূরিশের আলি খান
উত্তরসূরিমুহাম্মদ আইয়ুব খান
জন্ম১৮৪৯
মৃত্যু১৫ নভেম্বর ১৯২৩
রাজবংশবারাকজাই রাজবংশ
পিতাশের আলি খান

মুহাম্মদ ইয়াকুব খান হেরাত প্রদেশের গভর্নর ছিলেন। ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তার পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরে ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বন্দী হন।

১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ শুরু হয়। শের আলি খান পরে রাজধানী থেকে পালিয়ে যান। পরের বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের উত্তরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার উত্তরসুরি ইয়াকুব খান ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে ব্রিটেনের সাথে গান্দমাকের সন্ধি স্বাক্ষর করেন। এর ফলে আফগানিস্তানের বৈদেশিক সম্পর্কের নিয়ন্ত্রণ ব্রিটেনের হাতে যায়। একই বছরের অক্টোবরে মুহাম্মদ আইয়ুব খান এই সন্ধির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ফলশ্রুতিতে ইয়াকুব খান পদত্যাগ করেন।[১] এরপর আইয়ুব খান আমির হন।

গান্দমাকের সন্ধি সম্পাদনা

 
আফগানিস্তানের গান্দমাক, মে ১৮৭৯। বাম থেকে ডানে: ব্রিটিশ অফিসার জেনকিন্স ও মেজর কাভাগনারি, আমির ইয়াকুব খান (মধ্যে), জেনারেল দাউদ শাহ ও হাবিবউল্লাহ মুস্তাফি।

দ্বিতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের সময় ব্রিটিশরা আমির শের আলি খানের বাহিনীকে পরাজিত করেন। নতুন আমির ইয়াকুব খানকে ব্রিটিশদের শর্ত প্রদান করা হয়। এই আলোচনায় পিয়েরে লুই নেপোলিয়ন কাভাগনারি অন্যতম প্রধান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া আর্মির ১ম বেঙ্গল ফুসিলিয়ার্স‌ে দায়িত্বপালন করেছেন। পরে তাকে রাজনৈতিক দপ্তরে বদলি করা হয়। তিনি পেশওয়ারের ডেপুটি কমিশনার হয়েছিলেন। ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ভাইসরয় লর্ড লিটন তাকে কাবুলে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিলেন। তবে আফগানরা তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। দ্বিতীয় আফগান যুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণসমূহের মধ্যে এই ঘটনা অন্যতম।

 
আমির ইয়াকুব খানের মুসতানফি হাবিবউল্লাহ খান

১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে ইয়াকুব খান গান্দমাক আসেন। এখানে কাভাগনারির সাথে তার আলোচনা হয়। আলোচনার ফলশ্রুতিতে গান্দমাকের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। ইয়াকুব খান ব্রিটিশদের নিকট অঞ্চল সমর্পণ করেন এবং কাবুলে ব্রিটিশ দূতের অবস্থান মেনে নেন। জুলাই মাসে কাভাগনারি কাবুলে ব্রিটিশ রেসিডেন্টের পদ গ্রহণ করেন। তিনি বেপরোয়া ও অহংকারী হিসেবে পরিচিতি পান। তার এরূপ আচরণ অনেক ইংরেজের কাছেও অগ্রহণযোগ্য বিবেচিত হত। কাবুলের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে পড়ার পর আমিরের কাছে বেতন না পাওয়া কিছু সৈনিক সেপ্টেম্বরে বিদ্রোহ করে ও রেসিডেন্সি আক্রমণ করে কাভাগনারিকে হত্যা করে। এরপর ব্রিটিশরা কাবুল দখল করার জন্য অগ্রসর হয় এবং আফগানদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। ইয়াকুব খান ক্ষমতা ত্যাগ করে ব্রিটিশ শিবিরে আশ্রয় নেন। ডিসেম্বরে তাকে ভারতে পাঠানো হয়।[১]

মৃত্যু সম্পাদনা

মুহাম্মদ ইয়াকুব খান ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1.   চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Yakub Khan"ব্রিটিশ বিশ্বকোষ28 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 898। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

রাজত্বকাল শিরোনাম
পূর্বসূরী
শের আলি খান
আফগানিস্তানের আমির
১৮৭৯
উত্তরসূরী
আইয়ুব খান