মহাযান মহাপরিনির্বাণসূত্র
মহাযান মহাপরিনির্বাণসূত্র বা নির্বাণসূত্র হলো বুদ্ধ প্রকৃতি শ্রেণীর মহাযান বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ।[টীকা ১][১] সূত্রটির প্রকৃত শিরোনাম ছিলো মহাপরিনির্বাণমহাসূত্র (নিখুঁত নির্বাণের মহান ধর্মগ্রন্থ) এবং এটির প্রাচীন সংস্করণটি মহাসাংঘিক-লোকোত্তরবাদ সম্প্রদায়ের সাথে যুক্ত ছিলো।[২][৩][৪] পূর্বএশীয় বৌদ্ধধর্মের বিকাশের জন্য সূত্রটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।[৩]
সূত্রটি বুদ্ধের প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করতে বুদ্ধের অন্তিম নির্বাণের পটভূমি ব্যবহার করে, যাকে এই সূত্রে শুরু বা শেষ ছাড়াই অবিনশ্বর ও চিরন্তন হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।[৫] পাঠ্যটি বুদ্ধ-প্রকৃতির (তথাগতগর্ভ) সম্পর্কিত মতবাদ নিয়েও আলোচনা করে যাকে বলা হয় যে সমস্ত জীবের মধ্যে "লুকানো ভান্ডার" যা শাশ্বত (নিত্য), আনন্দময়, স্বয়ং (আত্তা) ও শুদ্ধ।[৫] এই বুদ্ধ প্রকৃতির কারণে, সমস্ত প্রাণীরই বুদ্ধত্বে পৌঁছানোর ক্ষমতা রয়েছে।[৫] মাইকেল র্যাডিচ ও শিমোদা মাসাহিরোর মত কিছু পণ্ডিত মনে করেন যে নির্বাণ সূত্র হয়ত বুদ্ধ-প্রকৃতির ধারণার আদি উৎস হতে পারে।[৬][৭]
সূত্রটি অনাত্তা ও শূন্যতার শিক্ষা নিয়েও আলোচনা করে এবং "অ-শূন্যতা" ও প্রকৃত আত্ম, যা বুদ্ধ-প্রকৃতির শিক্ষায় পরিপূরক না হলে কীভাবে সেগুলি অসম্পূর্ণ।[৮] অধিকন্তু, সূত্রটি ইচ্ছান্তিকদের ধারণা নিয়ে আলোচনা করে, এরা হলো এমন এক শ্রেণীর সংবেদনশীল প্রাণী যাদের "মুক্তির সম্ভাবনা কম বা নেই।"[৯] সূত্রের বিভিন্ন সংস্করণ জুড়ে ইচ্ছান্তিক ধারণাটি বিভিন্ন উপায়ে আলোচনা করা হয়েছে, এবং সমস্যাটি জটিল, যদিও ব্লুম যেমন সূত্রটি সম্পর্কে লিখেছেন "ইচ্ছান্তিকরা বুদ্ধত্ব লাভ করতে পারে কিনা তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত" বলে মনে হয়।[৯]
নির্বাণসূত্রের উৎপত্তির সুনির্দিষ্ট তারিখ অনিশ্চিত, তবে এর আদি রূপটি দ্বিতীয় শতাব্দীতে বা এর মধ্যে বিকশিত হতে পারে। মূল সংস্কৃত পাঠ্যটি অল্প সংখ্যক খণ্ড ব্যতীত বিদ্যমান নয়, তবে এটি চীনা ও তিব্বতি অনুবাদে টিকে আছে।[১০] নির্বাণসূত্রটি বিভিন্ন সময়ে চীনা ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্করণগুলি হলো ৪১৬ খ্রিস্টাব্দ "ছয়টি গুচ্ছ গ্রন্থ" এবং ধর্মক্ষেমের ৪২১ খ্রিস্টাব্দ অনুবাদ, যা আগের সংস্করণের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি।[১১] সূত্রটিকে আদি বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ মহাপরিনিব্বাণ সুত্তের সাথে বিভ্রান্ত করা উচিত নয় যা মহাযান সূত্র নয়।
টীকা
সম্পাদনা- ↑ It shares its title with another well-known Buddhist scripture, the Mahaparinibbana Sutta of the Pāli Canon, but is quite different in form and content. It is therefore generally referred to by its full Sanskrit title, Mahāyāna Mahāparinirvāṇa Sūtra, or more commonly simply the Nirvāṇa Sūtra.
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Mahāparinirvāṇasūtra (Buddha-nature, Tsadra Foundation)"। buddhanature.tsadra.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৮।
- ↑ Hiromi Habata, Die zentralasialischen Sanskrit-Pragmente des Mahāparinirvāṇa-mahāsūtra: Kritische Ausgabe des Sanskrittextes und seiner tibetischen Übertragung im Vergleich mit den chinesischen Übersetzungen, Indica et Tibetica 51 (Marburg : lndica et Tibetica, 2007), pp. xliii–li.
- ↑ ক খ Baums, Stefan. Review of Habata, Die zentralasiatischen Sanskrit‐Fragmente des Mahāparinirvāṇa‐mahāsūtra. Indo‐Iranian Journal 58: 71–78.
- ↑ Hodge 2006।
- ↑ ক খ গ Blum 2013, পৃ. xv।
- ↑ Jones 2020, পৃ. 32।
- ↑ Radich 2015, পৃ. 101-102।
- ↑ Blum 2013, পৃ. xiv-xvii।
- ↑ ক খ Blum 2013, পৃ. xvi।
- ↑ Jones, C. V. (2020) The Buddhist Self: On Tathāgatagarbha and Ātman, pp. 29-30. University of Hawaiʻi Press.
- ↑ Jones, C. V. (2020) The Buddhist Self: On Tathāgatagarbha and Ātman, p. 30. University of Hawaiʻi Press.
উৎস
সম্পাদনা- Blum, Mark L. (২০১৩), The Nirvana Sutra, Vol. 1 (পিডিএফ), BDK America, ৯ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০২৪
- Chen, Jinhua (২০০৪), The Indian Buddhist Missionary Dharmakṣema (385-433): A New dating of his Arrival in Guzang and of his Translations, T'oung Pao 90, 215–263
- Gethin, Rupert (১৯৯৮), Foundations of Buddhism, Oxford University Press
- Hodge, Stephen (২০০৪), Textual History of the Mahāyāna-mahāparinirvāna-sūtra, জুন ২২, ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১২
- Hodge, Stephen (২০০৬), On the Eschatology of the Mahaparinirvana Sutra and Related Matters (lecture delivered at the University of London, SOAS) (পিডিএফ), জুন ১৪, ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা
- Hodge, Stephen (২০১২), The Mahayana Mahaparinirvana Sutra. The text & its Transmission (পিডিএফ), ডিসেম্বর ১৯, ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা Corrected and revised version of a paper presented in July 2010 at the Second International Workshop on the Mahaparinirvana Sutra held at Munich University.
- Jikido, Takasaki (২০০০), "The Tathagatagarbha Theory Reconsidered. Reflections on Some Recent Issues in Japanese Buddhist Studies", Japanese Journal of Religious Studies, 27 (1–2): 73–83, জুলাই ২৭, ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
- Jones, C.V. (২০২০), The Buddhist Self: On Tathāgatagarbha and Ātman, University of Hawaii Press
- King, Sallie B. (১৯৯১), Buddha Nature, SUNY Press
- Liu, Ming-Wood (১৯৮২), "The Doctrine of the Buddha-Nature in the Mahāyāna Mahāparinirvāṇa Sūtra.", Journal of the International Association of Buddhist Studies, 5 (2): 63–94, অক্টোবর ১৬, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
- Liu, Ming-Wood (১৯৮৪), "The Problem of the Icchantica in the Mahāyāna Mahāparinirvāṇa Sūtra", Journal of the International Association of Buddhist Studies, 7 (1): 57–82
- Liu, Ming-Wood (২০০৫), "The Doctrine of Buddha-nature in the Mahayana Mahaparinirvana Sutra", Buddhism: Critical Concepts in Religious Studies (Vol. V), Paul Williams, Taylor & Francis, পৃষ্ঠা 190
- Matsuda, Kazunobu (১৯৮৮)। "Sanskrit Fragments of the Mahāyāna Mahāparinivāṇa-sūtra. A Study of the Central Asian Documents of the Stein/Hoernle Collection of the India Office Library"। Studia Tibetica। 14।
- Radich, Michael (২০১৫), The Mahāparinivāṇa-mahasūtra and the Emergence of Tathagatagarba Doctrine (Hamburg Buddhist Studies Vol. 5), Hamburg University Press
- Sasaki, Shizuka (১৯৯৯), "Review Article: The Mahaparinirvana Sutra and the Origins of Mahayana Buddhism" (পিডিএফ), Japanese Journal of Religious Studies, 26 (1–2): 189–197, আগস্ট ১১, ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১২
- Shimoda, Masahiro (১৯৯৭)। A Study of the Mahāparinivāṇasūtra ~ with a Focus on the Methodology of the Study of Mahāyāna Sūtras। Tokyo, Shunjū-sha। (in Japanese)
- Williams, Paul (২০০২), Buddhist Thought, Taylor & Francis, Kindle Edition
- Yamamoto, Kosho (১৯৭৫), Mahayanism: A Critical Exposition of the Mahayana Mahaparinirvana Sutra, Karinbunko
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- Blum, Mark (2003). Nirvana Sutra, in: Buswell, Robert E. ed., Encyclopedia of Buddhism, New York: Macmillan Reference Lib., pp. 605–606.
- Bongard-Levin, G.M (1986). New Sanskrit fragments of the Mahāyāna Mahāparinivāṇa-sūtra: Central Asian manuscript collection, The International Institute for Buddhist Studies.
- Ito, Shinjo (2009). Shinjo: Reflections, Somerset Hall Press.
- Lai, Whalen (1982). Sinitic speculations on buddha-nature: The Nirvaana school (420-589), Philosophy East and West 32 (2), 135-149
- Radich, Michael (2015). The Mahāparinivāṇa-mahasūtra and the Emergence of Tathagatagarba Doctrine, Hamburg Buddhist Studies Vol. 5, Hamburg University Press.
- Yuyama, Akira (1981). Sanskrit fragments of the Mahāyāna Mahāparinivāṇa-sūtra: Koyasan manuscript, The Reiyukai Library.
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাবৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কিত বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |