মাক্স প্লাংক কোয়ান্টাম আলোকবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট

মাক্স প্লাংক কোয়ান্টাম আলোকবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট (সংক্ষেপে: এমপিকিউ বা MPQ; জার্মান: Max-Planck-Institut für Quantenoptik) হলো মাক্স প্লাংক সোসাইটির একটি অংশ যেটি জার্মানির ৮৭টি গবেষণাগার পরিচালনা করে।

মাক্স প্লাংক কোয়ান্টাম আলোকবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট
সংক্ষেপেMPQ
গঠিত১৯৮১
অবস্থান
নেতাঅধ্যাপক ড. ইগনাসিও সিরাক
স্টাফ
৩৫০
ওয়েবসাইটhttp://www.mpq.mpg.de/en

প্রতিষ্টানটি মুনিচের ১০ কিমি. উত্তর-পূর্বে জার্মানির গ্যাচিংএ অবস্থিত। পাঁচটি গবেষক দল এখানে পদার্থবিজ্ঞানের অটোসেকেন্ড ফিজিক্স, লেজার ফিজিক্স, কোয়ান্টাম ইনফরমেশন তত্ত্ব, লেজার বর্ণালীবিদ্যা, কোয়ান্টাম গতিবিদ্যা এবং কোয়ান্টাম মেনি বডি সিস্টেম শাখায় কাজ করেন।

কাঠামো

সম্পাদনা

বিভাগসমূহ

সম্পাদনা

গবেষক দল

সম্পাদনা
  • RyD-QMB, রিডবার্গ ড্রেসড কোয়ান্টাম মেনি বডি সিস্টেম (খ্রিশ্চিয়ান গ্রো)
  • প্রতিপদার্থ বর্ণালীবিদ্যা (মাসাকি হোরি)
  • অটো হান গ্রুপ কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক (আন্দ্রে রাইজারার)
  • কোয়ান্টাম পদার্থ তত্ত্ব (রিচার্ড শ্মিট)
  • জটিল কোয়ান্টাম ব্যবস্থার জট (নরবার্ট শিউহ)

গবেষণা

সম্পাদনা

প্রতিষ্ঠানটি আলো ও পদার্থের মধ্যে মিথষ্ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে। এর অনুষদের সদস্যগণ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করেন, যেমন, তাত্ত্বিক কোয়ান্টাম আলোকবিজ্ঞান, কোয়ান্টাম ইনফরমেশন তত্ত্ব, অতি উচ্চ-রেজোলিউশন লেজার বর্ণালীবিদ্যা, অতি-শীতল অণুসমূহের কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান, কোয়ান্টাম কম্পিউটার ও কোয়ান্টাম নেটওয়ার্কের সম্পর্কিত উপাদানসমূহের বিকাশ, অধঃপাতিত কোয়ান্টাম গ্যাসসমূহের বসু-আইন্সটাইন ঘনীভবন, অটোসেকেন্ড পদার্থবিজ্ঞান, মৌলিক ও চিকিৎসাবিদ্যাবিষয়ক প্রয়োগে নববিকিরণ ও কণা উৎসের বিকাশ ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠানটিতে একসময় একদল গবেষক ছিলেন যারা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করতেন।[১]

ইতিহাস

সম্পাদনা

১ জানুয়ারী, ১৯৮১ সালে মাক্স প্লাংক কোয়ান্টাম আলোকবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ছিল মাক্স প্লাংক প্লাজমা পদার্থবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট-এর একটি লেজার গবেষণা কর্মসূচী দলের উত্তরসূরি। একীভবন গবেষণা, কোয়ান্টাম আলোকবিজ্ঞান ও বর্ণালীবিদ্যায় লেজারের ব্যবহার ছিল ঐ কর্মসূচী দলের মুল লক্ষ্য। দলটি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং এর সদস্য সংখ্যা ছিল ৪৬। ১৯৮১ সালে সদস্য সংখ্যা বেড়ে ৮২ হয় এবং প্রতিষ্ঠানটি লেজার পদার্থবিজ্ঞান (অধ্যাপক হারবার্ট ওয়ালথার), লেজার রসায়ন (অধ্যাপক কার্ল-লুডভিগ কমপা) ও লেজার প্লাজমা (ডাঃ সিগবার্ট উইটকোস্কি) বিভাগ গঠন করে।

প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক প্লাজমা পদার্থবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এটিকে ১৯৮৬ সালের জুলাইএ নতুন ভবনে স্থানান্তরিত করে আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক প্লাজমা পদার্থবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে পৃথক করে দেওয়া হয়। থিওডর হাঞ্চকে (তৎকালীন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়এ) নতুন পরিচালক হিসাবে নিয়োগের সাথে প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। হাঞ্চ লেজার বর্ণালীবিদ্যা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং মুনিচের লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়এও তাকে পদ দেওয়া হয়েছিল, যা এমপিকিউ এবং মুনিচের বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লেক্সের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংযোগ নিশ্চিত করেছিল। ১৯৯৩ সালে সিগবার্ট উইটকোস্কির অবসর গ্রহণের পরে উচ্চ-শক্তির লেজার নিয়ে গবেষণা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং অন্যান্য গবেষণা ক্ষেত্রগুলি শুরু হয়েছিল।

১৯৯৯ সালে অধ্যাপক গেরহার্ড রেম্পে (তৎকালীন কনস্ট্যান্স বিশ্ববিদ্যালয়) এমপিকিউ-এর পরিচালক হিসাবে নিযুক্ত হন এবং কোয়ান্টাম গতিবিদ্যা বিভাগ স্থাপন করা হয়।

২০০১ সালে ডক্টর কার্স্টেন ডানজম্যানের নেতৃত্বাধীন মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সম্পর্কিত গবেষক দল হ্যানোভারে চলে আসে যেখানে প্রথম পরীক্ষার পরিমাপ গবেষণায় চালিত হয়। সেই থেকে সেই দলটি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত মাক্স প্লাংক অভিকর্ষীয় পদার্থবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট (পটসডাম) এর একটি অংশ ছিল।[২] একই বছরে (২০০১) প্রফেসর ইগনাসিও সিরাক (তৎকালীন ইনসব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়) এমপিকিউ-তে পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং প্রতিষ্ঠানটিতে প্রথম তত্ত্ব বিভাগ স্থাপন করেন।

২০০৩ এর শুরুতে অধ্যাপক হারবার্ট ওয়ালথার অবসর গ্রহণ করেন, তবে ২০০০ সালের জুলাইয়ে তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লেজার ফিজিক্স ইমেরিটাস গ্রুপের প্রধান হিসাবে তার গবেষণা কাজ চালিয়ে যান। এমপিকিউ এর পরিচালক এবং এলএমইউ এর অধ্যাপক হিসাবে তার উত্তরসূরি হন অধ্যাপক ফেরেঙ্ক ক্রাউস (পূর্বের ভিয়েনার কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়)। অধ্যাপক ক্রাউস ২০০৩ সাল থেকে অটোসেকেন্ড পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

অধ্যাপক কার্ল-লুডভিগ কম্পা প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ প্রতিষ্ঠাকর্তা ছিলেন যিনি ২০০৬ সালে অবসরপ্রাপ্ত হন। এই অবসরগুলির সাথে সমান্তরালে তিনটি নতুন গবেষণা বিভাগ এবং কয়েকটি স্বতন্ত্র গবেষণা দল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলঃ ২০০৪ এ অটোসেকেন্ড ড্রাইভার লেজার গ্রুপ গঠিত হয়, যার নেতা ডঃ আন্দ্রিয়াস বাল্টুস্কা ২০০৬ সালে ভিয়েনার টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকত্ব গ্রহণ করেন। একই বছর ডাঃ টোবিয়াস স্কটজের (বর্তমানে ফ্রেইবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়-এ) নেতৃত্বাধীন কোয়ান্টাম সিমুলেশন উইথ ট্র্যাপড আয়নস গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৫ সালে ডাঃ টোবিয়াস কিপেনবার্গ (বর্তমানে ইকোল পলিটেক্নিক ফেডারেল ডি লুসান-এ) এমপিকিউতে তার ফোটোনিক্স পরীক্ষাগার স্থাপন করেন। ২০০৬ সালে ডঃ রেইনহার্ড কেইনবার্গার (বর্তমানে টিউ ম্যানচেন-এ) অর্থায়ন পান গবেষণা গ্রুপ অটোসেকেন্ড গতিবিদ্যা স্থাপনের জন্য। ডাঃ ম্যাথিয়াস ক্লিংয়ের নেতৃত্বে ২০০৭ সালে অটোসেকেন্ড ইমেজিংয়ের উপর আরও একটি গবেষণা দল প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ডাঃ মাসাকী হোরি প্রতিপদার্থ বর্ণালীবিদ্যার উপর তার দল প্রতিষ্ঠা করেন, যার ধারাবাহিকতায় সেবছর এপ্রিলে ডঃ পিটার হ্যামেলহফের (বর্তমানে এরলানজেন-নুরেমবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়-এ) অতি-উচ্চগতির কোয়ান্টাম আলোকবিজ্ঞান দল গঠিত হয়। ২০১০ এর ডিসেম্বরে ডঃ এলেফটারিওস গোলিয়েলমাকিস (বর্তমানে রোস্টক বিশ্ববিদ্যালয়-এ) অটোইলেট্রনিক্স নিয়ে তার গবেষণা গ্রুপ শুরু করেন। ডাঃ. র‌্যান্ডল্ফ পোল (বর্তমানে মেইঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়-এ) ২০১১ সালের শেষে তাঁর গবেষণা দল "মুনিক অ্যাটমস" প্রতিষ্ঠা শুরু করেন। বর্তমানে (অক্টোবর ২০২০) এমপিকিউতে পাঁচটি স্বতন্ত্র গবেষণা দল রয়েছে। মাসাকি হোরির প্রতিপদার্থ বর্ণালীবিদ্যা দল ছাড়াও, এখানে রিডবার্গ ড্রেসড কোয়ান্টাম মেনি-বডি সিস্টেম গ্রুপ (ডঃ খ্রিশ্চিয়ান গ্রো), অটো হান কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক গ্রুপ (ডঃ আন্দ্রে রাইজারার), কোয়ান্টাম পদার্থ তত্ত্ব গ্রুপ (ডঃ রিচার্ড শ্মিট), এবং জটিল কোয়ান্টাম ব্যবস্থার জট গ্রুপ (অধ্যাপক ডঃ নরবার্ট শিউহ) বিদ্যমান রয়েছে।[৩]

২০০৫ সালে থিওডর ডাব্লিউ. হাঞ্চজন এল. হল যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান।[৪] ২০০৮ এর ১আগস্টে অধ্যাপক ইমানুয়েল ব্লচ একটি পঞ্চম বিভাগ, কোয়ান্টাম অনেক বডি সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করেন।

ডিগ্রি কার্যক্রম

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Max Planck Institute for Quantum Optics (Research)"। The Max Planck Society। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২১ 
  2. "MPI for Gravitational Physics: CV of Karsten Danzmann"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৯ 
  3. "MPQ Research Groups"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৯ 
  4. "The Nobel Prize in Physics 2005"The Nobel Foundation। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২১ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা