ভারতে দুইজন সুফি সাধক নকশবন্দিয়া সিলসিলা, সুফিবাদের একটি তরিকা, প্রচারের সাখে জড়িত ছিলেন এবং তারা দুইজনে দুইটি আধ্যাত্বিক পরম্পরা বা বংশগতি গড়ে তোলেন।একটি শেখ আহমেদ সিরহিন্দি, মোজাদ্দেদে আল থানি (দ্বিতীয় সহস্রাব্দের পুর্ণজাগরণকারী) থেকে উৎপন্ন হয়েছে। অন্যটি তারই সমসাময়িক সুফি সাধক হযরত ছৈয়্যদেনা আমীর আবুল-উলা আহরারি। হযরত আমীর আবুল-উলা ভারতের আগ্রার অধিবাসী ছিলেন। তিনি নকশবন্দিয়া সুফি তরিকার সুফি সাধক হযরত খাজা ওবায়দুল্লাহ আহরারির শিষ্য ছিলেন। তার নাম অনুসারেই তার আধ্যাত্বিক বংশ অনুক্রমের নামকরণ করা হয় নকশবন্দিয়া আবুল উলাইয়া।[১]

মখদুম মোনেম পাক Makhdoom Munem Pak
মুনিম পাক, ভারতের প্রখ্যাত সুফি সাধক
জন্ম১৬৭১ খ্রিস্টাব্দ/১০৮২ হিজরী
পাছনা, শেখপুরা (বিহারের একটি জেলা), ভারত
মৃত্যু১৭৭১ খ্রিস্টাব্দ/ ১১৮৫ হিজরী
সমাধিমিতান ঘাট, পাটনা শহর, ভারত
২৫°৩৬′১৭″ উত্তর ৮৫°১৩′২″ পূর্ব / ২৫.৬০৪৭২° উত্তর ৮৫.২১৭২২° পূর্ব / 25.60472; 85.21722
পূর্বসূরীদেওয়ান ছৈয়দ আবু সায়্যিদ জাফর মুহাম্মদ কাদেরী
উত্তরসূরীমৌলানা ছৈয়দ হাছান রাজা রায়পুরী
হযরতে মখদুম শাহ মুহাম্মদ মুনিম পাকের দরগাহ শরীফ

জন্ম এবং বংশ পরিচয় সম্পাদনা

হযরত মখদুম শাহ মুহাম্মদ মোনেম পাক ১০৮২ হিজরীতে (১৬৭১ খ্রিষ্টাব্দে) ভারতের বিহারের শেখপুরা জেলার পাহাড়ে বেষ্টিত পাছনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বংশ সুফি সাধক হযরত মখদুম শামসুদ্দিন হাক্কানি, যার মাজার লক্ষিসার জেলার বিল্লৌরিতে অবস্থিত, এর বংশের সাথে গিয়ে মিলিত হয়েছে। মখদুম হাক্কানি সুফি হযরত ইব্রাহিম ইবনে আদহাম বলখির, আবু বিন আদহাম নামেও পরিচিত, শিষ্য ছিলেন।

শিক্ষা ও আধ্যাত্বিক প্রশিক্ষণ সম্পাদনা

পিতার গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে উচ্চ শিক্ষা ও সুফিবাদের জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে তিনি পাটনার নিকটবর্তী বারহ জেলায় অবস্থিত দেওয়ান ছৈয়দ আবু সায়্যিদ জাফর মুহাম্মদ কাদিরের খানকাহতে যান। তার মৃত্যুর পর হযরত মোনিম পাক দেওয়ান ছৈয়দ আবু সায়্যিদ জাফর মুহাম্মদ কাদিরের পুত্র দেওয়ান ছৈয়দ খলীলুল্লাহর কাছ থেকে তরিকতে শিক্ষা অর্জন করেন এবং তার হাতে বায়াত দান করেন কাদেরীয় কুতুবিয়া তরিকার মুরীদ (শিষ্য) হন। পরবর্তীতে তিনি খেলাফতপ্রাপ্ত (আধ্যাত্বিক প্রতিনিধিত্ব) হন। পড়াশোনা শেষ করার পর তার পীরের নির্দেশনা ও অনুমতি নিয়ে তিনি দিল্লিতে স্থানান্তরিত হন।[২] দিল্লির একটি মাদ্রাসায় তিনি প্রায় চল্লিশ বছর ধরে উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে থাকেন।

আবুলউলায়ি বংশ অনুক্রম সম্পাদনা

হযরত মোনিম পাক সুফি সাধক হযরত খাজা শাহ মুহাম্মদ ফরহাদের সান্নিধ্যে যান এবং নিজেকে সম্পূর্ণভাবে তার সেবায় উৎসর্গ করেন। জীবনীকাররা বলেন যে মোনিম পাক সেখানে প্রায় এগার বছর তার সেবায় নিয়োজিত ছিলেন এবং নকশবন্দিয়া আবুল-উলাইয়া তরিকার আধ্যাত্বিক শিক্ষা গ্রহণ করতে থাকেন। হযরত শাহ ফরহাদের মুর্শিদ (পীর), হযরত ছৈয়দ দোস্ত মুহাম্মদ বোরহানপুরী, হযরত ছৈয়্যদেনা শাহ আমীর আবুলউলার মুরীদ ও খলিফা (আধ্যাত্বিক প্রতিনিধি) ছিলেন। তিনি বড় পীর হযরত ছৈয়্যদেনা শেখ আব্দুল কাদির জিলানী ও মখদুম-ই-জাহান হযরক শেখ শরফুদ্দিন আহমদ জাহিয়া মানেরীর খুব নিকটবর্তী ছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Qadri Munawwari, syed Faiz Ahmad (২০১৫)। An Introduction to Khanqah Munemia। patna: khanqah munemia qamaria। পৃষ্ঠা 13। আইএসবিএন 9788192096209 
  2. FANI DANAPURI, SHAH ATA HUSAIN। KAIFYATUL ARFEEN 
  • HYAATULLAH, SHAH। Hujjatul Aarefeen। manuscript present in khanqah munemia library।