মুস্তাফা সুফি

তুর্কি রাজনীতিবিদ

মুস্তাফা সুফি (১৮৮৩- ২৮ জানুয়ারি ১৯২১) ছিলেন একজন তুর্কি সমাজতান্ত্রিক নেতা।

মুস্তাফা সুফি
জন্ম১৮৮৩
গায়ারসান প্রদেশ, অটোমান সাম্রাজ্য
মৃত্যু২৮ জানুয়ারি ১৯২১(1921-01-28) (বয়স ৩৭–৩৮)
জাতীয়তাতুর্কি
পরিচিতির কারণতুরস্কের কমিউনিস্ট দল প্রতিষ্ঠার জন্য

জীবনী সম্পাদনা

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

মুস্তাফা সুফি ১৮৮৩ সালে তৎকালীন অটোমান সাম্রাজ্যের (বর্তমানে তুরস্কের অন্তর্গত) গায়ারসান প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। গালাতাসারায় উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নের পূর্বে তিনি জেরুজালেম, দামেস্ক ও এরজুরুমে শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি প্যারিসে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করার পাশাপাশি সেখানে তুর্কি সংবাদপ্ত্র "তানিন" এর একজন সংবাদপ্রেরকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯১০ সালে তুরস্কে ফিরে আসেন এবং "ইফহাম" পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি আইন ও অর্থনীতি বিষয়ে বক্তার ভূমিকাও পালন করেন। ১৯১৩ সালে তিনি মাহমুদ সেভকেত পাশার হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার দায়ে অভিযুক্ত হন এবং সিনপে পনের বছর নির্বাসনের সাজাপ্রাপ্ত হন। এখানে তিনি পশ্চিমা দর্শন বিষয়ে "ইকতিহা" ও "হক" সাময়িকীতে প্রবন্ধ লিখেন। ১৯১৪ সালে তিনি সিনপ থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় চলে যান। সেখানে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাদুর্ভাবে রুশ কর্তৃপক্ষ তাকে একজন যুদ্ধবন্দি হিসেবে বিবেচনা করে এবং উরাল অঞ্চলে নির্বাসনে পাঠায়।

সাম্যবাদী সক্রিয়তা সম্পাদনা

 
তুরস্কের কমিউনিস্ট দলের প্রতিষ্ঠাতা মুস্তাফা সুফি (ডানে), সাধারণ সম্পাদক এথেম নেজাত (মধ্যে) এবং ইসমাইল হাক্কি (বামে)
 
১৯১৯ সালে তুর্কি ভাষায় অনুদিত মুস্তাফা সুফির কমিউনিস্ট দলের ইশতেহার (অসম্পূর্ণ)

১৯১৫ সালে উরালে থাকাকালীন মুস্তাফা সুফি বলশেভিক পার্টিতে যোগদান করেন। ১৯১৮ সালের জুলাই মাসে মস্কোতে তুর্কি বামপন্থী সমাজতন্ত্রীদের মহাসভা সংগঠনে তিনি সাহায্য করেন এবং নভেম্বরে মাস্কমে জড়িয়ে পড়েন। তিনি নারকোমনাটসের "নিখিল রাশিয়া মুসলিম কর্মীদের কেন্দ্রীয় কমিটি" বিভাগে নির্বাচিত হন। তিনি মিরসায়েত সোল্টানগালিয়েভের কার্যনির্বাহকের ভূমিকাও পালন করেন।[১] তিনি ইস্টার্ন পাবলিসিটি ব্যুরোর তুর্কি বিভাগের চেয়ারপার্সন ছিলেন। ১৯১৯ সালে তিনি আন্তর্জাতিক কমিউনিস্টের প্রথম মহাসভায় তুরস্কের প্রতিনিধিত্ব করেন। একই বছর তিনি "ইয়েনি দুনিয়া" (নতুন বিশ্ব) প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি তুর্কি যুদ্ধবিন্দিদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ভিত্তি জনপ্রিয় করার জন্য কাজ করত[২]

১৯২০ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর বাকুতে তুরস্কের কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম মহাসভায় সুফিকে সভাপতি নিযুক্ত করা হয় এবং এরপর সুফি আনাতোলিয়াতে যান। তিনি ছিলেন সেই ১৫ জন তুর্কি কমিউনিস্টদের মধ্যে একজন যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগদানের জন্য তুরস্কে গিয়েছিল।এরজুরুমে কমিউনিস্টরা বাধার সম্মুখীন হলে বাকুতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে।১৯২১ সালের ২৮শে জানুয়ারি রাতে ট্রাবজন থেকে নৌপথে ভ্রমণ শুরু করলে তারা নাবিক ইয়াহিয়ার হাতে নিহত হন। অন্যান্য সূত্রমতে তিনি ট্রাবজনে এনভারের সমর্থক একটি দলের দ্বারা নিহত হয়েছিলেন। কারণ সুফি হয়ত এনভারের মস্কোতে রাজনৈতিক কার্যক্রমের পরিকল্পনা এবং তুর্কি জাতীয়তাবাদীদের পতনের পরে বলশেভিকদের ব্যবহার করে ক্ষমতা লাভের আকাঙ্খা প্রকাশ করে দিত। [৩]

আনাতোলিয়ার বিভিন্ন স্থানের স্বপক্ষীয় সৈন্যদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য সেনাবাহিনীর সম্প্রচার এলাকা তৈরির কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই, কিন্তু এ আন্দোলনকে জোরদার করার জন্য সামরিক বৈপ্লবিক কমিটির প্রয়োজন রয়েছে। এ সংস্থাটি স্বাধীন হতে চলেছে, কিন্তু আমাদের সংস্থা একে নির্দেশনা দিবে। তুরস্কের সামরিক বৈপ্লবিক কমিটির সকল কার্য সোভিয়েত রাশিয়া ও সারা বিশ্বে সামাজিক বিপ্লবের আন্দোলনের প্রক্রিয়া ও রক্ষায় মনোনিবেশ করবে। ককেশাসে এ আন্দোলনের প্রসার এবং সেসব এলাকায় সোভিয়েত শক্তির উত্থানের কারণে এটি ইংরেজ-ফরাসি দখলদারদের বিরুদ্ধে আনাতোলিয়ান আন্দোলনের জন্য সহায়ক হবে। আনাতোলিয়ার সকল দায়িত্ব গ্রহণকারী তুরস্কের সামরিক বৈপ্লবিক কমিটি প্রথম সুযোগকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠা করবে এবং প্রতিবেশী সোভিয়েত রাশিয়ার সাথে হাত মেলানোর লক্ষ্যে অগ্রসর হবে/ (মুস্তাফা সুফি; মস্কো, ২৮শে অক্টোবর ১৯১৯)

পরবর্তী জীবন এবং মৃত্যু সম্পাদনা

সুফি ১৯২১ সালের ২৮শে জানুয়ারি কৃষ্ণ সাগরে মৃত্যুবরণ করেন।

উৎসসমূহ সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Left Wing of the Turkish Communist Party by Enternasyonalist Komunist Sol, October 2008
  2. Mirsaid Sultan-Galiev, "Mustafa Subkhi i ego rabota," Zhizn natsionalnostei, no. 14 (112), 16 August 1921.
  3. K Gajendra Singh, Occupation case studies: Algeria and Turkey ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ তারিখে Asia Times, 7 January 2004

বহিঃস্থ লিংকসমূহ সম্পাদনা