মালয়েশীয় সেনাবাহিনী

মালয়েশীয় সেনাবাহিনী মালয়েশীয় সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। মালয়েশীয় সেনাবাহিনী ব্রিটিশ ঐতিহ্য বহন করলেও এই সেনাবাহিনীর নামের পূর্বে রাজকীয় শব্দটি ব্যবহৃত হয়না যদিও এর রেজিমেন্ট এবং কোরগুলোর নামের পূর্বে রাজকীয় শব্দটি ব্যবহৃত হয়।

মালয়েশীয় সেনাবাহিনী
Tentera Darat Malaysia
تنترا دارت مليسيا
মালয়েশীয় সেনাবাহিনীর প্রতীক
প্রতিষ্ঠা১ মার্চ ১৯৩৩; ৯১ বছর আগে (1933-03-01)
দেশ মালয়েশিয়া
আনুগত্য মালয়েশিয়ার রাজা
শাখা মালয়েশীয় সশস্ত্র বাহিনী
ধরনসেনাবাহিনী
ভূমিকাস্থলযুদ্ধ
আকার৮০,০০০ সেনা সদস্য
পৃষ্ঠপোষকমালয়েশিয়ার রাজা
নীতিবাক্যGagah Setia ('শক্তিশালী এবং অনুগত')
রং         লাল এবং স্বর্ণালি
বার্ষিকী১ মার্চ
ওয়েবসাইটarmy.mod.gov.my
কমান্ডার
মালয়েশীয় সশস্ত্র বাহিনী প্রধানমালয়েশিয়ার রাজা
সেনাবাহিনী প্রধানজেনারেল ট্যান শ্রী দাতুক মোহাম্মদ জমরুজ জৈন
উপ সেনাবাহিনী প্রধানলেফটেন্যান্ট জেনারেল দাতো মোহাম্মদ আব্দুর রহমান
রেজিমেন্টাল সার্জেন্ট মেজরওয়ারেন্ট অফিসার পউজি মোহাম্মদ আলি
প্রতীকসমূহ
পতাকা

ইতিহাস

 
২০০৯ সালে মালয়েশীয় সেনাবাহিনীর একজন নারী সেনা সদস্য যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর একজন চিকিৎসক (লে. কমান্ডার)-এর পাশে বসে একজন সাধারণ মালয়েশীয় গ্রামীণ পুরুষকে কি যেন বলছেন; ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর সহায়তায় মালয়েশিয়া সরকার তাদের বিভিন্ন প্রদেশের গ্রামে তাদের নিজস্ব সেনাবাহিনী ব্যবহার করে চিকিৎসা সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে

মালয়েশিয়ার সামরিক ইতিহাসে প্রথম বাহিনী হিসেবে যেটির নাম আসে সেটি হচ্ছে পেনাং ভলান্টিয়ার রাইফেল বাহিনী যেটি ১৮৬১ সালের ১ মার্চ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো, এটি ছিলো মূলত একটি আধাসামরিক গণবাহিনী। এছাড়াও মালয় স্টেটস ভলান্টিয়ার রাইফেলস নামে আরও একটি অনুরূপ আধাসামরিক গণবাহিনী ছিলো যেটি ১৯১৫ সালে তৈরি করে ১৯৩৬ সালে ভেঙে দেওয়া হয়েছিলো। আধুনিক মালয়েশীয় সেনাবাহিনীর ইতিহাসের সূত্রপাত ঘটে ১৯৩৩ সালের ২৩শে জানুয়ারি যখন জোটবদ্ধ মালয় রাজ্যসমূহের কেন্দ্রীয় পরিষদ মালয় রেজিমেন্ট আইন পাশ করে। এরই ফলশ্রুতিতে ১৯৩৩ সালের ১ মার্চ তারিখে ২৫জন মালয় পুরুষকে একটি পরীক্ষামূলক সেনা ইউনিটে নিয়োগ প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়, এই পরীক্ষামূলক ইউনিটটি ছিলো কোম্পানি পর্যায়ের। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর লিংকনশায়ার রেজিমেন্টের কর্মকর্তা মেজর জি. ম্যাক্ল. এস. ব্রুস ছিলেন ওই ইউনিটটির প্রথম অধিনায়ক। ১৯৩৫ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে ওই পরীক্ষামূলক কোম্পানিটি ১৫০জন মালয় পুরুষ দ্বারা গঠিত মালয় রেজিমেন্টে পরিণত হয়ে যায়। ১৯৩৮ সালের ১ জানুয়ারি একটি ব্যাটেলিয়ন গঠন করা হয় এবং ১৯৪১ সালের ১ ডিসেম্বর গঠন করা হয় আরেকটি ব্যাটেলিয়ন। মালয় রেজিমেন্টের প্রথম ব্যাটেলিয়নটি আফিম উপত্যকার (সিঙ্গাপুরের বুকিত চান্দু এলাকা) প্রতিরক্ষার জন্য স্মরণীয় হয়ে ওঠে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে, যুদ্ধটি আফিম উপত্যকার যুদ্ধ নামে পরিচিত। ১৯৪২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মালয় লেফটেন্যান্ট আদনান সৈয়দীর নেতৃত্বে ৪২ জন মালয় পুরুষ সৈনিক জাপানি সেনাবাহিনীর ১৮ ডিভিশনের সৈন্যদের সাথে লড়াই করে, এই জাপানি ডিভিশনের নেতৃত্বে তখন ছিলেন জেনারেল রেনিয়া মুতাগুচি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এবং মালয় জরুরী অবস্থাকালীন সময়ে মালয় রেজিমেন্টের ব্যাটেলিয়ন সংখ্যা ১৯৫০-এর দশকের শুরুর দিকে সাতটিতে উন্নীত হয়।

মালয়েশীয় সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া বাহিনীর ইতিহাসের সূত্রপাত ঘটেছিলো ১৯৫২ সালে ১ সেপ্টেম্বর তারিখে, এই দিন কেন্দ্রীয় রকনিসন্স বহর নামের একটি ইউনিট গড়ে তোলা হয়। এটাকে পরে ফেডারেশন রেজিমেন্টের সঙ্গে একীভূত করা হয় ফেডারেশন রিকনিসন্স কোর গড়ে তোলার জন্য। নামটি কিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়, প্রথমে এটির নাম রাখা হয় মালয়েশীয় রিকনিসন্স কোর (১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৬৭), রাজকীয় মালয়েশীয় রিকনিসন্স কোর (মে ১৯৭৯) থেকে রাজকীয় অশ্বারোহী কোর (ডিসেম্বর ১৯৭৯) এবং অবশেষে রাজকীয় সাঁজোয়া বাহিনী নামকরণ হয় ১৯৮৬ সালের ৮ ডিসেম্বরে। রাজকীয় রেঞ্জার রেজিমেন্টের শেকড় পাওয়া যায় ১৮৬৩ সালে যখন আধাসামরিক বাহিনী সারাওয়াক রেঞ্জার্স তৈরি করা হয়েছিলো। মালয়েশীয় সেনাবাহিনীতে এই রাজকীয় রেঞ্জার রেজিমেন্টটি মালয় রেজিমেন্টের পরে স্থান পেলেও রাজকীয় রেঞ্জার রেজিমেন্টকেই সেনাবাহিনীর সবচেয়ে পুরোনো রেজিমেন্ট হিসেবে গণ্য করা হয়।

১৯৭০-এর দশকে ব্যাপক পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যায় মালয়েশিয়ার অর্থনীতি এবং সামরিক বাহিনী এবং মাহাথির বিন মোহাম্মদের সরকার ১৯৮১ সালে ক্ষমতায় আরোহণ করে মালয়েশিয়া সামরিক বাহিনীর সদস্য ৩০,০০০-এ উন্নীত করেন আশির দশকের মাঝামাঝি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক সামরিক সরঞ্জাম কেনে তার সরকার[১] এবং সাধারণ সৈনিক এবং সেনা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণকেন্দ্র, পোশাক, সামরিক অভ্যন্তরীণ গঠনপ্রণালী সবই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর আদলে গঠিত হয়ে যায়, সেনাবাহিনীতে নারীদের অন্তর্ভুক্তি মাহাথিরের সরকারই করেন, তবে নারী সেনা সদস্যদের (সৈনিক এবং কর্মকর্তা সকলেরই) সামরিক পোশাকের সঙ্গে মাথায় কালো রঙের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক যেটা সামরিক বাহিনীর নিজস্ব।[২][৩][৪]

সেনা সদস্যদের পদবী ১৯৯০-এর দশকে ইংরেজি ভাষা থেকে পূর্ণ মালয় ভাষায় রূপান্তরিত করে দেয় সরকার। ২০১৯ সালের সরকারি হিসেব অনুযায়ী মালয়েশিয়ার মোট সেনা সদস্য প্রায় ৮০,০০০-এর কাছাকাছি ছিলো।[৫][৬]

তথ্যসূত্র

  1. "Malaysian army to continue modernising assets to ensure preparedness, says army chief"malaymail.com। ১ মার্চ ২০১৫। 
  2. "Army may enlist female commandos in future"thestar.com.my। ১১ এপ্রিল ২০১৮। 
  3. "Women in more decision-making roles in armed forces"freemalaysiatoday.com। ২৫ মার্চ ২০১৬। ২৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২০ 
  4. "Understanding the obligation of 'hijab' in Islam — Nisar Mohammad Ahmad"malaymail.com। ৩১ অক্টোবর ২০১৪। 
  5. Zakiah Koya (২২ মার্চ ২০২০)। "Soldiers on the streets in Ops Penawar, stay home!"thestar.com.my 
  6. "MAF deploys 7,000 personnel to assist second phase of MCO"malaymail.com। ৭ এপ্রিল ২০২০। 

বহিঃসংযোগ