মীনাক্ষী চিত্তরঞ্জন

(মীনাক্ষী চিতরঞ্জন থেকে পুনর্নির্দেশিত)

মীনাক্ষী চিত্তরঞ্জন, হলেন একজন ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী, শিক্ষক এবং নৃত্য পরিকল্পক। ধ্রুপদী নৃত্য ভরতনাট্যমেরর পাণ্ডনাল্লুর শৈলীর একজন নৃত্যশিল্পী হিসাবে তিনি পরিচিত।[১] তিনি কলাদীক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। এই সংস্থাটি ভরতনাট্যমের প্রসারের উদ্দেশ্যে কাজ করে এবং পাণ্ডনাল্লুর শৈলীর ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য সচেষ্ট। তিনি চক্কালিঙ্গম পিল্লাই এবং সুব্বারায়া পিল্লাই এই দুই পিতা-পুত্র যুগলের শিষ্য।[২] তিনি তামিলনাড়ু সরকারের কালাইমামনি পুরস্কার এবং শ্রী পার্থসারথি স্বামী সভা - নাট্য কলা সারথি সহ একাধিক সম্মানের প্রাপক।[৩] শাস্ত্রীয় নৃত্যে তাঁর অবদানের জন্য ২০০৮ সালে ভারত সরকার তাঁকে চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী প্রদান করে সম্মানিত করে।[৪]

মীনাক্ষী চিত্তরঞ্জন
জন্ম
মাতৃশিক্ষায়তনএথিরাজ কলেজ ফর উইমেন
পেশাধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী
পরিচিতির কারণভরতনাট্যম
দাম্পত্য সঙ্গীঅরুণ চিত্তরঞ্জন
পিতা-মাতাসাবানাগায়ম
সাবিত্রী
পুরস্কারপদ্মশ্রী
কলাইমামণি পুরস্কার
নাট্য কলা সারথি
নৃত্য চূড়ামণি
ওয়েবসাইটWebsite

জীবনী সম্পাদনা

মীনাক্ষী চিত্তরঞ্জন দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাই শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা সাবানাগায়ম ছিলেন একজন সরকারী কর্মকর্তা। তাঁর পাঁচ সন্তানের মধ্যে মীনাক্ষী ছিলেন কনিষ্ঠতম এবং একমাত্র কন্যা।[৩] তাঁর মা সাবিত্রী, তাঁর চার বছর বয়সে, প্রখ্যাত ভরতনাট্যম গুরু পাণ্ডনাল্লুর চক্কালিঙ্গম পিল্লাইয়ের কাছে তাঁকে পাঠিয়েছিলেন। পিল্লাই ও তাঁর পুত্র সুব্বারায়া পিল্লাইয়ের অধীনে প্রশিক্ষণের পরে, মাত্র নয় বছর বয়সে আরঙ্গেত্রমের (আত্মপ্রকাশ) মাধ্যমে তাঁর মঞ্চে প্রবেশ ঘটে।[১] তাঁর বাবা দিল্লিতে স্থানান্তরিত হওয়ার পরে তিনিও দিল্লি চলে আসেন, তবে অবকাশের সময় চেন্নাই ফিরে এসে তিনি সুব্বারায়া পিল্লাইয়ের কাছে তাঁর নাচের প্রশিক্ষণ চালিয়ে যান। তিনি এথিরাজ কলেজ ফর উইমেন থেকে তাঁর কলেজের পড়াশোনা করেন। তামিলনাড়ু তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এম. ভক্তবৎসলমের এর নাতি অর্থোডোনটিক্স অরুণ চিত্তরঞ্জনকে তিনি বিবাহ করেছিলেন। বিবাহের পরে তাঁর নাচের জীবনে কিছুটা বিরতি আসে।[৩]

তিনি আবার নাচের জীবনে ফিরেছিলেন ঘাতবাদ্য বাদক শ্রীনিবাস পিল্লাইয়ের সাথে হঠাৎ দেখা হওয়ার পর। তাঁর কিশোর বয়সে শ্রীনিবাস মৃদঙ্গ বাজিয়ে তাঁর নাচের সঙ্গে সঙ্গত করতেন।[৩] পদ্মভূষণ পুরস্কারপ্রাপ্ত কলানিধি নারায়ণনের অধীনে তিনি অভিনয় শেখেন,[৫][৬] শ্রীনিবাস পিল্লাই, এস পান্ডিয়ান এবং পদ্মা সুব্রহ্মণ্যমের মত শিক্ষক বিভিন্ন সময় তাঁকে প্রশিক্ষণও দিয়েছিলেন।[৭] ১৯৯১ সালে, তিনি কলাদীক্ষা শুরু করেছিলেন, এটি ভরতনাট্যম শিক্ষার জন্য একটি নৃত্য বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয় এখন আকারে এতটাই বড় যে একসঙ্গে ১০০ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় এবং এটি পাণ্ডনাল্লুর শৈলী সংরক্ষণের জন্য সচেষ্ট বলে বিখ্যাত। [১] তিনি অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী নৃত্যশিল্পীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। অভিনেতা রজনীকান্তের জ্যেষ্ঠ কন্যা এবং অভিনেতা ধানুশের স্ত্রী, কলাইমামণি পুরস্কার প্রাপ্ত ঐশ্ব্যর্য আর. ধানুশ তাঁর একজন ছাত্রী। তিনি শ্রীকৃষ্ণ গণসভা থেকে নাট্য চূড়ামণি উপাধি এবং ১৯৭৫ সালে তামিলনাড়ু সরকারের কাছ থেকে কলাইমামণি পুরস্কার পেয়েছিলেন।[৮] ২০০৮ সালে ভারত সরকার তাঁকে চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী প্রদান করে এবং ২০১৪ সালে শ্রী পার্থসারথী স্বামী সভা তাঁকে 'নাট্য কলা সারথি' উপাধিতে ভূষিত করেছে।[৭] তিনি রোটারি ক্লাব, চেন্নাই এবং চেন্নাইয়ের প্রভাস ক্লাব থেকে সেরা পুরস্কার এবং মাদ্রাজ সংগীত একাডেমী থেকে সেরা নৃত্যশিল্পী পুরস্কার (২০০৪) প্রাপ্ত। তিনি দূরদর্শনের সর্বোচ্চ গ্রেডের শিল্পী হিসেবে স্বীকৃত।।[৮]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Profile: Meenakshi Chitharanjan"। Lokvani। ১৭ মার্চ ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৬ 
  2. "The king was captivated and…"। The Hindu। ৩১ অক্টোবর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৬ 
  3. "Life's dancing lessons"। The Hindu। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৬ 
  4. "Padma Awards" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৬। ১৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৬ 
  5. "Memorable Guru Samarpan"। Narthaki। ১৬ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৬ 
  6. "Moves and music"। The Hindu। ২১ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৬ 
  7. "Title conferred on Meenakshi Chitharanjan"। The Hindu। ২১ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৬ 
  8. "Appreciated for taking Pandanallur style of dancing to Great Heights"। Chennai Plus। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা