ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়

যাত্রাপালার প্রযোজক, নির্দেশক, গীতিকার ও সুরকার ও রচয়িতা

ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় (ইংরেজি: Bhairav Gangopadhyay) (২৫ নভেম্বর, ১৯৩৪ - ২৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৮) একজন বিশিষ্ট দরদী মনের মরমী যাত্রা পালাকার। তিনি যাত্রাপালার প্রযোজক-নির্দেশক, গীতিকার ও সুরকারও ছিলেন। [১]

ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়
জন্ম(১৯৩৪-১১-২৫)২৫ নভেম্বর ১৯৩৪
মৃত্যু২৮ ডিসেম্বর ১৯৯৮(1998-12-28) (বয়স ৬৪)
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারতীয়
পেশাযাত্রা পালাকার, নির্দেশক ও প্রযোজক
দাম্পত্য সঙ্গীছায়া গঙ্গোপাধ্যায়
সন্তানমেঘদূত গঙ্গোপাধ্যায়
দেবদূত গঙ্গোপাধ্যায়
অজন্তা মুখোপাধ্যায়
ইলোরা চট্টোপাধ্যায়
হরপ্পা চক্রবর্তী

সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পাদনা

ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় জন্ম বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার 'মূল' গ্রামে। মূলগ্রামেই তিনি অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তবে কিশোর বয়স থেকে বাংলার গ্রামে অনুষ্ঠিত যাত্রার প্রতি প্রেম ও নিষ্ঠা তাঁকে যাত্রাশিল্পে আকৃষ্ট করেছিল। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দেই কলকাতার চিৎপুরের যাত্রাপালা জগতে প্রবেশ করেন। তার রচিত প্রথম যাত্রাপালা "নাচমহল" মঞ্চস্থ করে 'সত্যম্বর অপেরা'। প্রথম লেখা যাত্রাপালাতেই তিনি দর্শকদের সমাদর পান। এরপর একে একে বহু যাত্রাপালা রচনা করেন। তার রচিত যাত্রাপালার সংখ্যা প্রায় আড়াই-শো। পালা রচনার পাশাপাশি তিনি নির্দেশনার কাজেও হাত দেন। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি নিজের নামে দল "ভৈরব অপেরা" গঠন করে প্রযোজনাও করেছেন। দরদী মনের মানুষ ছিলেন তিনি। গরীব সাধারণ মানুষের কথা, অন্যায় অবিচার অত্যাচারের কথা তার পালা লেখনীতে ফুটে উঠেছে। ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় যেমন একাধারে পালাকার, নির্দেশক ও প্রযোজক ছিলেন তেমনই ছিলেন গীতিকার ও সুরকার। যাত্রাপালার গানেও যথেষ্ট দক্ষতা ছিল। তার জনপ্রিয় যাত্রাপালার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পালাগুলি হল -

  • 'একটি পয়সা'
  • 'পদধ্বনি'
  • 'অচল পয়সা'
  • 'পাগলা গারদ'
  • 'রক্তে ধোয়া ধান'
  • 'মাতৃঋণ'
  • 'সাত টাকার সন্তান'
  • 'দেবী সুলতানা'
  • 'শ্রীচরণেষু মা'
  • 'গান্ধারী জননী'
  • 'ভীষ্ম জননী গঙ্গা'
  • 'মা মাটি মানুষ'
  • 'ঠিকানা পশ্চিমবঙ্গ'
  • 'কুবেরের পাশা'
  • 'দু টুকরো মা'
  • 'ভিখারি ঈশ্বর'
  • 'ঘরে ঘরে দুর্গা'
  • 'জীবন এক জংশন'
  • 'শান্তি তুমি কোথায়'
  • 'স্বর্গের পরের স্টেশন'
  • 'সত্যযুগ আসছে'

সম্মাননা সম্পাদনা

ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় সারা জীবন নিজেকে যাত্রাশিল্পের সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত রেখে শিল্পের উন্নতির জন্য কাজ করে গেছেন। গ্রাম বাংলার সমাদর কুড়িয়েছেন আর অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে সরকারি উদ্যোগে তার গ্রামের বাড়িতে আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। [২]

জীবনাবসান সম্পাদনা

বাংলা যাত্রাজগতের জনপ্রিয় যাত্রাপালার ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে ডিসেম্বর (১৪০৬ বঙ্গাব্দের ১২ পৌষ) প্রয়াত হন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ২৮৮,আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "বসল ভৈরবের মূর্তি,সরকারি স্বীকৃতি চায় পরিবার"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২২