ভূপতি ভূষণ চৌধুরী

রাজনীতিবিদ

ভূপতি ভূষণ চৌধুরী (মানিক চৌধুরী) (জন্ম: ১৬ ডিসেম্বর ১৯৩০ - মৃত্যু: ৩০ জুন, ১৯৮০[১]) বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী ছিলেন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে তিনি স্বাধীনতা পদক পান। [২]

ভূপতি ভূষণ চৌধুরী
জন্ম(১৯৩০-১২-১৬)১৬ ডিসেম্বর ১৯৩০
মৃত্যুজুন ৩০, ১৯৮০(1980-06-30) (বয়স ৪৯)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণরাজনীতিবিদ
পুরস্কারস্বাধীনতা পুরস্কার, (২০১৮)

জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি সম্পাদনা

ভূপতি ভূষণ চৌধুরীর জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ গ্রামে। তার বাবার নাম ধীরেন্দ্র লাল চৌধুরী এবং মায়ের নাম যশোদা বালা চৌধুরী। শহরের পৈতৃক বাড়িতে তার কেটেছে বাল্য ও শৈশবের দিনগুলি।

শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

মিউনিসিপ্যাল স্কুল থেকে ইংরেজিতে লেটার নিয়ে প্রথম বিভাগে পাস করে কলকাতা যান পড়াশোনা করতে। বঙ্গবাসী কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় রাজনীতিতে হাতেখড়ি, যোগ দেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে। আই এ পাস করেন প্রথম বিভাগে। [৩]

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

১৯৪৭ সালে দেশভাগের কিছুদিন পরে ভূপতি ভূষণ চৌধুরী মওলানা ভাসানীর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসেন এবং মুসলিম লীগ বিরোধী অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে যোগ দেন। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে তিনি এ সংগঠনের সাথে জড়িত হয়ে পড়েন এবং চট্টগ্রামের এম এ আজিজজহুর আহমদ চৌধুরীর সাথে চট্টগ্রামে সংগঠন গড়ে তোলার কাজে যুক্ত হন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং সেই সূত্রে অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সংস্পর্শে আসেন। এ সময়ই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে তার পরিচয় এবং ক্রমান্বয়ে বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন ও আস্থাভাজন হয়ে উঠেন তিনি। তাকে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ কার্যকারি কমিটিতে অর্থ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ৬২’র আন্দোলন সহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আন্দোলন, বিশেষ করে ছয় দফা আন্দোলনে তার ভূমিকার জন্যে তিনি চট্টগ্রামের রাজনীতিতে অন্যতম মুখ্য ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। ১৯৬৬ সালের ২০ মে রাতে পাকিস্তান প্রতিরক্ষা আইনে ভূপতি ভূষণ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয় এবং তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জড়িত করে তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়। কারাগারে তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে তিনি মুক্তি পান কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে ইয়াহিয়ার সামরিক জান্তা তাকে আবার গ্রেফতার করে। ১৯৭০’র শেষ দিকে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করার কাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার এক সপ্তাহ পর মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ সহ তাকে আবারো ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যে মামলা দায়ের করা হয় এবং সামরিক আইনের আওতায় সাজা দেওয়া হয়। ১৯৭৫ আগস্ট থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর তিনি জেলে বন্দি জীবন-যাপন করেন। বন্দি থাকা অবস্থায় তৎকালীন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান তাকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তার দলে যোগদানের প্রস্তাব দেন। কিন্তু সমস্ত প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। [৪]

পুরস্কার ও সম্মননা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "মৃত্যুবার্ষিকী"। ২০২০-০৪-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-২৭ 
  2. "১৬ জন পাচ্ছেন স্বাধীনতা পুরস্কার | banglatribune.com"Bangla Tribune। ২০১৮-০২-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-২৪ 
  3. "স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের বিপ্লবী মহানায়ক ভূপতি ভূষণ চৌধুরী সোহেল মো. ফখরুদ-দীন"Ctgpost.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৬-২৯। ২০১৬-০৬-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-২৭ 
  4. BanglaNews24.com। "বিস্মৃতির অতলেই কি হারিয়ে যাবেন মানিক চৌধুরী ?"banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-২৭ 
  5. Kantho, Kaler। "স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন ১৬ বিশিষ্ট ব্যক্তি | কালের কণ্ঠ"Kalerkantho। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-২৪ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা