মীজানূর রহমান শেলী

সাবেক মন্ত্রী, রাজনীতি বিশ্লেষক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ

মীজানূর রহমান শেলী (১৯৪৩–২০১৯) বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, রাজনীতি বিশ্লেষক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ ছিলেন।[২]

মীজানূর রহমান শেলী
জন্ম(১৯৪৩-০১-০২)২ জানুয়ারি ১৯৪৩[১]
মৃত্যু১২ আগস্ট ২০১৯(2019-08-12) (বয়স ৭৬)
জাতীয়তাবাংলাদেশি
দাম্পত্য সঙ্গীসুফিয়া রহমান
সন্তান

জীবনী সম্পাদনা

মীজানূর ১৯৪৩ সালের ২ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ জেলার কুসুমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর পিতা ও মাতা যথাক্রমে মাহফুজর রহমান ও রিজিয়া রহমান ।। [৩] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক পদে যোগদান করেন।[৪][৫] শিক্ষকতা ছেড়ে ১৯৬৭ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন তিনি।[৩] চাকরিতে থাকা অবস্থায় লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮০ সালে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর পরিচালক থাকা অবস্থায় সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন তিনি। ১৯৯০ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের তথ্য এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৩][৪][৬]

তিনি বেসরকারি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং এশিয়ান অ্যাফেয়ার্সের সম্পাদক ছিলেন।[৩][৪] এছাড়া প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৬] সাপ্তাহিক সচিত্র স্বদেশ এর উপদেষ্টা সম্পাদক এবং ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ টাইমস ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও বিভিন্ন পত্রিকা ও সাময়িকীতে নিয়মিত লিখতেন তিনি।[৩] তিনি সমাজবিজ্ঞান ও রাজনীতি বিষয়ক বই ছাড়াও কবিতা, উপন্যাস ও ভ্রমণ কাহিনী লিখেছেন। ২০০৮ সালে বাংলা একাডেমির নিকট থেকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ লাভ করেছিলেন তিনি।[৭]

মীজানূর রহমান শেলী ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনার পাশাপাশি বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি পত্র দ্বি- মাসিক 'মৌসুম' পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে প্রাথমিকভাবে নিজেকে সৃজনশীল সাহিত্যিক হিসেবে ব্যপ্ত রেখেছিলেন । এ সময়য়েই ইংরেজি মাসিক 'দি কনসেপ্ট অব পাকিস্তান' পত্রিকাও তিনি সম্পাদনা করেছিলেন। তাঁর গ্রন্থাকারে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ' পাতালে শর্বরী' ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত হয়েছিল কনসেপ্ট পাবলিকেশানস থেকে আর প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন দেবদাস চক্রবর্তী। এছাড়া তাঁর সাহিত্য কর্ম হিসেবে উপন্যাস 'ফেরারি প্রহর' (১৯৭২) 'সারা সকাল' (১৯৮৮) 'অলীক আত্মীয়' (১৯৯০) এবং কাব্য গ্রন্থ 'তাঁর খোঁজে' (১৯৮৮) ও 'মুখর অরণ্য' (১৯৮৮) সবিশেষ উল্লেখযোগ্য ।

মীজানূর ব্যক্তিগত জীবনে সুফিয়া রহমানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০১৬ সালে তার সহধর্মিণী পরলোকগমন করেন।[৩][৬] তাদের দুই সন্তানের নাম আরিফ ইবনে মিজান ও তাহমিদ ইবনে মিজান।

মীজানূর ২০১৯ সালের ১২ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।[২][৮] মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "The symphony of our times"New Age। ১৬ অক্টোবর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৯ 
  2. "মিজানুর রহমান শেলী মারা গেছেন"বাংলানিউজ২৪.কম। ১২ আগস্ট ২০১৯। ১২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৯ 
  3. "সাবেক মন্ত্রী মিজানূর রহমান শেলীর মৃত্যু"বিডিনিউজ২৪.কম। ১২ আগস্ট ২০১৯। ১২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৯ 
  4. "চলে গেলেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী মিজানুর রহমান শেলী"ইত্তেফাক। ১২ আগস্ট ২০১৯। ১২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৯ 
  5. "সাবেক তথ্যমন্ত্রী মিজানুর রহমান শেলী আর নেই"জাগোনিউজ২৪.কম। ১২ আগস্ট ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৯ 
  6. "সাবেক তথ্যমন্ত্রী মিজানূর রহমান শেলী আর নেই"যুগান্তর। ১২ আগস্ট ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৯ 
  7. "বাংলা একাডেমি প্রদত্ত অন্যান্য পুরস্কার ও সম্মানসূচক ফেলোশিপপ্রাপ্ত বিশিষ্টজনের তালিকা"বাংলা একাডেমি। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৯ 
  8. "সাবেক তথ্যমন্ত্রী মিজানুর রহমান শেলী আর নেই"কালের কণ্ঠ। ১২ আগস্ট ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৯