মহম্মদ আব্দুল জব্বার

মহম্মদ আব্দুল জব্বার বা 'এম এ জব্বার' ( ১৪ নভেম্বর ১৯২০ – ১৯৮৮) ছিলেন একজন কমিউনিস্ট মনোভাবাসম্পন্ন আন্দোলনকারী ও চব্বিশ পরগনা জেলার স্থানীয় ইতিহাস ও প্রত্ন সংরক্ষণাকারী ব্যক্তিত্ব। তিনি চব্বিশ পরগনা জেলার সংগ্রহশালা ও ইতিহাস সমন্বয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। [১]

মহম্মদ আব্দুল জব্বারের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের হাড়োয়া সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের খাসবালান্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝেরআইট গ্রামের এক কৃষক পরিবারে। ছাত্রাবস্থাতেই প্রথমদিকে অনুশীলন দল এবং কৃষক আন্দোলনে অংশ নেন। সেকারণে তিনি স্বশিক্ষিত হয়ে সামরিক বাহিনীর চাকরি নিয়েও শেষে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিতে তিনি সেই চাকরি ছেড়ে দেন। পরে কমিউনিস্ট দলে যোগ দেন এবং দলের স্বাধীনতা পত্রিকার সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিক হিসাবে সুন্দরবন অঞ্চলে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় হাড়োয়া ও তার সন্নিহিত এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রাম, তেভাগা আন্দোলন, আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেনাদলের বিচার এবং নৌ-বিদ্রোহ, রসিদ আলি দিবস উদযাপনসহ নানা রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের পাশাপাশি স্থানীয় এলাকার প্রাচীন ইতিহাস বিশেষকরে প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাস সংরক্ষণে সচেষ্ট ছিলেন। চন্দ্রকেতুগড় ও সন্নিহিত নানা জায়গা হতে সংগৃহীত সামগ্রী সংগ্রহ করেন এবং হাড়োয়ার খাসবালান্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝেরআইট গ্রামে গড়ে তোলেন বালান্দা প্রত্নসংগ্রহশালা। তার সংগ্রহে আছে মৌর্য্য, গুপ্ত, শুঙ্গ, কুষাণযুগের কিছু নিদর্শন। এমনকি দেগঙ্গা থানা এলাকার হাদিপুর থেকেও প্রায় দশ হাজার বছরের পুরানো মানুষের নিচের চোয়ালের দাঁত। হাড়োয়ার ইতিহাস সম্পর্কিত কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি। সেগুলি হল-

  • অতীতের হাড়োয়া
  • পীর গোরাচাঁদ ও অতীতের হাড়োয়া
  • বালান্দা চন্দ্রকেতু ইতিকথা

এম এ জব্বার চব্বিশ পরগনা জেলার সংগ্রহশালা ও ইতিহাস সমন্বয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা-আহ্বায়ক ছিলেন।

উত্তরাধিকার

সম্পাদনা

এম এ জব্বারের জন্মশতবর্ষে তার রচিত প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাস গ্রন্থগুলির এক সংকলন "বালান্দা মহাবিহার ও চন্দ্রকেতুগড় শীর্ষক নামে সম্পাদিত হয় এবং ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। সম্পাদনা করেন- তহমীনা খাতুন ও দীপককুমার দাঁ। [২][৩]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ৩০৪,৩০৫, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. "বালান্দা মহাবিহার ও চন্দ্রকেতুগড়'-স্ব-শিক্ষিতের ইতিহাস কথা, লিখছেন সাংবাদিক ও আঞ্চলিক ইতিহাসবিদ সুকুমার মিত্র"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-০৮ 
  3. জব্বার, এম এ (২০২০)। তহমীনা খাতুন ও দীপককুমার দাঁ, সম্পাদক। বালান্দা মহাবিহার ও চন্দ্রকেতুগড়। গোবরডাঙ্গা গবেষণা পরিষদ। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-০৫