মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম

বাংলাদেশী কৃষিবিজ্ঞানী

ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম একজন বাংলাদেশি কৃষিবিজ্ঞানী। তার বিশেষ কাজের মধ্যে রয়েছে জলবায়ুসহিষ্ণু ধান উদ্ভাবন। এছাড়াও তিনি ধানের বেশ কিছু জাতের উদ্ভাবন করেছেন, যার মধ্যে বিনা-৮ (২০১০), বিনা-১০ (২০১২), বিনা-১১, বিনা-১২ উল্লেখযোগ্য। [১]

ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম (অপু)
মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম
জন্ম (1965-05-20) ২০ মে ১৯৬৫ (বয়স ৫৮)
জাতীয়তাবাংলাদেশি
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পেশাবিজ্ঞানী
দাম্পত্য সঙ্গীড. শামছুন্নাহার বেগম (লুনা)
আত্মীয়মির্জা মাজহারুল ইসলাম, আবু সাঈদ চৌধুরী,
পুরস্কারতাঁর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত বিনা'র বায়োটেকনোলজি বিভাগ কর্তৃক বঙ্গবন্ধু কৃষি রৌপ্য পদক (২০১৩), আন্তর্জাতিক বেস্ট পোস্টার অ্যাওয়ার্ড (ফিলিপাইন ফসল বিজ্ঞান সমিতি) (২০০২), জাতিসংঘের এফএও এবং আইএইএ কর্তৃক আউট স্ট্যান্ডিং অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড (২০১৪)। বেস্ট ইয়াং সায়েন্টিস্ট, বাংলাদেশ উদ্ভিদ প্রজনন ও কৌলিতত্ত্ব সমিতি (২০১২), বাংলাদেশ কৃষি একাডেমি কর্তৃক শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসেবে স্বর্ণ পদক (২০১৪)।

পরিচিতি সম্পাদনা

তার বাবা ছিলেন একজন বিশিষ্ট সমাজ সেবক। তার ছোট চাচা মির্জা মাজহারুল ইসলাম ভারতীয় উপমহাদেশের খ্যাতিমান শল্যচিকিৎসক, মুক্তিযোদ্ধা, ভাষা সৈনিক ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠক। উল্লেখ্য তার নিকটাত্মীয় আবু সাঈদ চৌধুরী ছিলেন একজন বিচারপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিদেশে মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্টপতি ছিলেন। তার স্ত্রী ড. শামছুন্নাহার বেগম (লুনা) তার সাথে একই প্রতিষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম ১৯৬৫ সালের ২০ মে টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার আগচারান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

বল্লা করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় হতে প্রথম বিভাগে এসএসসি (১৯৮০) এবং নটর ডেম কলেজ হতে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাস করেন (১৯৮৩)। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি এজি (অনার্স) (১৯৮৭), জেনেটিকস অ্যান্ড প্লান্ট ব্রিডিং বিভাগ হতে এমএসসি (এজি) ডিগ্রি লাভ করেন (১৯৮৮)। ইউনিভার্সিটি অব ফিলিপাইন থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন (২০০৪)। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় (যুক্তরাষ্ট্র) থেকে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করেন (২০১৪)। এছাড়া স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি, গান, নাটক ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে তার পদচারণা ছিল উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন 'শতাব্দী'র অন্যতম সদস্য ছিলেন।

কর্মজীবন সম্পাদনা

তিনি কর্মকর্তা হিসেবে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) ময়মনসিংহ এ কর্মজীবন শুরু করেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে (১৯৯৪), ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (২০০৪), প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে কাজ শুরু করেন (২০০৯), মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় প্রধান (উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ) (২০১৫)।

অর্জন সম্পাদনা

তিনি গ্রিন সুপার রাইস বা বিনা ধান-১৭ জিএসআর আবিষ্কার করেন। এছাড়া তিনি খরা, বন্যা ও লবণসহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবনে সফল হয়েছেন। বৈরী আবহাওয়া-সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনের পাশাপাশি ধান চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন। এ পর্যন্ত তিনি ১৯টি জাত উদ্ভাবন করেছেন, তার তত্ত্বাবধানে ৫৮জন এমএস ও ১০ জন পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। তিনি এ পর্যন্ত ১৫টি আন্তর্জাতিক ও ৮টি জাতীয় প্রকল্পের প্রধান গবেষক/প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।‌আগামী দিনে তিনি বৈরী আবহাওয়া সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তার উদ্ভাবিত আউশ মৌসুমের উপযোগী নেরিকা (আফ্রিকার ধান) হতে পরিবর্তিত খরা সহনশীল ধানের জাত ছাড়করণের অপেক্ষায় আছে। এছাড়া গবেষণা পুস্তক, প্রবন্ধ ও শতাধিক মৌলিক প্রকা়শনা রয়েছে। [২][৩][৪][৫][৬][৭][৮][৯][১০][১১][১২][১৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "আইএইএ-এফএও পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী"নয়া দিগন্ত। ১৬৭/২-ই, ইনার সার্কুলার রোড, ইডেন কমপ্লেক্স, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪, মঙ্গলবার। সংগ্রহের তারিখ 2016-11-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "কৃষিতে যুক্ত হলো গ্রিন সুপার রাইস"কালবেলা। ১১৪ সবুজবাগ, বাসাবো, ঢাকা-১২১৪। ২৫ জুন ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী"রাজশাহী এক্সপ্রেস। মণিচত্বর, রাজশাহী-৬০০০। APRIL 21, 2015। সংগ্রহের তারিখ 2016-11-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "বাংলাদেশি বিজ্ঞানী পেলেন আন্তর্জাতিক পুরস্কার"দৈনিক মাথাভাঙ্গা। চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার। সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী"সিলেট বার্তা। কুমারপাড়া, সিলেট। ২০১৪-০৯-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "খাদ্য নিরাপত্তায় পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী"আন্দোলনের বাজার। মজমপুর গেট, কুষ্টিয়া-৭০০০। শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ 2016-11-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  7. "খাদ্য নিরাপত্তায় পুরস্কার পেলেন বিনার বিজ্ঞানী"bdnews24। ২০১৪-০৯-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  8. "কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য অ্যাওয়ার্ড পেলেন ড. মোফাজ্জল"প্রিয়.কম। Fri, 26/09/2014। ২০১৪-১২-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2016-11-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  9. "আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেল বাংলাদেশের বিজ্ঞানী"DhakaTimes। ৪৪, ইস্কাটন গার্ডেন (নিচতলা), রমনা, ঢাকা-১০০০। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  10. "খাদ্য নিরাপত্তায় পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী"দৈনিক সোনালী সংবাদ। কুমারপাড়া, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী-৬১০০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  11. "ধানবিজ্ঞানী ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম"আজকের পত্রিকা। ১১ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  12. "বিনা বিজ্ঞানীর আন্তর্জাতিক পুরস্কার"দৈনিক কালের কণ্ঠ। প্লট-৩৭১/এ, ব্লক-ডি, বসুন্ধরা, বারিধারা। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৪ 
  13. "ধান চাষে নতুন বিপ্লবের নায়ক মির্জা মোফাজ্জল"দৈনিক কালের কণ্ঠ। প্লট-৩৭১/এ, ব্লক-ডি, বসুন্ধরা, বারিধারা। ১২ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৪