ইব্রাহিম ইবনে আদহাম
ইব্রাহিম ইবনে আদহাম (إبراهيم بن أدهم); খ্রিষ্টাব্দ ৭১৮ - খ্রিষ্টাব্দ ৭৮২ [১]) ইব্রাহিম বলখি নামেও পরিচিত,আফগানিস্তানের প্রখ্যাত সুফি সাধকদের মধ্যে অন্যতম। তার সুফি হয়ে উঠার ঘটনা সুফি লোককাহিনীতে একটি জনপ্রিয় কাহিনী। গৌতম বুদ্ধের ন্যায় তিনিও রাজকুমার হওয়া সত্ত্বেও নিজের তরবারি ত্যাগ করে সুফি সাধকের জীবন বেছে নেন।[২] সুফি সাহিত্যে ইব্রাহিম বলখির অসংখ্য ন্যায়পরায়ণ কাজের বর্ণনা পাওয়া যায় এবং তার নিরহঙ্কার জীবনধারা যা তার পূর্ববর্তী বলখির (এটি বুদ্ধ ধর্মেরও প্রাথমিক কেন্দ্রস্থল) রাজার জীবনধারার সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল তারও বর্ণনা রয়েছে। আবু নঈমের বর্ণনা মতে, ইব্রাহিম বলখি সুফি সাধনার ক্ষেত্রে নীরবতা ও ধ্যানের গুরুত্বের উপর জোর প্রদান করতেন। জালাল উদ্দিন রুমি তার বিখ্যাত গ্রন্থ মসনবি শরীফে ইব্রাহিম বলখির কাহিনী ব্যাপকভাবে বর্ণনা করেছেন। ইব্রাহিম বলখির সবচেয়ে বিখ্যাত শিষ্যের নাম হল শাকিক আল-বলখি (মৃত্যু:৮১০ খ্রিষ্টাব্দ)
ইব্রাহিম ইবনে আদহাম
(إبراهيم بن أدهم) | |
---|---|
আধ্যাত্বিক | |
জন্ম | বলখি |
মৃত্যু | ৭৮২ খ্রিস্টাব্দ |
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন | ইসলাম |
প্রধান স্মৃতিযুক্ত স্থান | সুলতাব ইব্রাহিম ইবনে আদম মসজিদ, পশ্চিম তীর, জেরুজালেম |
জীবনী
সম্পাদনামুসলিম ঐতিহ্য অনুযায়ী, ইব্রাহিম বলখির পরিবার কুফা থেকে এসেছিল এবং সেখান থেকে বলখিতে (বর্তমান কালে আফগানিস্তান) স্থানান্তরিত হয়েছিল এবং বলখিতেই ইব্রাহিমের জন্ম হয়। কিছু লেখক মনে করেন ইব্রাহিম বলখির বংশগতি আব্দুল্লাহ, জাফর আল-সাদিক এর ভাই এবং মুহাম্মদ আল-বাকির, হুসাইন ইবনে আলীর পৌত্র, এর পুত্র এর বংশের,যা সাথে গিয়ে মিলিত হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ লেখকের মতে তার বংশগতি উমর ইবনুল খাত্তাবের বংশের সাথে গিয়ে মিলিত হয়েছে। কিছু মধ্যযুগীয় লেখকরা যেমন ইবনে আসাকির ও মুহাম্মদ আল বুখারি ইব্রাহিম বলখির জীবনী লিপিবদ্ধ করেন। ইব্রাহিম ৭৩০ খ্রিষ্টাব্দে বলখির আরব সম্প্রদায়ে ঐ এলাকার রাজ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, কিন্তু সাধকের জীবন অতিবাহিত করার জন্য তিনি রাজমহলের জীবন পরিত্যাগ করেন। খিযিরের, মাধ্যমে ইব্রাহিম স্রষ্টা থেকে একটি সাবধানবাণী পান এবং তিনি তাকে তরবারি ত্যাগ করে সিরিয়ায় সুফি সাধকের জীবন অতিবাহিত করার নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য যে খিযির তার সম্মুখে দুইবার উপস্থিত হয়েছিলেন। ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে বলখি থেকে স্থানান্তরিত হয়ে তিনি তার জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত যাযাবরের ন্যায় জীবনযাপন করতে থাকেন এবং প্রায় সময় গাজার দিকে সফর করতেন। আলস্য ও ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করাকে ইব্রাহিম বলখি ঘৃণা করতেন। তিনি প্রায় সময় শস্য পিষে ববা ফলের বাগানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।