মলাশয়ের ক্যান্সার
মলাশয়ের ক্যান্সার (ইংরেজি: colorectal cancer) হচ্ছে এক ধরনের ক্যান্সার যা দেহের মলাশয়, মলনালী (বৃহদান্ত্রের অংশ) বা অ্যাপেন্ডিক্সে অংশে অনিয়ন্ত্রিত কোষবৃদ্ধির কারণে সৃষ্টি হয়। এটি কোলন ক্যান্সার (colon cancer), বৃহদান্ত্রের ক্যান্সার বা অন্ত্রের ক্যান্সার (bowel cancer) নামেও পরিচিত। এ ধরনের ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে মলনালী দিয়ে রক্ত পড়া ও রক্তশূন্যতা, যা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওজনহীনতা ও অন্ত্রের আচরণগত পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
মলাশয়ের ক্যান্সার | |
---|---|
![]() | |
বিশেষত্ব | ক্যান্সারবিজ্ঞান ![]() |
বেশিরভাগ মলাশয়ের ক্যান্সারের কারণ জীবনযাপনের পদ্ধতি এবং বয়সবৃদ্ধি। শুধুমাত্র অল্প কিছু ক্ষেত্রেই বংশগতকারণে এ রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে। সাধারণত অন্ত্রের পার্শ্বদেশে সংক্রমণের মাধ্যমে এই ক্যান্সারের সূচনা ঘটে, এবং যদি এটি চিকিৎসাহীন অবস্থায় রেখে দেওয়া হয় তবে এটি ক্রমান্বয়ে অন্ত্রের পেশীস্তরের নিচে, এবং সবশেষে অন্ত্রের প্রাচীরের মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে কার্যকরভাবে এই ক্যান্সারের সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব আর সেজন্য ৫০ বছর বয়স থেকে ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত নিয়মিতভাবে স্ক্রিনিং চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করা হয়। অন্ত্রের এই ক্যান্সার সাধারণত সিগময়েডোস্কোপি বা কোলনোস্কপি প্রক্রিয়ায় নির্ণয় করা হয়।
যে ধরনের মলাশয়ের ক্যান্সার শুধুমাত্র অন্ত্রের প্রাচীরে সংক্রমিত হয়েছে তা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রতিকার করা সম্ভব। কিন্তু যেগুলো শরীরের বিভিন্ন অংশে বিস্তৃত হয়েছে তা সাধারণত প্রতিকার করা সম্ভব নয় এবং সেক্ষেত্রে কেমোথেরাপির সাহায্যে আক্রান্ত রোগীর ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগীর জীবন বাঁচানোসহ জীবনের মানবৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়। মলাশয়ের ক্যান্সার বিশ্বের সর্বাধিক প্রচলিত ক্যান্সারগুলোর মধ্যে চতুর্থ এবং মূলত উন্নত দেশগুলোতেই এর প্রচলন সবচেয়ে বেশি।[১] মোট সংক্রমণের শতকার ৬০ ভাগই উন্নত বিশ্বে সংঘটিত হয়।[১] ধারণা করা হয় ২০০৮ সালে বিশ্বের প্রায় ১২.৩ লক্ষ মানুষের দেহে মলাশয়ের ক্যান্সার সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছিলো যাদের ভেতর প্রায় ৬.০৮ লক্ষ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।[১]
চিহ্ন এবং লক্ষণসম্পাদনা
কোলরেক্টাল ক্যান্সারের লক্ষণ এবং চিহ্ন নির্ভর করে কোথায় টিউমরটি রয়েছে বা এটা কোলন ছাড়া শরীরের অন্য কোথাও ছড়িয়েছে কিনা। তবে যেসকল লক্ষনগুলো প্রায়ই দেখা যায়ঃ খুব খারাপ কৌষ্ঠকাঠিন্য, রক্তযুক্ত মল, কম পরিমাণ মল, ক্ষুদা কমে যাওয়া, ওজন কমে যাওয়া, বয়স পঞ্চাশোর্ধ হলে বমি বমি ভাব হওয়া ইত্যাদি।[২] এছাড়াও বয়স্কদের এই রোগ হলে প্রধান ঝুঁকি হল কোলনে রক্তক্ষরণ এবং রক্তাল্পতা।[৩] ওজন কমে যাওয়া এবং মলত্যাগ করার ইচ্ছার পরিবর্তন এইগুলো সাধারণ লক্ষণ।[৩][৪]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ GLOBOCAN 2008
- ↑ Alpers, David H.; Kalloo, Anthony N.; Kaplowitz, Neil; Owyang, Chung; Powell, Don W. (২০০৮)। Yamada, Tadataka, সম্পাদক। Principles of clinical gastroenterology। Chichester, West Sussex: Wiley-Blackwell। পৃষ্ঠা 381। আইএসবিএন 978-1-4051-6910-3। সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ Astin M, Griffin, T, Neal, RD, Rose, P, Hamilton, W (মে ২০১১)। "The diagnostic value of symptoms for colorectal cancer in primary care: a systematic review"। The British Journal of General Practice। 61 (586): 231–43। ডিওআই:10.3399/bjgp11X572427। পিএমআইডি 21619747। পিএমসি 3080228 ।
- ↑ Adelstein BA, Macaskill P, Chan SF, Katelaris PH, Irwig L (মে ২০১১)। "Most bowel cancer symptoms do not indicate colorectal cancer and polyps: a systematic review"। BMC Gastroenterology। 11: 65। ডিওআই:10.1186/1471-230X-11-65। পিএমআইডি 21624112। পিএমসি 3120795 ।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- কার্লিতে মলাশয়ের ক্যান্সার (ইংরেজি)