মলা পুঁটি

মাছের প্রজাতি

মলা পুঁটি (ইংরেজি: Glass barb) বা Pethia guganio প্রজাতি বাংলাদেশভারতের স্থানীয় মাছ।[৪] বাংলাদেশ এবং ভারতে (গাঙ্গেয় প্রদেশ, আসাম, উড়িষ্যা, অন্ধ্র প্রদেশ ও তামিলনাড়ু) এই মাছের দেখা মেলে। বর্তমানে এরা দুর্লভ প্রজাতির মাছ বলে চিহ্নিত। তবে বাংলাদেশে এরা হুমকিগ্রস্ত প্রজাতির তালিকাভুক্ত নয়।[৫] শ্রীলঙ্কায় ছোট আকারের রুই জাতীয় মাছ পিথিয়া (Pethia) নামে পরিচিত। স্থানীয় Pethia শব্দটি থেকে এই মাছের গণ নামটি (Pethia) এসেছে।[৬]

মলা পুঁটি
Puntius guganio
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Chordata
উপপর্ব: Vertebrata
মহাশ্রেণী: Osteichthyes
শ্রেণী: Actinopterygii
বর্গ: Cypriniformes
পরিবার: Cyprinidae
গণ: Puntius
প্রজাতি: Puntius guganio
দ্বিপদী নাম
Puntius guganio
(Hamilton, 1822)
প্রতিশব্দ

Puntius carletoni (Fowler, 1924)[২]
Barbus carletoni Fowler, 1924[২]
Puntius ambassis (non Day, 1869)[২]
Barbus ambassis (non Day, 1869)[২]
Leuciscus guganio (Hamilton, 1822)[২]
Barbus guganio (Hamilton, 1822)[৩]
Cyprinus guganio Hamilton, 1822[৩]

দৈহিক গঠন সম্পাদনা

এদের দেহ লম্বা এবং দেহের দৈর্ঘ্যের তুলনাই এদের মাথা ছোট। চোখ আকারে বড় এবং মাথার বেশীরভাগ অংশ জুড়ে অবস্থান করে। নিচের চোয়ালের চেয়ে উপরের চোয়াল সামান্য লম্বা তাই এদের মুখ-ছিদ্র প্রান্তীয় তবে নিম্নমুখী। চোয়ালে কোন স্পর্শী থাকে না। বক্ষপাখনা তুণ্ড ব্যতীত মাথার দৈর্ঘ্যের সমান তবে পৃষ্ঠপাখনা মাথার দৈর্ঘ্যের চেয়ে দীর্ঘ। আঁইশ আকারে ছোট ও অস্থায়ী। পার্শ্বরেখা অসম্পূর্ণ।অনুসারে পার্শ্বরেখা বরাবর ৩৬টি আঁইশ উপস্থিত। দেহ স্বচ্ছ তাই এদের ইংরেজিতে glass barb বলা হয়ে থাকে। স্বচ্ছ দেহের উভয় পাশে বাদামী-রূপালি বর্ণের ডোরা লম্বালম্বি ভাবে অবস্থান করে। পৃষ্ঠপাখনার গোড়ার সামনের দিকে একটা ছোট কালো দাগ এবং পুচ্ছপাখনার পার্শ্ব দিকে তিলের মত ছোট কালো ফোঁটা সদৃশ দাগ দেখতে পাওয়া যায়।[৫]

এদের আদর্শ দৈর্ঘ্য ও মোট দৈর্ঘ্য মাথার দৈর্ঘ্যের যথাক্রমে ৩.৭-৪.০ ও ৫.২-৫.৪ গুণ এবং দেহ উচ্চতার যথাক্রমে ২.৬-৩.২ ও ৩.৫-৪.২ গুণ। মাথার দৈর্ঘ্য চোখের ব্যাসের ২.৯-৩.৪ গুণ, তুণ্ডের ০.৬৬-০.৮৪ গুণ।[৭]

আবাসস্থল সম্পাদনা

এরা বাংলাদেশের ছোট নদী, খাল, বিল, পুকুর ও এজাতীয় জলাশয়ে বসবাস করে।। স্থির বা ধীরগতির স্রোত বিশিষ্ট জলাধার যেমন ডোবা, ছোট নদী, ছোট বিল ইত্যাদিতে বাস করে। বর্ষায় নদী উপচে পড়া সৃষ্ট বালুময় তলদেশ বিশিষ্ট জলাশয়ে এদের দেখতে পাওয়া যায়।[৭]

খাদ্যাভ্যাস সম্পাদনা

এরা ছোট ছোট জলজ জীব (উদ্ভিদ ও প্রাণী), প্ল্যাঙ্কটন প্রভৃতি খেয়ে থাকে।[৭] এরা মাইক্রো-প্রিডেটর অর্থাৎ প্রকৃতিতে এরা ক্ষুদ্রাকার পতঙ্গ, কীট, ক্রাশটেশিয়ানস এবং অন্যান্য প্রাণিকণা ইত্যাদি খেয়া থাকে।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পাদনা

একক প্রজাতি হিসেবে এই মাছের উৎপাদন তথ্য পাওয়া যায় না। অন্যান্য ছোট মাছের সাথে ধরা পড়ে। অন্যান্য পুঁটির সাথে মিশ্র অবস্থায় বাজারে বিক্রি হয়। ভারতীয় মৎস্যখাতে এই প্রজাতি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। এ্যাকুয়ারিয়ামের বাহারি মাছ হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর চাহিদা রয়েছে।

বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ সম্পাদনা

আইইউসিএন বাংলাদেশ (২০০০) এর লাল তালিকা অনুযায়ী এই প্রজাতিটি বাংলাদেশে হুমকির সম্মুখীন নয়।[৪]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Puntius guganio"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2012.2প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। 2010। সংগ্রহের তারিখ 24/10/2012  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. Menon, A.G.K. (1999) Check list - fresh water fishes of India., Rec. Zool. Surv. India, Misc. Publ., Occas. Pap. No. 175, 366 p.
  3. Talwar, P.K. and A.G. Jhingran (1991) Inland fishes of India and adjacent countries. vol 1., A.A. Balkema, Rotterdam. 541 p.
  4. এ কে আতাউর রহমান, ফারহানা রুমা (অক্টোবর ২০০৯)। "স্বাদুপানির মাছ"। আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; আবু তৈয়ব, আবু আহমদ; হুমায়ুন কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমাদ, মোনাওয়ার। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ২৩ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৯৭–৯৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid prefix (সাহায্য) 
  5. AL, Bhuiyan (১৯৬৪)। Fishes of Dacca। Asiatic Soc. Pakistan, Publ.। পৃষ্ঠা 35। 
  6. (ইংরেজি) FishBase
  7. PK, Talwar; AG, Jhingran (২০০১)। Inland Fishes of India and Adjacent countries.। New Delhi.: Oxford and IBH Publishing Co. Pvt. Ltd.। পৃষ্ঠা 195।