মারাপাচি পুতুল, অথবা মারাপাচি বোমাইস (আক্ষরিক অর্থ: "কাঠের পুতুল"), হল রক্ত চন্দন (টেরোকার্পাস স্যান্টালিনাস) বা শিমুল (বোমব্যাক্স)) বা লাল কাঠ ( সিকুইওয়েডেই) দিয়ে তৈরি ঐতিহ্যবাহী পুতুল, যেগুলি দক্ষিণ ভারতে বিজয়াদশমী বা নবরাত্রি উদযাপনের অংশ হিসাবে গোলু উৎসব চলাকালীন প্রদর্শিত হয়। এই পুতুলগুলি সাধারণত পুরুষ এবং স্ত্রীলোকের জোড়ায় তৈরি হয়। বাচ্চারা তাদের খেলার অংশ হিসাবে সেগুলিকে পোশাক পরায় এবং গোলু বা "বোম্মাই কোলু" উৎসব চলাকালীন প্রদর্শন করে। তিরুপতিতে এটি বিশেষভাবে অলঙ্কারযুক্ত করে খোদাই করা হয়, এবং পুতুলগুলি বেঙ্কটেশ্বর এবং তার স্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করে।[১][২][৩] এগুলি কোন্ডাপল্লিতে রাজা-রানী পুতুল হিসাবে তৈরি করা হয়, গোলু উৎসবের সময় যেগুলির প্রদর্শন বাধ্যতামূলক।[৪]

রাজা ও রানি মারাপাচি পুতুল

কন্যা যখন তার বোম্মাই কোলুর ব্যবস্থা শুরু করে, তখন ঐতিহ্য হিসাবে মারাপাচি পুতুলগুলি মায়ের কাছ থেকে কন্যা বংশগত উপহার হিসেবে পায়।[৫] দক্ষিণ ভারতে অনুসরণ করা একটি বিশেষ রীতি হল মারাপাচি পুতুল সদ্য বিবাহিত দম্পতিকে উপহার দেওয়া হয়, যাতে তাদের বাচ্চারা এগুলির সাথে খেলতে পারে। লাল চন্দন কাঠে মারাপাচি পুতুলের তৈরি এই বিশেষ উপহারের তাৎপর্যকে কাঠের ওষধি গুণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যখন কোনও শিশু লাল চন্দন কাঠের তৈরি এই খেলনাটি মুখে দেয়, শিশুর লালা কাঠের একটি নির্যাস বার করে আনে। এটি শিশুর পাচনতন্ত্রে শোষিত হয়।[৬]

দক্ষিণ ভারতে, বিশেষত অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ু রাজ্যে, নবরাত্রি উদযাপনের অংশ হিসাবে গোলু উৎসব চলাকালীন, মারাপাচি পুতুলগুলি প্রদর্শনের অংশ হয়; পুতুলের প্রদর্শন বিজোড় সংখ্যক ৩, ৫, ৭, ৯, বা ১১ স্তরে সাজানো হয়, তবে সাধারণতঃ ৯টি স্তর থাকে। ঐতিহ্যবাহী বিন্যাসে, শীর্ষ স্তরটি মারাপাচি পুতুলের প্রদর্শনের জন্য বরাদ্দ করা হয়। অন্যান্য পুতুল, যেগুলি মাটি বা কাঠের তৈরি, অন্যান্য নির্দিষ্ট স্তরে সাজানো হয়। নবরাত্রির প্রথম দিন, যেটি একটি অমাবস্যার দিন, বাড়ির মহিলারা দেবী পার্বতী, লক্ষ্মী এবং সরস্বতীর উপাসনা করে।[৭]

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. The Times of India Annual। ১৯৫০। পৃষ্ঠা 42। 
  2. Spell of the South। South Zone Cultural Centre। ১৯৮৭। পৃষ্ঠা 106। 
  3. Srinivasan, Madhumitha (২৬ সেপ্টেম্বর ২০১১)। "Doll them up"The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৬ 
  4. "Golu Dolls"। Lonely Planet। ২০ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৬ 
  5. Nikki Bado-Fralick; Rebecca Sachs Norris (২০১০)। Toying with God: The World of Religious Games and Dolls। Baylor University Press। পৃষ্ঠা 36। আইএসবিএন 978-1-60258-181-4 
  6. "Marapachi dolls:Research Programme" (পিডিএফ)। UGC Faculty Research Promotion Scheme। ২৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল (pdf) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৬ 
  7. Sharanya, C R (২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১)। "Navratri: Celebrating with dolls"DNA India