শওকত আলি (রাজনীতিবিদ)

(মাওলানা শওকত আলি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

মাওলানা শওকত আলি (জন্ম-১৮৭৩, মৃত্যু-১৯৩৯) ছিলেন একজন ভারতীয় মুসলিম জাতীয়তাবাদী ও খিলাফত আন্দোলনের নেতা। তিনি মাওলানা মুহাম্মদ আলির ভাই।

মাওলানা শওকত আলি
Mshaukat.jpg
জন্ম১০ মার্চ ১৮৭৩
রামপুর, রামপুর স্টেট, ব্রিটিশ ভারত (বতর্মানে উত্তরপ্রদেশ, ভারত)
মৃত্যু২৬ নভেম্বর ১৯৩৮(1938-11-26) (বয়স ৬৫)
পরিচিতির কারণখিলাফত আন্দোলন,
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন,
পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলন এর নেতা
পিতা-মাতাআব্দুল আলী খান (পিতা)
আবিদা বেগম (মাতা)
আত্মীয়

প্রথম জীবনসম্পাদনা

শওকত আলি ১৮৭৩ সালে রামপুরে (বর্তমান উত্তরপ্রদেশ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করেন। তিনি ক্রিকেটের ভক্ত ছিলেন ও বিশ্ববিদ্যালয় দলের অধিনায়ক হতেন। মহাত্মা গান্ধী তাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসেন।

শওকত আলি ১৮৯৬ থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত যুক্ত প্রদেশে সরকারি চাকরিতে বহাল ছিলেন।

খিলাফত আন্দোলনসম্পাদনা

শওকত আলি তার ভাই মুহাম্মদ আলিকে উর্দু সাপ্তাহিক হামদর্দ ও ইংরেজি সাপ্তাহিক কমরেড প্রকাশ করতে সাহায্য করেন। ১৯১৯ সালে রাজদ্রোহ অভিযোগ ও প্রতিবাদ সংগঠনের কারণে কারাগারে থাকার সময় তিনি খিলাফত সম্মেলনের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। অসহযোগ আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধীকংগ্রেসকে সমর্থন করার কারণে ১৯২১ থেকে ১৯২৩ সাল পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন। তার ভক্তরা তাকে ও তার ভাইকে মাওলানা উপাধি দেয়। ১৯২২ সালের মার্চে তিনি রাজকোট কারাগারে ছিলেন।

নেহেরু রিপোর্টসম্পাদনা

কংগ্রেস ও এর অহিংস নীতির সমর্থক হলে তিনি ও তার কিছু সহকর্মী স্বাধীনতার জন্য বিপ্লবী আন্দোলনকেও সমর্থন করেন। তিনি শচীন্দ্রনাথ সেনালকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন।[১] তিনি ও তার ভাই শওকত আলি কংগ্রেস ও গান্ধীর নেতৃত্বের ব্যাপারে নেতিবাচক দিকে সরে আসেন। মাওলানা মুহাম্মদ আলি কারাগারে থাকায় শওকত আলি ও বেগম মুহাম্মদ আলি নেহেরু রিপোর্টের উপর সর্বদলীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় খিলাফত কমিটির ৩০ সদস্যসহ খিলাফত কমিটির নেতৃত্ব দেন। এদের মধ্যে ছিলেন মুহাম্মদ ইফরান, মহিউদ্দিন আজমেরি, ইয়াসিন নুরি, এস. কে. নবিবউল্লাহ, গুলশার খান, মুহাম্মদ ইবরাহিম, মনজুর আলি তাইব, মুসা খান, আজাদ সুবহানি, মুহাম্মদ জাফরি, লাল বাদশাহ, আবদুল মজিদ দারিয়াবাদি, রউফ পাশাম, মুহাম্মদ উসমান, আবদুল মজিদ, ড. মাগফুর আহমেদ আজাজি, হাশিম আবদুর রহমান, খাজা গিয়াসউদ্দিন, ইলাহি বখশ, আবদুল মহসিন মুহাম্মদ সাজ্জাদ, সুলাইমান কাসিন, আলি মুহাম্মদ জালালউদ্দিন, আবদুল রউফ, ফাতেহ মুহাম্মদ, মুহাম্মদ জান, আহমেদ ভামরিওয়ালা, আবদুল আহাদ খান, হেমায়েতউল্লাহ, মুহাম্মদ বখশ ও জাহিদ আলি। ১৯২৮ সালে তিনি নেহেরু রিপোর্টের বিরোধিতা করেন এবং মুসলিমদের জন্য পৃথক নির্বাচনের দাবি জানান। খিলাফত কমিটি শেষ পর্যন্ত নেহেরু রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে। তিনি লন্ডনে প্রথম ও দ্বিতীয় গোল টেবিল সম্মেলনে অংশ নেন। তার ভাই ১৯৩১ আলে মৃত্যুবরণ করলে তিনি কাজ চালু রাখেন এবং জেরুজালেমে বিশ্ব মুসলিম সম্মেলন সংগঠিত করেন।

১৯৩৬ সালে মাওলানা শওকত আলি নিখিল ভারত মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং মুহাম্মদ আলি জিন্নাহর একজন ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্রে পরিণত হন। ১৯৩৪ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তিনি কেন্দ্রীয় আইনসভার সদস্য ছিলেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণ করেন এবং ভারতীয় মুসলিমদের জন্য সমর্থন তৈরী করেন।

মৃত্যুসম্পাদনা

মাওলানা শওকত আলি ১৯৩৯ সালের ৪ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।[২]

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. Mittal, S. K.; Habib, Irfan (জুন ১৯৮২)। "The Congress and the Revolutionaries in the 1920s"। Social Scientist10 (6): 20–37। জেস্টোর 3517065  (সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
  2. Fundamentals Of Gandhism By Anil Dutta Mishra 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা